নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 13/04/2019
বলা হচ্ছে তৃতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার অনেকটাই আমলা নির্ভর। মন্ত্রীদের সামনে রেখে আমলারাই রাষ্ট্রের কলকাঠি নাড়ছে। প্রধানমন্ত্রী আমলাদের পরামর্শই গুরুত্ব দিয়ে শুনছেন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীদের চেয়ে সচিবদের ক্ষমতা বেশী। এরকম কিছু মন্ত্রণালয় পাওয়া গেছে, যেখানে আসলে নীতি নির্ধারক হয়ে দাঁড়িয়েছেন সচিবরাই। মন্ত্রী বা প্রতিমন্ত্রীরা যেন শিক্ষানবীশ। এরকম মন্ত্রণালয়ের কয়েকটি;
১. পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়: এই মন্ত্রণালয়ে পূর্ণমন্ত্রী নেই। প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম। জাহিদ ফারুক স্থানীয় পর্যায়ের নেতা। অন্যদিকে এনামুল হক শামীম ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। এই মন্ত্রণালয়ের সচিব ৮৫ ব্যাচের কবির বিন আনোয়ার। আওয়ামী ঘরোনার আমলা হিসেবে তার পরিচিতি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মহাপরিচালক (প্রশাসন) ছিলেন। সরকারী চাকরীতে যোগদেয়ার আগে ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন। তাই প্রতিমন্ত্রী এবং উপমন্ত্রী তাকে সমীহ করেই চলেন। সচিবের পরামর্শেই মন্ত্রণালয় চলে।
২. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়: এই মন্ত্রণালয়ে একজন প্রতিমন্ত্রী আছেন। ফরহাদ হোসেন, বয়স এবং অভিজ্ঞতা দুটোতেই নবীন। বিগত মেয়াদে এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন প্রয়াত সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। এবার এই মন্ত্রণালয় প্রধানমন্ত্রীর কতৃত্বে। তবে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়া মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় কাজ দেখভাল করেন সচিব নিজেই। জনপ্রশাসন সচিব ৮৫ ব্যাচের ফয়েজ আহম্মদ। সাধারণত, এই মন্ত্রণালয়ের সচিব করা হতো জেষ্ঠ্য সরকারী কর্মকর্তাকে। কিন্তু ড: মোজাম্মেল হোসেন খানকে সরিয়ে ৮৫ ব্যাচের ফয়েজ আহম্মদকে জনপ্রশাসন সচিব করা ছিলো নাটকীয়। ফয়েজ আহম্মদ সচিব হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ এবং আস্থাভাজন। প্রধানমন্ত্রীর সংগে পরামর্শ ক্রমে সচিবই এই মন্ত্রণালয় চালান।
৩. পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়: এই মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী দুজন। মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রী মো: শাহাব উদ্দিন। উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার। এই মন্ত্রণালয়ে সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। তিনি ৮৫ ব্যাচের কর্মকর্তা। মোহসীন চৌধুরী, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মূখ্য সচিব ড: কামাল নাসের চৌধুরীর ছোট ভাই। সেই সূত্রে তিনি ক্ষমতাবান। নতুন মন্ত্রী এবং উপমন্ত্রীরা তার পরামর্শেই চলেন।
৪. মহিলা এবং শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়: এই মন্ত্রণালয় সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর নিয়ন্ত্রনে। প্রধানমন্ত্রীর নানা অগ্রাধিকারের ভীড়ে এই মন্ত্রণালয়ের জন্য সময় সামান্যই। মূলত: সচিবের নেতৃত্বে মন্ত্রণালয় চলে। সচিব কামরুন্নাহার তথ্য ক্যাডার থেকে রাষ্ট্রপতির কোটায় সচিব হয়েছেন।
৫. পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়: এই মন্ত্রণালয়ে একজন মন্ত্রী এবং একজন প্রতিমন্ত্রী। মন্ত্রী এ.কে আবদুল মোমেন। তিনি এক সময় জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ছিলেন। দ্বিতীয় বারের মতো এই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো: শাহরিয়ার আলম। কিন্তু মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রী থাকলেও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে সচিব মো: শহিদুল হকই বেশী ক্ষমতাবান। প্রধানমন্ত্রীর সংগে অনেক বিষয়েই সরাসরি শহিদুল হক কথা বলেন।
এ ক’জন ছাড়াও আরো অনেক মন্ত্রণালয় আছে যেখানে সচিব নির্ভরতাও সচিবের ক্ষমতা এবার অনেক বেশী।
বাংলা ইনসাইডার
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭