ইনসাইড গ্রাউন্ড

কি জন্য খেলবেন ইমরুল!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/04/2019


Thumbnail

অন্যরা যখন বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ব্যস্ত ইমরুল কায়েসের তখন অখন্ড অবসর। শেষ হয়েছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। সুপার লিগের খেলা বাকি থাকলেও বাদ পড়েছে ইমরুলের দল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স। ফলে আপাতত লম্বা ছুটি পেয়েছেন তিনি। যদিও এই ছুটি কোন ক্রিকেটারের কাম্য নয়। বিশ্বকাপ কিংবা আয়ারল্যান্ড সিরিজ খেলা না হলে, টানা পাঁচ-ছয় মাস খেলার বাইরে থাকতে হবে তাঁকে। ভালো খেলেও সুযোগ না পাওয়ায় হঠাৎ করে তাঁর মাথা একটা প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে খেলে কি হবে?

মাত্র ছয় মাস আগের ঘটনা। গত বছর অক্টোবরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে দুই সেঞ্চুরি সহ ৩৪৯ রান করেন ইমরুল। কিন্তু পরের ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম দুই ম্যাচে হয় ব্যর্থ। তৃতীয় ম্যাচে সুযোগ পেয়ে ৮০ রানের ইনিংস খেলেন সৌম্য। ফল স্বরূপ নিউজিল্যান্ড সফরে ছিটকে পড়েন দল থেকে। কিন্তু এর আগে নিউজিল্যান্ড সফরে ওয়ানডে সিরিজের বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহক ছিলেন ইমরুল। 

সে সময় সান্ত্বনার বাণী শুনিয়ে প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন বলেছিলেন নিউজিল্যান্ড সফরে না থাকলেও বিশ্বকাপের স্কোয়াডের ভাবনায় আছে সে। কিন্তু সেখানে পানি ঢেলে দেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। গত ২৬ মার্চ মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে স্বাধীনতা দিবস ক্রিকেট দেখতে এসে তিনি বলেন, ‘তামিম আর দুই ওপেনার। আমি ধরে নিচ্ছি সৌম্য, লিটন যদি খেলে তাহলে তো ওপেনার কোটা শেষ। আমি তো আর কোন জায়গা দেখছি না’

ইমরুল নিজেই সবচেয়ে দুর্ভাগা ক্রিকেটার হিসেবে দেখেন। গত দু’বছরে ধরে লড়াই করতে হচ্ছে তাকে। ২০১৭ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের মধ্যে রান পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম আর ইমরুল কায়েস। সেই তিনি ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পরের ওয়ানডে সিরিজের (ত্রিদেশীয়) স্কোয়াডে নেই। বাদ পড়লেন এশিয়া কাপের দল থেকেও। টুর্নামেন্টের মাঝপথে হঠাৎ করে উড়িয়ে নেওয়া হলো তাঁকে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেললেন অপরাজিত ৭২ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে তাঁকে খেলানো নিয়ে ভীষণ আপত্তি টিম ম্যানেজমেন্টের। মাশরাফি সহ বেশ কয়েকজন সিনিয়র ক্রিকেটারের দাবির মুখে একাদশে থাকেন ইমরুল। প্রথম ম্যাচে করলেন ১৪০ রান। এতোটাই ভালো খেললেন চাইলো ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজে বাদ দেওয়া গেলো না তাঁকে। কিন্তু দুই ম্যাচে ৪ ও ০ রান করায় আবারো বাদ পড়লেন তিনি।

১১ বছর আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের এমন উত্থান-পতন আর কারো নেই। এভাবে ধাক্কা খেতে খেতে ইমরুল ভীষণ ক্লান্ত। আলাপচারিতায় জানিয়েছেন এভাবে না খেলে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়ে দেওয়াই ভালো! কিন্তু এখনই আবেগের কাছে হার মানতে চাইছেন না তিনি, ‘ক্রিকেটটা তো রক্তে মিশে গেছে। খেলাটাকে অনেক ভালোবাসি। এছাড়া বয়স আছে। এর বাইরে অন্য কিছু চিন্তাও করতে পারি না। কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না’। 

এই পরই ছুঁড়ে দেন সেই ভয়ঙ্কর প্রশ্নটি, ‘ক্রিকেটার হিসেবে লক্ষ্য কি থাকবে? জাতীয় দলের খেলা। আর সেখানেই যদি কোনো আশা না থাকে, তবে খেলবে কেন?’

এই কথাতে পরিষ্কার অনেক ভেঙে পড়েছেন ইমরুল। প্রভাব পড়েছে খেলাতেও। তাই তো সবশেষ দুটি ঘরোয়া লিগে রান পাননি। চ্যালেঞ্জ নিয়ে ফিরে আসার শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। মনস্তাত্ত্বিকভাবে এতটাই পিছিয়ে পড়ছেন যে, লড়াই করার ইচ্ছেটাও মরে গেছে তাঁর।

বাংলা ইনসাইডার/আরইউ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭