লিভিং ইনসাইড

কর্মক্ষেত্রে পুরুষ সহকর্মী হয়রানি করছে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/04/2019


Thumbnail

কর্মক্ষেত্রটাকে আমরা নিজেদের সেকেন্ড হোম মনে করি। এখানেই দিনের অনেকটা সময় কাটানো মানেই এটা অনেকটাই পরিবারের মতো। আর এখন নারীরা পুরুষদের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাইরেও কাজ করছে। সেখানে তাদের নিরাপত্তাটা সবার আগে জরুরি। কিন্তু পুরুষশাসিত এই সমাজে পদে পদে তাদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কর্মক্ষেত্রে নারীদের সবচেয়ে বড় সমস্যা যৌন হয়রানি বা নিপীড়ন। যেকোনো ছোট বা বড় পদে আসীন নারীরা এ ধরনের বিড়ম্বনায় মুখ বুজে সব সহ্য করে। এই একটি কারণেই নারী কর্মক্ষেত্র বদলাতে বাধ্য হন, অনেকে চাকরি করাই ছেড়ে দেন।

এর সমাধান কি

যেকোনো ধরনের ছোট বা বড় হয়রানিই হোক না কেন, প্রথমে কর্তৃপক্ষের উচিত তার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। যদি আক্রান্ত নারী কোনো প্রকার অভিযোগ নাও করে থাকেন, তাও তাকে বোঝার চেষ্টা করতে হবে। সে হয়ত চক্ষুলজ্জার কারণে কোনো অভিযোগ করতে পারছে না। কারণ তারও তো একটা পরিবার রয়েছে, চাকরি হারানোরও ভয় রয়েছে।

অফিসে যৌন হয়রানি সংক্রান্ত ব্যাপারগুলো তদন্ত করার জন্য একটি কমিটি গঠন করা যেতেই পারে। অফিসের যেসব কর্মচারীরা তদন্ত করবেন, খোঁজখবর রাখবেন তাদের নাম অবশ্যই কনফিডেন্সিয়াল রাখতে হবে। বাইরে তাদের নাম না নেওয়াই ভালো। এতে করে কেউ ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবে না।

অফিস কর্তৃপক্ষের কখনোই উচিৎ না কারও প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হওয়া। অফিসের কোনো কর্মচারী যদি যৌন হয়রানি সংক্রান্ত কোনো নালিশ আনেন, তবে তা ভালো করে পর্যবেক্ষণ করে দেখা উচিৎ অন্যদের। নালিশটি যার বিরুদ্ধেই আসুক না কেন, এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। প্রয়োজনে কিছুটা সময় নিতে হবে। কয়েকজন দলবেধে পর্যবেক্ষণ করতে হবে যে ঘটনাটি কোনদিকে দিয়ে কোনদিকে যাচ্ছে।

কোনো নারী কর্মচারী যদি অফিসের বাইরে অফিসের কাজ করতে গিয়ে যৌন হয়রানির শিকার হন, তাহলেও কর্তৃপক্ষের উচিত এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া। ঘটনাগুলো অফিসের ভেতরে হয়নি বলে এড়িয়ে গেলে হবে না। কারণ অফিসের ভেতরে না হলেও এগুলো অফিস সংক্রান্ত ব্যাপার। একজন অফিস কর্মকর্তার নিরাপত্তা এবং সম্মান বিধান করা অফিসের অন্যতম দায়িত্ব।

এই নিপীড়ন ধরনের যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে নারীদের উচিত চুপ করে না থেকে তার প্রতিবাদ করা। যার আচরণই আপনার কাছে অপ্রীতিকর মনে হবে, তাকে সাবধান করে দিন। তিনি যেন এই ধরনের বাজে আচরণ আপনার সঙ্গে না করেন। তাতে যদি কাজ না হয়, তবে আপনি কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিতে পারেন। আপনি নিজেও সমাধান খুঁজুন। অন্য নারী সদস্যেরও কিছুটা আভাস দিয়ে রাখুন। একসঙ্গে বসে সমাধান করুন।

নিপীড়নের শিকার হলে কর্মক্ষেত্র বদলাতে হবে- এটা ভাববেন না। কারণ এতে কোনো সমাধান আসে না। আপনার সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলুন, তাদের পরামর্শ নিন। সম্ভব হলে যারা আপনার সঙ্গে এই ধরনের আচরণ করে তাদের এড়িয়ে চলুন কৌশলে। নিজের নিরাপত্তা নিজে ধরে রাখুন।

কর্মক্ষেত্রে পুরুষ সহকর্মীদের কাছ থেকে কমপ্লিমেন্ট পাওয়া খুব সাধারণ ব্যাপার। কিন্তু এই কমপ্লিমেন্টগুলো অনেক সময় শুধু কমপ্লিমেন্ট হিসেবে দেওয়া হয় না। বোঝার চেষ্টা করুন আপনার সহকর্মী কি হিসেবে আপনাকে কমপ্লিমেন্ট দিচ্ছেন। সেটা সাধারণ কথাবার্তা, নাকি কোনোকিছুর ইঙ্গিত সেটা বোঝার ক্ষমতা গড়ে তুলবেন।  

আপনার কোনো নারী সহকর্মী যদি অন্য কোনো পুরুষ সহকর্মী দ্বারা যৌন হয়রানি বা নিপীড়নের শিকার হন এবং তিনি যদি এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে ভয় পান, তবে আপনি তার হয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানাতে পারেন। আপনি নিজে না পারলে কয়েকজন ঐক্যবদ্ধ হয়ে তারপর তাকে সাহায্য করবেন।

সবসময়ে মনে রাখবেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষের কঠোর অবস্থান এবং অফিসে সঠিক বন্ধুসুলভ পরিবেশ বজায় রাখার মাধ্যমেই এমন হয়রানির পরিমাণ কমিয়ে আনা সম্ভব। সেই সঙ্গে যারা ইতিমধ্যে এ ধরনের হয়রানির শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য সঠিক কাউন্সিলিং এর ব্যবস্থাও প্রয়োজন। এতে কাজের পরিবেশটাও ভালো হবে, কর্মীদের কর্মদক্ষতাও বাড়বে। একে অন্যের সঙ্গে কোনো রেষারেষি বা দ্বন্দ্ব তৈরি হবে না।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭