ইনসাইড পলিটিক্স

ডেটলাইন; ৩০ এপ্রিল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/04/2019


Thumbnail

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ৩০ এপ্রিল যেন এক রহস্যময় তারিখ। ২০০৪ সালে ৩০ এপ্রিল তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আবদুল জলিল ট্রাম্পকার্ড তত্ত্ব দিয়েছিলেন। ঘোষণা দিয়েছিলেন ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সরকারের পতন হবে। তার কাছে ‘ট্রাম্পকার্ড’ আছে। ঐ ৩০ এপ্রিল সরকারের পতন হয়নি, রাজনীতিতে এক রহস্যময় প্রশ্ন আজও অমীমাংসিত। কি ছিলো আবদুল জলিলের ট্রাম্পকার্ড? ১৫ বছর পর আরেক রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে ৩০ এপ্রিলকে ঘিরে। বিএনপির নির্বাচিত ৬ জন সংসদ সদস্য যদি ৩০ এপ্রিলের মধ্যে শপথ না নেন, তাহলে তাদের আসন শূন্য ঘোষিত হবে। কি হবে ৩০ এপ্রিল? বিএনপির ৬জন নির্বাচিত কি বেগম খালেদার মুক্তির স্বার্থে শপথ নেবেন। নাকি তারা শপথ না নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে আরেক দফা আন্দোলনের বার্তা দেবেন? ২০০৪ সালের এপ্রিলেই আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ৩০ এপ্রিলের মধ্যে সরকার পতনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। এ লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ লাগাতার নানা কর্মসূচিও ঘোষণা করেছিল। আজ ২১ এপ্রিল ছিল আওয়ামী লীগের হাওয়া ভবন ঘেরাও কর্মসূচি। পুলিশ ব্যারিকেডে বনানী এবং গুলশান এলাকা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আর তামাশা করে বেগম খালেদা জিয়ার দুই পুত্র সিক্রেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছিল হাওয়া ভবনের সামনে এক মাঠে।

১৫ বছর পর সরকার বদল হয়েছে। তবে ২০০৪ সালের বিএনপি-জামাত জোট সরকারের চেয়ে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার অনেক ক্ষমতাশালী। আবার তৎকালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের চেয়ে বর্তমান বিএনপি অনেকটাই নাজুক। দেশে হরতাল অবরোধ নেই,  সরকারের উপর চাপ নেই। তবে, ৩০ এপ্রিল তারিখটার একটা চাপ আছে। সরকারের বিভিন্ন সূত্রের খবরে জানা গেছে, ৩০ এপ্রিলের মধ্যে যদি বিএনপির ৬ নির্বাচিত সংসদে শপথ না নেন, তাহলে বেগম জিয়ার আর মুক্তির কোনো সুযোগ নেই। বিএনপির আইনজীবীরাও বলেছেন, বেগম জিয়াকে সরকারের আনুকূল্য ছাড়া মুক্ত করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার। রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় প্রশ্ন হলো, বিএনপি কি খালেদার মুক্তির বিনিময়ে সংসদে যাবে? সরকারের বিভিন্ন সূত্রে বলা হয়েছে, বিএনপি যদি সংসদে না যায়, তাহলে রাজনৈতিক দল হিসাবে বিএনপি সকল অধিকার হারাবে। ইতিমধ্যেই, বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা অগ্নিসংযোগ এবং সন্ত্রাসের মামলাগুলো সচল করা হয়েছে। ৩০ এপ্রিলের পর থেকে বিএনপি নেতাদের নতুন করে ধরপাকড় করার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। একেকজন বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে নূন্যতম চারজনের মামলা আছে। সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে আভাস পাওয়া গেছে যে, বিএনপি শপথ না নিলে, একদিকে যেমন শূন্য আসনে উপ-নির্বাচনের ব্যবস্থা হবে, অন্যদিকে বিএনপির বিরুদ্ধে সরকার হার্ডলাইনে যাবে। সরকারের একাধিক সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে, ৩০ এপ্রিল যদি শপথ না নিলে, বেগম খালেদা জিয়াকেও কারাগার যেতে হবে। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকেও শোনা যাচ্ছে, তারা শপথ নেবে না বরং সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলনে গড়ে তোলার কাজ শুরু করবে। যে যেটাই করুক ৩০ এপ্রিল বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক নতুন মেরুকরণ তৈরি করবে।

 

বাংলা ইনসাইডার

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭