ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

প্রাচীন আবহাওয়া বার্তার মতোই হাস্যকর মার্কিন গোয়েন্দা রিপোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/04/2019


Thumbnail

প্রচলিত একটি কৌতুক হলো, আবহাওয়া দপ্তর যেদিন বলে যে আজ রোদ থাকবে সেদিন বৃষ্টি হয়। আবার যেদিন বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়, সেদিন খটখটে রোদ থাকে। মার্কিন যে ট্রাভেল অ্যালার্ট, সেটাকেও এখন হাস্যকার এই আবহাওয়া বার্তার সঙ্গেই তুলনা করা হচ্ছে।

মার্কিন ট্রাভেল অ্যালার্টের চারটি স্তর। এরমধ্যে একটি হলো ‘নরমাল প্রিকশন’। দ্বিতীয়ওটি ‘ইনক্রিজড প্রিকশন’। এর পরেরটি হলো ‘রিকনসিডার ইওর ট্রাভেল’। আর চূড়ান্ত ধাপটি হলো ‘ডোন্ট ট্রাভেল’। আফগানিস্তানে যেমন বহু আগে থেকেই ডোন্ট ট্রাভেল অ্যালার্ট দিয়ে রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। সিরিয়া বা ইয়েমেনের মতো যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলোতেও তাই।

বাংলাদেশকে গত ৯ এপ্রিল ইনক্রিজড প্রিকশন অ্যালার্ট দেওয়া হয়েছিল। এটা নিয়ে আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন যে, বাংলাদেশে এখন কোনো নিরাপত্তার হুমকি নেই। যদি সেটা থেকেও থাকে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত যে, নিরাপত্তায় কি ধরণের হুমকি আছে সেটা আমাদের জানানো।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিছুদিন আগেই যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেছিলেন। সেখানেও তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বলেছিলেন যে, বাংলাদশের নিরাপত্তায় কী ধরণের ঝুঁকি আছে সে ব্যাপারে গোয়েন্দা তথ্য থাকলে সেটা আমাদের জানান। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র সুনির্দিষ্টভাবে তেমন কোনো তথ্যই দিতে পারেনি।

মজার বিষয় হলো, শ্রীলঙ্কায় এতো বড় একটি হামলা হলো কিন্তু মার্কিন ট্রাভেল অ্যালার্টে এই দেশটি ভ্রমণে কোনো সতর্কতাই দেওয়া ছিল না। নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসী হামলা হলো, তখনও মার্কিন ট্রাভেল অ্যালার্টে এ ব্যাপারে কোনো সতর্ক বার্তা উল্লেখ করা হয়নি। তার মানে এটাই দাঁড়ায় যে, মার্কিন গোয়েন্দারা যে রিপোর্টগুলো দেয় এবং সরকারের পক্ষ থেকে যে সতর্কতা দেওয়া হয়, তা অনুমান নির্ভর। সংশ্লিষ্ট দেশের সঙ্গে অনুরাগ-বিরাগ বা বাণিজ্য ও লেনদেনের বিষয়গুলো প্রভাবিত করতেই এই রিপোর্ট ও সতর্কতাকে একটা চাপ হিসেবে কাজে লাগায় যুক্তরাষ্ট্র। এই সতর্ক বার্তাগুলো তথ্যনির্ভর এবং সত্য গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে যে করা হয় না তার বড় প্রমাণ হলো শ্রীলঙ্কায় হামলার ঘটনা।

শ্রীলঙ্কায় যেভাবে ব্যাপক আকারে সিরিজ হামলা চালানো হয়েছে, এর কোনো পূর্বাভাসই মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা দিতে পারেনি। নিউজিল্যান্ডের ঘটনারও কোনো আভাসও যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সংস্থা দেয়নি। তার মানে, অন্য যেকোনো বিষয়ে যেমন তারা কোনো দেশকে নাজেহাল করতে বা ভাবমূর্তি নষ্ট করতে বিভিন্ন কৌশল নেয়, তেমনি এই ভ্রমণ সতর্কতার মাধ্যমেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একটা জুজুর ভয় দেখায়। নিউজিল্যান্ড এবং শ্রীলঙ্কার হামলা এটাই প্রমাণ করলো যে, যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত গোয়েন্দা রিপোর্টগুলো একেবারেই অপ্রাসঙ্গিক এবং প্রাচীন কালের আবহাওয়া বার্তার মতোই হাস্যকর ছাড়া আর কিছুই নয়।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭