ইনসাইড পলিটিক্স

বিএনপির প্রতি আরো কঠোর হচ্ছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 23/04/2019


Thumbnail

সংসদে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরকার বিএনপির ব্যাপারে কঠোর মনোভাব ব্যক্ত করছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, বেগম খালেদা জিয়াকে সহসাই বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে। তবে এবার তাঁকে নাজিমুদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে নয়, কেরানিগঞ্জের নতুন কারাগারে নেওয়া হবে। সেইসঙ্গে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে যে মাওলাগুলো রয়েছে সেগুলোকে দ্রুত চলমান করে দ্রুত বিচার শেষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়চেহে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের সভায় ২০১৪-১৫ সালে অগ্নি সন্ত্রাস, নাশকতার মামলাগুলোতে কালক্ষেপণ না করে  দ্রুত আইনী প্রক্রিয়া অনুসরণ করে বিচার নিষ্পত্তির আলোচনা হয়। এই বিষয়গুলো শীঘ্রই আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ে দেয়া হবে। আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, যে মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরে বিচারাধীন অবস্থায় পরে আছে সেগুলোতে যেন দ্রুত চার্জশীট দেয়া হয়। দ্রুত বিচার নিষ্পত্তির উদ্যোগ নেয়া হয় সেজন্য আইন মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে। খুব শীঘ্রই আমাদের উদ্যোগ দৃশ্যমান হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, মির্জা ফখ্রুল সহ বিএনপির স্থায়ী কমিটির প্রায় অসব সদস্যের বিরুদ্ধেই অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাস, গাড়ি ভাংচুরের সহ বিভিন্ন নাশকতার মামলা রয়েছে। এইসব মামলার মধ্যে মূলত তারা আসামি হয়েছেন নাশকতার পরিকল্পনা করা, ইন্ধন দেয়া, মদদ দেয়া, নাশকতা বাস্তবায়নের জন্য সহযোগিতা করার জন্য।

সরকার অপেক্ষা করছিল যে, বিএনপির ছয়জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য সংসদে যায় কিনা। সে সময় সরকারের মধ্যে থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল যদি তারা সংসদে না যায় তাহলে বিএনপির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে সরকার। বিএনপিকে সংসদে নেয়ার জন্য কোনোরকম আপোষ ফর্মুলা বা দেনদরবারের পথে যাবে না। সরকার এ নিয়ে বিএনপির সঙ্গে কোনো সমঝোতারও উদ্যোগ নেবে না। বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল যে, খালেদা জিয়ার মুক্তি দিলে তারা সংসদে যেতে পারে। সেই প্রস্তাবের বিপরীতে সরকার থেকে বলা হয়েছিল যে, বেগম খালেদা জিয়া যদি মুক্তি চান তাহলে তিনি প্যারোল পেতে পারেন। একমাত্র প্যারোলই হলো সরকারের এখতিয়ারাধীন বিষয়। জামিন দেয়ার এখতিয়ার সরকারের নেই। জামিন দেওয়ার এখতিয়ার একমাত্র আদালতের। সেটা আইনী প্রক্রিয়াতেই বিএনপিকে আদায় করতে হবে। কিন্তু গতরাতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সংসদে তারা যাবে না এবং খালেদা জিয়ার প্যারোলের আবেদনও করবে না। এই প্রেক্ষিত্রে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির সমঝোতা, তা দৃশ্যত ভেঙ্গে গেল। এরপরে সরকার বিএনপির ব্যাপারে আরো কঠোর হবে বলেই একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র নিশ্চিত করেছে।

বিএনপির যে সমস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে মামলা ঝুলে ছিল, সমঝোতার অংশ হিসেবে যার কোনটিরই চার্জশিট দেওয়া হয়নি বা কোনটির বিচার প্রক্রিয়া প্রলম্বিত করা হয়েছে। সেগুলো এখন দ্রুত নিষ্পত্তির দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। সরকারের একাধিক সূত্র বলছে যে, সমস্ত অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে বিএনপির নেতৃবৃন্দ। সেসসমস্ত অভিযোগগুলো প্রত্যেকটিরই একটি ভিত্তি রয়েছে এবং আদালতে গেলে তাদের এই মামলাগুলো মোকাবেলা করা কঠিন হবে। বিএনপির অনেক নেতাও সেটা জানেন। বিএনপির অনেকে প্রকাশ্যে সরকারের সমলোচনা করলেও গোপনে এইসব মামলা থেকে গ্রেপ্তারি এড়াতে এবং বিচার এড়াতে সরকারের সঙ্গে দেন দরবার করেছেন। বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন, এই সমস্ত দেন দরবারের কারণেই সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির নেতারা কঠোর অবস্থানে যেতে পারেনি এবং বড় ধরনের কোন আন্দোলনও গড়ে তুলতে পারেনি। তবে এখন বিভক্ত হতাশাগ্রস্থ বিএনপিতে শেষ আঘাত হানতে চায় সরকার। সেজন্য সরকার আরো কঠোর হয়ে বিএনপির সিদ্ধান্তের জবাব দিতে চায় বলে সরকারের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে। এরফলে রাজনীতিতে বিএনপির অস্তীত্ব এক কঠিন পরীক্ষার মুখেমুখি হবে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা। 


বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭