লিভিং ইনসাইড

রোজার অভ্যাসে কীভাবে নিজেকে বদলে ফেলবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/04/2019


Thumbnail

সামনে তো রোজা আসছে, এই সুযোগে অন্তত সিগারেটটা একেবারে ছেড়ে দাও- এমন কথা ধূমপায়ীরা প্রায় প্রতিবছরে রোজার আগেই শোনে, এটা নতুন কিছু নয়। অনেকে আবার ভাবে, সামনে তো রোজা আসছে, এবার হাবিজাবি খাওয়ার অভ্যাসটা কমিয়ে দেবো, সকাল সকাল ঘুমাতে যাবো আবার সময়মতো ঘুম থেকে উঠবো, আর মিথ্যে বলবো না, সম্ভব হলে সিগারেটটাও ছেড়ে দেবো- রোজাকে সামনে রেখে এমন চিন্তা অনেকেরই থাকে। এটাকে চিন্তা না বলে অভ্যাস গড়ে তোলার পরিকল্পনাও বলা যায়।

রোজাকে আমরা বিশ্বাস করি সংযমের মাস হিসেবে। এই মাসে আমরা নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করি, চেষ্টা করি নিজেকে শুদ্ধ আর ঝামেলামুক্ত রাখতে। নিজেকে ভালো রাখতে শুধু একটা মাস নিয়ন্ত্রণে না থেকে সারাবছর যদি এমন নিয়ন্ত্রণে থাকা যায় তো সেটা ক্ষতির কিছু নয়। কীভাবে নিয়ন্ত্রণের দ্বারা নিজেকে বদলে ফেলা সম্ভব, তা নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা-

ধুমপান ছাড়া

ধূমপান মানে অবশ্যই বিষপান। কিন্তু লোকে জেনেশুনে এই ধূমপানের অভ্যাস বাদ দিতে পারে না। এই রোজায় একটা সুযোগকে কাজে লাগিয়েই দেখুন। যেমন ধরুন, আপনি যেহেতু রোজা রেখে সারাদিন না খেয়ে সংযম করবেন, তাই আপনি সারাদিন ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন। আবার রোজার সময়ে যাবতীয় নেশাকে এড়িয়ে চলা হয় বিধায় ধূমপান এড়িয়ে চলেন অনেকে। এই দীর্ঘ একটা মাস ধুমপান থেকে দূরে থাকার অভ্যাস করলে অবশ্যই বাকি সময়ের জন্য ধূমপান ছাড়ার সুযোগ হয়ে যাবে।

হালকা খাওয়ার অভ্যাস

সারাদিন কাজের ফাঁকে বা শুয়ে বসে থেকে আমাদের খাওয়াদাওয়া চলতেই থাকে। নাস্তার পর আবার কিছু খাওয়া, দুপরে খাওয়ার আগে-পরে খাওয়া, সন্ধ্যায় জমপেশ নাস্তা- এভাবেই খাদ্যচক্র চলে আমাদের। বাইরের ভাজাপোড়া বা ঘরে বানানো মুখরোচক হেলদি খাবার খেতে গিয়ে শরীরটাকে নষ্ট করে ফেলি আমরা। এতে করে স্থূলতা, ওজন বেড়ে যাওয়া, অ্যাসিডিটি, খাওয়ায় অনিয়মের ব্যাপারগুলো হয়। কিন্তু রোজার সময়ে সারাদিন আপনি খেতে পারছেন না, ইফতারের পরও স্বাস্থ্যকর খাওয়ার রুটিন মানতে হচ্ছে। তাই সারাদিন বিশৃঙ্খল খাওয়ার অভ্যাসটি এই রোজার হাত ধরেই আপনি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেন সহজেই। আর বেশি পরিমাণে খাওয়া কখনোই ভালো হয় না। সেক্ষেত্রে এই সময়ে খাওয়ার পরিমাণ কমানো সম্ভব। এই অভ্যাসটিই আপনার প্রয়োজন।

জীবনযাপনে পরিবর্তন

আমরা প্রায়ই ভাবি যে জীবন পাল্টে ফেলবো, একটু নিয়মশৃঙ্খলার মধ্যে আসবো, সব কাজে নিয়মিত হবো। এই ভাবনা পর্যন্তই। একটু সংযমী হতে পারেন এই সময়েই। সময়মতো সব কাজের অভ্যাস, একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ সারা, কিছু নিয়ম মেনে চলার মধ্যেই সুঅভ্যাস গড়ে তুলুন। অলসতা ও শ্রম-বিমুখতা করে দিন কাটানোর স্বভাব বাদ দিন। খেলাধুলা করা, মোবাইল আর কম্পিউটার ব্যবহার করে, বা  অন্য কোনো বিনোদনে ব্যস্ত থেকে সারাদিন কাটিয়ে দেওয়ার বিষয়গুলোও নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব এইমাসে।

রাত করে খাওয়া আর ঘুম

আমাদের অনেকেরই অভ্যাস থাকে বেশি রাত করে খাওয়ার। সন্ধ্যায় বেশি খেয়ে বা বিভিন্ন কাজে পড়ে খেতে খেতে অনেক রাত হয়ে যায় হয়ত। এই রাত করে খাওয়াটা ভালো অভ্যাস না। খেয়েই ঘুমাতে গেলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। রোজার সময়ে সেহেরি খাওয়ার তাগিদে রাতে চটজলদি খেয়ে নিতে হয়। এই অভ্যাসের জেরেই পরবর্তী দিনগুলোতেও দ্রুত খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সেই সঙ্গে সেহেরিতে উঠতে হবে বলে দ্রুত ঘুমিয়ে পড়ার অভ্যাস অন্য সবসময়ের জন্য ধরে রাখুন।

শারীরিক নিয়মশৃঙ্খলা

রোজা থাকলে সেহেরির পর সকালের নামায শেষে আপনি হাঁটাহাঁটি আর ব্যায়ামের অভ্যাস করে নিতে পারেন। মানে এই রোজা থেকে আপনি অভ্যাসটা গড়ে তুলতে পারেন। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন থাকা, অসুস্থ হওয়ার ভয়ে ঠিকমতো স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভাস নিশ্চিত করা, ঠিকমতো চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলার চেষ্টা করে এই রোজার মাসটা। এখান থেকেই শুরু করে দেখুন, সবসময়ই এমন শৃঙ্খলে থাকতে পারেন কিনা।

মিথ্যা কমিয়ে বলা

সবাই জানি এটা সংযমের মাস। এই মাসে মিথ্যা, পাপ, বিশৃঙ্খলা থেকে দূরে থাকাই নিয়ম। এখন প্রশ্ন হলো, এই একমাস যদি সংযমে থাকা যায় তো অন্য সময়ে নয় কেন? এই সময়টা থেকেই মিথ্যাকে জীবন থেকে এড়াতে শুরু করুন। অন্যের সঙ্গে কোনোরকম দুর্ব্যবহার, গালিগালাজ, পরনিন্দাকে আমরা এসময়ে এড়িয়ে চলি। এটা হোক সবসময়ের। দানের টুকটাক অভ্যাসও গড়ে তুলুন।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭