ইনসাইড ট্রেড

ফখরুলের সঙ্গে বসছেন না স্থায়ী কমিটির সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/05/2019


Thumbnail

২৯শে এপ্রিলের পর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক ঢাকার চেষ্টা করেছেন দুই দফা। কিন্তু দুই দফাই ব্যর্থ হয়েছেন। স্থায়ী কমিটির কোনো সদস্যই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে বসতে চান না। স্থায়ী কমিটির অন্তত পাঁচজন সদস্য লিখিত চিঠি দিয়ে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক জিয়াকে জানিয়ে দিয়েছেন যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মহাসচিব থাকলে তাঁরা স্থায়ী কমিটির বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন না। তাঁরা এটাও বলেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলগগীর কি শলা-পরামর্শ করে পাঁচজনের শপথ গ্রহণের সম্মতি দিয়েছে সেটাও স্থায়ী কমিটির জানা প্রয়োজন।

উল্লেখ্য যে, তারেক জিয়া স্থায়ী কমিটির বিভিন্ন সদস্যের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছেন। তাঁদেরকে পরিস্থিতি বুঝানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু কিছুতেই পরিস্থিতি শান্ত হচ্ছে না। বরং বিএনপিতে এখন দ্বিধাবিভক্ত স্পষ্ট হয়েছে। একদিকে রয়েছে তারেক জিয়া এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অন্যদিকে স্থায়ী কমিটির অন্যান্য সদস্যরা। স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বলছেন যে, পাঁচ এমপির শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে বিএনপির গঠনতন্ত্র লংঘিত হয়েছে। বিএনপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী সংস্থা হলো স্থায়ী কমিটি। কিন্তু স্থায়ী কমিটিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে যারা শপথ নিবে তাঁদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। যখন জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলো তখন কীভাবে মির্জা ফখরুল এবং তারেক জিয়া শপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন। স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন যে, ‘মির্জা ফখরুল গঠনতন্ত্রের দোহাই দিয়ে তারেক জিয়ার উপর সর্বময় দায়িত্ব ন্যস্ত করেছেন। তারেক জিয়া নির্দেশ দিলো এবং তিনি সেটা পালন করলেন কীভাবে। তাঁর তো উচিৎ ছিল স্থায়ী কমিটিতে বিষয়টি আলোচনা করা।’ স্থায়ী কমিটির অন্যতম সদস্য ড: খন্দকার মোশাররফ হোসেনও একই অভিমত ব্যক্ত করেছেন। স্পষ্টত দলের ভেতর কোনো শৃঙ্খলা নাই এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও তারেক জিয়া কি প্রক্রিয়ায় এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটা স্থায়ী কমিটিকে জানানোর প্রয়োজন ছিল। কিন্তু এরা দুজনই মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে স্থায়ী কমিটিতে বসতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। তাহলে কি বিএনপি ভেঙ্গে যাচ্ছে?
অবশ্য কেউই এখনো সুনির্দিষ্টভাবে বলেননি যে বিএনপি ভাঙছে। তবে এটা ঠিক যে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আলাদাভাবে তাঁর পক্ষের লোকজন নিয়ে মিটিং করছেন। যে সমস্ত কর্মসূচিতে মির্জা ফখরুল উপস্থিত থাকছেন সেসবে ড: খন্দকার মোশারফ হোসেন সহ স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যরা অংশগ্রহণ করছেন না। এটা ঠিক যে, বিএনপির তৃণমূল স্পষ্টই এই শপথ গ্রহণের বিপক্ষে এবং তাঁরা মনে করছে যে, এই শপথ গ্রহণের মধ্যদিয়ে বিএনপির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। জাতীয় নির্বাহী কমিটির অন্তত ৭১ জন সদস্য তালিকা সংগ্রহ করেছেন এবং তাঁরা একটি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সভা বা তলবীসভা আহ্বানের জন্য একটি চিঠি প্রস্তুত করছেন এবং এই চিঠিটা দু’একদিনের মধ্যে দলের মহাসচিবের কাছে দেয়া হবে। মহাসচিব যদি দলের কর্মীসভা আহ্বানে ব্যর্থ হোন সেক্ষেত্রে তাঁরা নিজেরাই তলবী সভা করবেন বলে একাধিক নেতা জানিয়েছেন।

বিএনপির অন্যতম নেতা মেজর অবসরপ্রাপ্ত হাফিজউদ্দিন বলেছেন যে, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কি তারেক জিয়াকে বুঝিয়েছেন নাকি তারেক জিয়া মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে বুঝিয়েছেন বিষয়টা স্পষ্ট হওয়া দরকার। বিএনপি কোনো দুজন বা তিনজনের দল না। বা কোনো পকেট দলও না। কীভাবে কেন এই সপথ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হলো এবং কেন তাহলে বলা হলো যে বিএনপি শপথ গ্রহণ করবে না? এ ব্যাপারে যদি ব্যাখ্যা দলের মহাসচিবসহ দলের নেতৃবৃন্দ না দিতে পারেন তাহলেও রাজনীতিতে বিএনপির আরেকটা বড় বিপর্যয় ঘটবে বলে মেজর অব. হাফিজ মনে করেন। স্পষ্টত দ্বিধাবিভক্ত বিএনপি আনুষ্ঠানিকভাবে ভাঙবে কখন সেটাই দেখার বিষয়।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসআর



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭