ইনসাইড পলিটিক্স

রাজনীতিতে অসফল আ.লীগ সভাপতির ব্যক্তিগত কর্মকর্তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 04/05/2019


Thumbnail

প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত স্টাফদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ প্রায়ই ভালো হয় না। তারা ব্যক্তিগত স্টাফ থেকে যখনি রাজনীতিতে আসেন তখনই তারা সুবিধা করতে পারেন না। সাধারণত দলের সভাপতি বা সরকার প্রধানের ব্যাক্তিগত স্টাফ নির্বাচিত হন যারা দলের সভাপতির ঘনিষ্ঠ এবং ব্যক্তিগতভাবে পরিচিত হন তারাই। দলের বিশ্বস্ত এবং একনিষ্ট কর্মীদের থেকেই ব্যক্তিগত স্টাফ বাছাই করা হয়। কিন্তু দেখা যায় যে, ব্যাক্তিগত স্টাফদের আয়ু হয় স্বল্পস্থায়ী। ব্যক্তিগত স্টাফ থেকে যখন তারা সরে যান, তখন তারা রাজনৈতিক মাঠেও হারিয়ে যান। এমনি কয়েকজনের খোঁজ দেওয়া হলো: 

মৃনাল কান্তি দাস: আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন তার ব্যক্তিগত স্টাফ হিসেবে কাজ করেছেন মৃনাল কান্তি দাস। কিন্তৃ মৃনাল কান্তি দাস আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর মৃনাল কান্তি দাস ছিলেন ক্ষমতার বাইরে। যদিও ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের ৩০ডিসেম্বর নির্বাচনেও তিনি মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু এমপি হিসেবে তিনি সরব নন। দলের মধ্যেও তার প্রভাব কমে গেছে। যদিও আওয়ামী লীগের তিনি সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য।

আ. ফ. ম. বাহাউদ্দিন নাছিম: ১৯৯৬ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসেন তখন সহকারী একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু এরপর দ্বিতীয় মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তিনি আর ব্যক্তিগত স্টাফ থাকেননি। রাজনৈতিক অঙ্গনে চলে যান তিনি। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে রাজনীতির মাঠ থেকে প্রায় ছিটকেই গেছেন।

আলাউদ্দীন নাসিম: প্রথম মেয়াদে আওয়ামী লীগ সভাপতির প্রটোকল অফিসার ছিলেন আলাউদ্দীন নাসিম। তিনি ৮৬ ব্যাচের বিসিএস প্রশাসন কর্মকর্তা ছিলেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন বিরোধী দলের নেতা নির্বাচিত হন, তখন তিনি বিরোধী দলের নেতা হন। ২০০১ সালে নির্বাচনে পরাজিত হয়ে যখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে যায় তখন বিরোধী দলের নেতার একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। কিন্তু এরপর আর রাজনৈতিক অঙ্গনে তাকে সরব দেখা যায়নি। যদিও তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য। এবার নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন চেয়েও পাননি।

র.আ.ম.উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী: শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথম মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে সভাপতির একান্ত সচিব ২ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন ৮৩ ব্যাচের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এই বিসিএস কর্মকর্তা। এরপর তিনি চাকরি থেকে অবসর নিয়ে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। কিন্তু ২০০৮ সালের নির্বাচনে প্রথমে তিনি মনোনয়ন পাননি। সেই আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী মৃত্যুবরণ করলে তিনি উপনির্বাচনে বিজয়ী হন। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৯ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হলেও মন্ত্রিসভায় তার ঠাঁই মিলেনি। দলেও তিনি তেমন প্রভাবশালী নন।

সাইফুজ্জামান শেখর: ২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সভাপতির একান্ত সচিব ছিলেন তিনি। এবার নির্বাচনে তিনি মাগুড়ার একটি আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং বিজয়ী হয়েছেন। কিন্তু এমপি হওয়ার পর মনে হয়েছে তার প্রভাব আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। এমপি হিসেবে তার তেমন কোন উল্লেখযোগ্য পদচারণা দেখা যায় না।

ড. আওলাদ হোসেন: ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সভাপতি যখন বিরোধী দলের নেতার আসনে আসীন হন তখন আওলাদ হোসেন ছিলেন আওয়ামী লীগ সভাপতির একান্ত সচিব। কিন্তু ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি ছিটকে পড়েন। তারপর তার সঙ্গে দলের এবং সভাপতির দূরত্ব যোজন যোজন। যদিও তার অপরাধ কি সেটা যেমন তিনি জানেন না, তার ঘনিষ্ঠরাও জানেন না।

দেখা যাচ্ছে যে, একান্ত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রাজনৈতিক বিবেচনায়। তাদের অনেকেরই রাজনৈতিক পরিচিতিটা তেমন সুখের হয়নি। কেন হয়নি তার বিভিন্ন রকম ব্যাখ্যা থাকতেই পারে। অনেকেই মনে করেন, আওয়ামী লীগ সভাপতির যে আসন, সেই আসনটা হলো একটা হটসিট। কাজেই এই হটসিটের চারপাশে যারা থাকে তারা সবসময় এই উত্তাপ সহ্য করতে পারে না। এজন্য অনেক সময় তাদের রাজনৈতিক বিকাশের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়।  

 

বাংলা ইনসাইডার 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭