লিভিং ইনসাইড

শ্বশুরবাড়িতে আপনি যখন নতুন পুত্রবধূ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 08/05/2019


Thumbnail

উপমার বিয়ে হয়েছে একবছর হতে চললো। শ্বশুরবাড়িতে মন বসাতেই যেন চলে গেছে অনেকগুলো দিন। প্রথমদিকে শুধু মনে হতো, ইশ, শ্বশুরবাড়িতে এত দায়িত্ব! সবার মন জুগিয়ে চলা, সবার মনের মতো কাজ করা বেশ কঠিন। শ্বশুরবাড়িতে কারো সঙ্গে সামান্য মন কষাকষি হলেও কেমন খারাপ লাগতো। স্বামীকে মন খুলে কিছু বলতেও পারতো না। এই অবস্থায় নিজেকে সবার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে উপমার মতো হিমশিম খেতে হয় অনেকেরই।

এদিকে বিয়ের পর সব শ্বশুর-শাশুড়িও আশা করেন বউমা এসে সংসারের দায়িত্ব নেবে। কিন্তু অনেকসময় তা হয়ে ওঠে না। ফলে শুরু হয় সাংসারিক অশান্তি। তাই পুত্রবধূ হিসেবে সংসারে আপনার ভূমিকা কেমন হতে পারে তা নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা-

বাবার বাড়ি আর শ্বশুরবাড়ির মধ্যে অবশ্যই পার্থক্য থাকে, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। নিজের বাড়িতে আপনি যেমন খোলামেলাভাবে, সবাইকে চিনে-জেনে বড় হয়েছেন শ্বশুরবাড়িও তেমন হবে, সেটা ভাবার কোনো কারণ নেই। মনে রাখতে হবে, বিয়ে হওয়া মানে কিছুটা হলেও দায়িত্ব বেড়ে যাওয়া।

নিজের বাবার বাড়ি ছেড়ে শ্বশুরবাড়ির পরিবেশটা অবশ্যই ভিন্ন। শ্বশুরবাড়িকে শুধু শ্বশুরবাড়ি মনে করলে সেটা নিজের বলে কখনোই ভাবতে পারবেন না। সেখানে নিজের মতো করে থাকতে পারবেন না, কাউকে আপন মনে হবে না। তাই সেখানে মানিয়ে নিন, নিজের বাড়ি ভাবতে শিখুন। সবাই সবকিছু পারে না কিন্তু সাহায্য করার ইচ্ছাটাই বড়। আপনি যতটুকু পারেন শাশুড়িকে কাজেকর্মে সেটুকু সাহায্যই করুন।

আপনি নিজের বাড়িতে মা-বাবা, ভাইবোনের বিভিন্ন বিষয়ে শেয়ার করেছেন, সুখে-দুঃখে তাদের পাশে থেকেছেন শ্বশুরবাড়িতেও তেমনটা করার চেষ্টা করবেন। এটাকে নিজের বাড়ি মনে করে বাবার বাড়িতে মাকে, বাবাবে যেভাবে সাহায্য করতেন, শ্বশুর-শাশুড়িকেও সেভাবে সাহায্য করুন। ননদ, ভাসুর-দেবরকে নিজের ভাইবোনের মতো পাশে রাখুন।

আপনার স্বামীর পরিবারকে আপন করে নিতে পারলে আপনার স্বামীও সন্তুষ্ট থাকবেন আপনার প্রতি। তাই হবেন। তাই শাশুড়িসহ সবাইকে আপন করার চেষ্টা করুন। নিজেকে মেলে ধরুন। স্বামীর কাছে কখনো শ্বশুরবাড়ির কারো কথা অতিরঞ্জিত করে বলতে যাবেন না। এতে ঝামেলা বাড়বে। কোনো সমস্যা হলে সেটা শেয়ার করুন, সমাধান চান।

নিজের বাড়ির সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের সম্পৃক্ততা বাড়ান। দুইপক্ষের মধ্যেই নিয়মিত যোগাযোগ রাখা উচিৎ। ভালোমন্দ বা বিপদে আপদে এই দুই পরিবার পাশাপাশি থাকলে পুত্রবধূ বা বৌ হিসেবে আপনি একটা স্বচ্ছ অবস্থানে থাকবেন। বাবার বাড়ি গিয়ে কখনো শ্বশুরবাড়ির বদনাম বা দুর্বলতাগুলো নিয়ে বদনাম করতে যাবেন না।

আপনি সব জানেন, সব পারেন- এটা কখনোই ফলাতে যাবেন না। কাজকর্মগুলো, সংসারের দায়িত্ব শাশুড়ির কাছ থেকে কাজ শিখে নেওয়ার চেষ্টা করুন। সংসারের সবার কাছে সাহায্য চান। নিজ দায়িত্বে তাদের আপন হওয়ার চেষ্টা করুন।

নিজেকে সবসময় নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন। বিশেষ করে কখনো শাশুড়ি কিছু বললে রেগে যান অনেকেই। শ্বশুর কিছু বললে সেটাকে জ্ঞান দেওয়া বা উপদেশ বলে মনে হতে পারে আপনার। আপনার মা যখন আপনাকে বকা দিতেন তখন ব্যাপারটা যেভাবে নিতেন, এখনও সেভাবেই নিন। বাবা যেমন কিছু বোঝাতেন, তেমনটাই মনে করুন যে শ্বশুর বোঝাচ্ছেন। ভাইবোনের সঙ্গে যেমন তর্ক-ঝগড়া হতো, দেবর-ননদদের সঙ্গেও তেমন হতেই পারে বলে মেনে নিন।

সবার সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশার চেষ্টা করুন, তার পছন্দ-অপছন্দ জেনে নিন। সেই পছন্দের মূল্য দিতে চেষ্টা করুন। সবার পছন্দের খাবার-দাবার রান্না করুন। নিজে উপার্জন করলে সবার জন্য সামর্থ্যমত জিনিসপত্র কিনে দিন।

অন্যদের কাছে শ্বশুরবাড়ির নিন্দা করবেন না। কারণ এটাও আপনার পরিবার। পরিবারকে ছোট করলে আপনার নিজেরও ভালো লাগবে না। অন্যদেরও আপনার সম্পর্কে একটা নেতিবাচক ধারণা তৈরি হবে।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭