লিভিং ইনসাইড

খেজুর বৃত্তান্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/05/2019


Thumbnail

রোজা এলে ইফতারে আমরা আর কিছু খাই বা না খাই, খেজুরটা ঠিকই থাকে ইফতারে। এটা যেন আমাদের রীতির মধ্যেই পড়ে। খেজুর খাওয়া সুন্নত বলেই যে শুধু আমরা খেজুর এতো পছন্দ করি, তা কিন্তু নয়। খেজুরের রয়েছে অসংখ্য পুষ্টিগুণ। কিন্তু আসলে কি কি পুষ্টিগুণ রয়েছে, কত রকমের খেজুর রয়েছে, খেজুর কীভাবে সংরক্ষণ করা যায় সেই বিষয়গুলো নিয়ে থাকছে আজকের আয়োজন-

বিভিন্ন ধরনের খেজুর

আজওয়া খেজুর

এই খেজুরকে মদিনা শরিফের সর্বোত্তম খেজুর বলা হয়। এগুলো দেখতে কালো, ছোট বিচি এবং খেতে বেশ সুস্বাদু। আজওয়া খেজুরকেই বিশ্বের সবচেয়ে দামী খেজুর বলা হয়ে থাকে।

সাফাওয়ি খেজুর

এই খেজুর নরম। গাঢ় বাদামি রঙের লম্বাটে। খেতে মাঝারি ধরনের মিষ্টি।

আমবার খেজুর

মদিনার বিখ্যাত খেজুরগুলোর মধ্যে একটি। খেতে কম মিষ্টি।

সুগায়ি খেজুর

এই খেজুর বড় ও ছোট দুই আকারেই হয়। মুখে দিলে একটু কষ কষ লাগে। খেতে মিষ্টি। বাইরের আবরণ বেশ নরম।

মরিয়ম খেজুর

লালচে রঙের এই খেজুর এক থেকে দেড় ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয়। সাধারণত আমরা সচরাচর যে খেজুরগুলো খাই, সেগুলো এই মরিয়ম খেজুরই। খেতে বেশ নরম আর কালচে খয়েরি। খেতে মোটামুটি নরম।

আনবারা খেজুর

এই খেজুর আকারে বেশ বড়। রং লালচে বাদামি ও পুরু মাংসল এই খেজুরের বিচি খুব ছোট হয়। এই খেজুরের দামও অনেকটা বেশি।

সুক্কারি খেজুর

রসালো লালচে রঙের এই খেজুরটি দেড় ইঞ্চির মতো লম্বা এবং খেতে খুব সুস্বাদু।

রুথান

টকটকে লাল রঙের বড় সাইজের হয়ে থাকে। খেতে কিছুটা কাচা কাচা লাগে বলে খেতে গেলে কিছুটা খচখচ করে। তবে খেতে সুস্বাদু।

বারহি খেজুর

খুব মিষ্টি এবং বড়ই আকারের হয়ে থাকে এই খেজুরটি। সাধারণত কাঁচা অবস্থায় এই খেজুরটি খেতে হয়। পাকলেও কিছুটা শক্ত ভাব থেকেই যায়। রং হয় বাদামি ও হলদেটে। এর হলদে অংশ একটু টকভাব থাকলেও বাদামি অংশ বেশ মিষ্টিস্বাদের।

এছাড়াও আরও বিভিন্ন ধরনের খেজুর পাওয়া যায়, যেমন- মুসকানি, খালাস, ওয়াসালি, বেরহি, শালাবি, ডেইরি, মাবরুম, ওয়ান্নাহ, সেফরি, খুদরি আরও কতো কি।

খেজুর সংরক্ষণ করবেন কীভাবে

আমরা সাধারণত তিন ধরনের খেজুর খাই। শুকনো, আধা শুকনো আর নরম খেজুর। একেক ধরনের খেজুর একেরভাবে সংরক্ষণ করতে হয়।

খেজুর এক সপ্তাহের মধ্যে খেতে চাইলে তাহলে পলিব্যাগে ভরেই রাখতে পারেন।

আর যদি দীর্ঘসময়ের জন্য সংরক্ষণ করতে চান তাহলে কনটেইনারে ভরে ফ্রিজে রাখাই ভালো। ফ্রিজে রাখার জন্য সবচেয়ে ভালো হলো নরম খেজুরগুলো। শক্ত বা একদম শুকনো খেজুর ফ্রিজে না রাখাই ভালো। এতে আরও শক্ত হয়ে যায় খেজুর।

আধা শুকনো খেজুর ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে পারেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে সেটা যেন চুলা বা আগুনের আশপাশে না থাকে। গরমে খেজুর নষ্ট হয়ে যেতে পারে।

কেন খাবেন খেজুর

পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ ও প্রাকৃতিক আঁশেভরা খেজুর ক্যানসার প্রতিরোধ করে। হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখতেও খেজুর বেশ উপযোগী। অল্প কয়েকটি খেজুর ক্ষুধার তীব্রতা কমিয়ে দেয়, পাকস্থলীকে কম খাবার গ্রহণ করায়। ফলে শরীরের প্রয়োজনীয় শর্করার ঘাটতি পূরণ হয়।

খেজুর বুকের দুধ খাওয়ানো মায়েদের জন্য সমৃদ্ধ এক খাবার। মায়ের দুধের পুষ্টিগুণ বাড়িয়ে দেয় এবং শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। খেজুরে ক্যালসিয়াম থাকে প্রচুর, ফলে হাড় গঠনে সহায়ক।

অন্ত্রের কৃমি ও ক্ষতিকারক পরজীবী প্রতিরোধে খেজুর বেশ সহায়ক। এছাড়া অন্ত্রে উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে। খেজুর দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে রাতকানা প্রতিরোধেও সহায়তা করে। খেজুরে আছে এমন সব পুষ্টিগুণ থাকে যা খাদ্য পরিপাকে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য রোধ করে। যকৃতের সংক্রমণে খেজুর উপকারী। এছাড়া গলাব্যথা এবং বিভিন্ন ধরনের জ্বর, সর্দি ও ঠাণ্ডায় বেশ কার্যকরী।

খেজুর শিশুদের মাড়ি শক্ত করতে সাহায্য করে এবং কোনো ক্ষেত্রে ডায়রিয়াও প্রতিরোধ করে। তাই শুধু রোজার মধ্যেই নয়, সারা বছরই খাদ্যতালিকায় খেজুর রাখুন।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭