লিভিং ইনসাইড

রোজা থেকে মুটিয়ে যাচ্ছেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/05/2019


Thumbnail

অনেকেই ভাবেন ওজন এতো বেড়ে যাচ্ছে, না খেয়ে থাকলেই বোধহয় ওজন নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে। কিন্তু সেটা কঠিন বিষয়। বিশেষ করে রোজার মাঝে স্থূল রোজাদারেরা মনে করেন এই একমাস সারাদিন না খেয়ে থাকলে অবশ্যই ওজন কমে যাবে। কিন্তু ফলাফল দেখলেন ভিন্ন। ওজন কমার বদলে আপনি বরং মুটিয়ে যাচ্ছেন। ভুড়ি বেড়ে যাচ্ছে, ওজনও বাড়ছে।

কেন বাড়ছে ওজন

এর কারণ তো অবশ্যই আছে। প্রধান কারণ খাওয়াদাওয়ায় ভারসাম্যহীনতা। আপনি সারাদিন না খেয়ে থেকে ভাবছেন সেই খাওয়াটা ইফতার, রাতের খাবার এবং সেহেরিতে পুষিয়ে দেবেন। অর্থাৎ এই খাবারগুলো জমপেশ হওয়া দরকার। পুষ্টিচাহিদার ভারসাম্য করতে গিয়ে একটু বেশি খেয়ে ফেলা হলে আপনার ওজন হুট করে বেড়ে যেতেই পারে।

আবার আমাদের ইফতারটা বিশেষ করে বেশি জমকালো হয়। তৈলাক্ত ধরনের খাবার, মাংশের বিভিন্ন আইটেম, মিষ্টিজাতীয় খাবারের ফলে আমাদের শরীর বেড়ে যেতে থাকে। শরীরে মেদ, চর্বি জমে। এই খাবারগুলো বছরে হয়তো ঘুরেফিরে খাওয়া হয়। কিন্তু রোজায় প্রতিদিন খেলে স্বাস্থ্য তো বাড়বেই। 

অনেকের রোজা এলেই ইফতার পার্টি, সেহেরি নাইটে দলবল নিয়ে একসঙ্গে খাওয়ার পশরা বসে যেন। এই দাওয়াত আর পার্টি রক্ষা করতে গিয়ে খাওয়াদাওয়া কোন ফাঁকে যে বেশি হয়ে যায় টেরও পাওয়া যায় না। তাই সেই ফাঁকে ওজনটাও বেড়ে যায়। সবার সঙ্গে খাওয়াদাওয়া করলে খাওয়ার পরিমাণটাও বেড়ে যায়, গবেষণাও সেটাই বলে।

ওজন বাড়ার পিছনে ঘুমেরও একটা অবদান রয়েছে। কারণ এই মাসটাতে আমাদের ঘুমে বেশ হেরফের হয়। হিসাব করলে দেখা যায় স্বাভাবিকের চেয়ে হয় কম বা বেশি ঘুম হয়ে যাচ্ছে। সেহেরিতে উঠতে হবে বিধায় তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হয়। আবার সারাদিন বিশ্রামের পরিমাণটাও বাড়ে ক্লান্তির জন্য। এতে করে শরীর আরাম পায়। ঘুম বেশি হয় বলে ওজন বাড়ে। আবার কম ঘুমালেও শরীর কখনো কখনো মুটিয়ে যায় অনেকের। সেক্ষেত্রে রোজায় অনেকের ঘুমই অনেক কম হয়। তাদের মোটা হওয়ার আশঙ্কা দেখা যায়।

এই পুরো মাসটাতে আমাদের শারীরিক পরিশ্রম তুলনামূলক কম হয়। কাজকর্ম, অফিস-আদালতের কাজ কম থাকে। দিনে কাজের পরিমাণ কমে। আর ইফতারে ভরপুর খাওয়ার পর বাকি সময়টা ঘুমের আগ পর্যন্তও বিশ্রামই নেয় সবাই। এই বিশ্রাম আর আরামে শরীর বেড়ে যেতে সময় লাগে না।

রোজায় কীভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন ওজন

পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করুন। ফলের জুস, লাচ্ছি ইত্যাদি খান ইফতারের পর। রোজার সময়ে শরীরকে আর্দ্র রাখা খুব জরুরি। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে। সেহরি ও ইফতারে খুব বেশি ঝাল ও মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না। প্রচুর সবজি ও ফল খান। পাশাপাশি প্রোটিনের চাহিদা পূরণে পাতলা মাংস খান। গরুর মাংস এড়িয়ে চলুন।

ইফতার ও সেহরিতে মিষ্টিজাতীয় খাবার খেতেই হয়। কিন্তু চেষ্টা করুন এই মিষ্টিজাতীয় খাবার এড়িয়ে যেতে। এর বদলে ফল, ফলের রস, খেজুর খান।

রোজা রেখে শুয়ে-বসে থাকবেন না। সারাদিন কর্মক্ষম থাকার চেষ্টা করুন। রোজা রাখলে খুব দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন। তাই হালকা ব্যায়াম করুন এই সময়। হাঁটা, সিট-আপস, স্কুয়াটস ইত্যাদি করতে পারেন। রোজা রাখার পাশাপাশি ব্যায়াম করলে এটি ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য আত্মনিয়ন্ত্রণ আগে দরকার। সামনে মজাদার খাবার দেখে লোভ সামলানো দায়। তবে ফিট থাকতে মনকে নিয়ন্ত্রণ তো করতেই হবে। ভারি খাবার এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া রোজায় ওজন কমাতে সাহায্য করবে।

যতোটুকু প্রয়োজন ততটুকুই ঘুমাবেন। ক্লান্ত হয়ে পড়লে অন্যকিছু করুন। বেশি ঘুমানো পরিহার করুন।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ

 

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭