ইনসাইড পলিটিক্স

তথ্যভাণ্ডারে থাকবে ১৮ তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/05/2019


Thumbnail

আগামী ২৩ জুন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ডাটাবেজ বা তথ্যভাণ্ডারের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার নিজস্ব তথ্যগুলো ডাটা এন্ট্রি করার মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া শুরু করবেন। আওয়ামী লীগ আশা করছে যে ডিসেম্বরের মধ্যে সারাদেশে আওয়ামী লীগের সমস্ত নেতাকর্মীদের তথ্য কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে যুক্ত হবে। এর ফলে একদিকে যেমন ভুয়া আওয়ামী লীগ সনাক্ত করা যাবে; অন্যদিকে দলের নেতৃত্ব, নির্বাচনের ক্ষেত্রে কার কি অবদান, দলের মধ্যে কে কতটুকু সক্রিয়, কারা কতদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন, কোথা থেকে আওয়ামী লীগে এসেছেন- এসব তথ্যগুলো যাচাই-বাছাই করে সহজেই নেতৃত্ব নির্বাচন করা যাবে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, যে সফটওয়্যারটি তৈরি করা হয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী যেই হোক না কেন তাকে সর্বমোট ১৮টি তথ্য উপস্থাপন করতে হবে। এই তথ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১. তার নাম এবং তার পিতামাতার নাম

২. তার বর্তমান এবং স্থায়ী ঠিকানা

৩. তার পেশাগত অবস্থান

৪. রাজনৈতিক পরিচিতি। তিনি কখন থেকে রাজনীতি করছেন, ছাত্রাবস্থায় রাজনীতি করেছেন নাকি পরিণত বয়সে রাজনীতি করেছেন- ইত্যাদি তথ্য থাকতে হবে।

৫. অতীতে অন্যকোনো রাজনৈতিক দল করেছেন কিনা। অন্য দল করে থাকলে কোন রাজনৈতিক দল করেছেন, কতদিন করেছেন, কেন নতুন দলে আসলেন- সেটার ব্যাখ্যা থাকতে হবে।

৬. ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের সময়ে তার ভূমিকা কি ছিল। তিনি যদি সেসময় জন্মগ্রহণ করে থাকেন, তার ভূমিকা লিপিবদ্ধ থাকতে হবে।

৭. ১৯৯১ সালে নির্বাচনের আগে এবং পরে তার ভূমিকা কি ছিল

৮. ২০০১ সালে তিনি কি কোনো ভূমিকা রেখেছিলেন কিনা

৯. ২০০৪ সালে গ্রেনেড হামলার সময়ে তার ভূমিকা কতটুকু ছিল

১০. ২০০৭ এর ওয়ান ইলেভেনের সময়ে তার ভূমিকা ছিল তা থাকতে হবে। অর্থাৎ, আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সংকটের সময়ে তার ভূমিকা সম্বলিত তথ্য থাকবে এই ডাটাবেজে।

১১. তার পরিবারের অন্য কেউ কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে কিনা, থাকলে কোন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছে, কি ধরনের দলীয় তৎপরতা রয়েছে।

১২. আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তিনি কোনো অঙ্গ, ভাতৃপ্রতিম বা সহযোগী সংগঠনের কোনো পদে ছিলেন কিনা বা সদস্য ছিলেন কিনা বা কি ধরনের সদস্য ছিলেন।

১৩. তার বিরুদ্ধে কোনো সন্ত্রাস, মাদক বা অন্যকোনো অপরাধমূলক তৎপরতার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কোনো মামলা রয়েছে কিনা বা কোনো মামলায় তিনি দণ্ডিত হয়েছেন কিনা।

১৪. তার বিরুদ্ধে কোনো টেন্ডার, তহবিল তসরুপ বা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে কিনা, অভিযোগ উঠলে সেটা বিষয়ে কি সুরাহা হয়েছে সেটা উল্লেখ থাকতে হবে।

১৫. তিনি আওয়ামী লীগ থেকে স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ/উপজেলা/সংসদ সদস্য/জেলা পরিষদ বা অন্য কোনো জনপ্রতিনিধিত্বমূলক নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হয়েছিলেন কিনা, প্রার্থী হলে কতবার হয়েছিলেন, তার ফলাফল কি

১৬. তিনি কখনো বিদেশে অবস্থান করেছেন কিনা, যদি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে থাকেন, সেই দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে থাকেন, কেন তিনি বিদেশ থেকে ফিরলেন- সেই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য থাকতে হবে।

১৭. আওয়ামী লীগের জন্য তার কোনো বিশেষ অবদান আছে কিনা, দলের কোন বিষয়গুলোতে তিনি কাজ করেছেন, তার কোন বিষয়ে দক্ষতা রয়েছে- সেগুলো উল্লেখ থাকতে হবে।

১৮. সর্বশেষ বিষয়টি হলো আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্র এবং দলের নিয়মনীতি মেনে চলা সংক্রান্ত একটি অঙ্গীকারপত্রে তাকে স্বাক্ষর করতে হবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানাচ্ছে যে, আওয়ামী লীগের প্রতিটি সদস্যের একটি করে সদস্য সংখ্যা থাকবে। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য ১ নম্বর সদস্যপদটি খালি রেখে পর্যায়ক্রমে আওয়ামী লীগের বাকি সদস্যদের তালিকা থাকবে। অন্য একটি সূত্র বলছে যে, শুধুমাত্র জীবিতদের সদস্যপদ থাকবে। সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা একনম্বর সদস্য হিসেবে থাকবেন। অন্যদেরকে পর্যায়ক্রমিকভাবে তালিকায় রাখা হবে। এর ফলে সুবিধা হবে যে, আওয়ামী লীগের কর্মীরা যখনই কোনো সমস্যায় পড়বেন বা কোনো কর্মীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ উঠবে, তাৎক্ষণিকভাবে এই তথ্যভাণ্ডার থেকে তথ্য নেওয়া যাবে। ফলে আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্ম করে, তাদেরকে চিহ্নিত করা সহজ হবে। আওয়ামী লীগের ভেতরে যদি কেউ দলের স্বার্থবিরোধী বা দলের বদনাম হয় এমন কোনো কাজ করেন তাহলে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও সহজ হবে বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল আলম হানিফ বলেছেন, ২০২০ সাল নাগাদ আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মীর হাতে একটি করে পরিচয়পত্র থাকবে। আওয়ামী লীগের প্রতিটি কর্মীর তথ্য এই তথ্যভাণ্ডারে অন্তর্ভূক্ত থাকবে।

 

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭