লিভিং ইনসাইড

ক্লান্তি দূর করুন চা-কফি ছাড়াই

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/05/2019


Thumbnail

কিছু ভালো লাগছে না, অফিসে বসেও শুধু ঘুম পাচ্ছে, কাজ করতে একদম ভালো লাগছে না। এসময়ে নিশ্চয়ই আপনি হাতে এককাপ চা বা কফি নিয়ে বসবেন। খালি বা ভরাপেটে এই চা কফি যে কতো ক্ষতি করে বসতে পারে, তা আপনি ভাবতেও পারবেন না। ক্যাফেইনের উপর অতিমাত্রায় নির্ভরশীল হলে শরীরে নানা বিরূপ প্রতিক্রিয়া, রাতে নিদ্রাহীনতা ইত্যাদি দেখা যায়। ক্যাফেইন আপনাকে আসক্ত করে দেওয়ার আগে আপনি ক্যাফেইনকে ছাড়তে শুরু করুন। কিছু প্রাকৃতিক উপায়েই আপনি চা বা কফিকে এড়িয়ে চলতে পারেন।

চোখ সরান কম্পিউটার স্ক্রিন থেকে

আমাদের অনেকটা সময় কাটে কম্পিউটারের স্ক্রিনে তাকিয়ে থেকে। অনেকক্ষণ ধরে কম্পিউটারে কাজ করার পর ঝিমুনি মতো হওয়া এবং কাঁধ ও ঘাড় ব্যথা হয়। চোখ খোলা রাখাই দায় হয়ে যায়, চোখে কেমন শুষ্কভাব আসে। এটাকে বলে ‘Digital Eye Strain’। টানা কম্পিউটার বা মোবাইল স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখে ক্ষতি করে। তাই ঘন ঘন চোখের পাতা ফেলুন এবং একটু ঘুরে ফিরে বসুন এবং মিনিট ২০ পর পর দূরের কোনো স্থান বা বস্তুর দিকে তাকান। পারলে সবুজ প্রকৃতির দিকে তাকান। চোখের দৃষ্টি প্রশান্তি পাবে।

প্রয়োজন স্বাস্থ্যকর খাবারের

রক্তে শর্করার পরিমাণ কমে গেলে কিছুটা শারীরিক ও মানসিক অলসতা চলে আসে। আবার খুব বেশি খেলেও এই সমস্যা হয়। গবেষণা মতে, নিয়মিত পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ খাবার আমাদের চাঙা করে। বিশেষত সকালে আশঁযুক্ত খাবার খাওয়া ভালো। এছাড়াও উচ্চমাত্রার প্রোটিন যেমন- ডিম, পিনাট বাটার, মটরশুঁটি, মসুর এবং ভিটামিন ‘সি’ও অপরিহার্য। এগুলো সারাদিন আপনাকে ক্লান্ত হতে দেবে না।

পর্যাপ্ত পানি পান করতেই হবে

গবেষণা মতে, শরীর থেকে ১-২% পানি হ্রাস পেলেও অবসাদের সৃষ্টি করে। এর বেশি পরিমাণে হলে তো আর কথাই থাকে না, অবসাদে মাথা তোলাই দায় হয়ে যাবে। শরীরের রক্ত পানি ব্যবহার করে অক্সিজেন ও শর্করা শরীরের বিভিন্ন অংশে বহন করে। ফলে শরীরে পানিস্বল্পতা হলেই অবসাদ, দ্বিধা, বুক ধড়ফড় করা, জ্ঞান হারানো ইত্যাদি উপসর্গ দেখা দেয়। ফলে পর্যাপ্ত পানি পান করুন, চা-কফি এড়িয়ে চলুন।

একটু বেরিয়ে আসুন

কাজের টেবিলে বসে খুব ঝিমুনি আসে আপনার। দুই-তিনকাপ চা বা কফি খেয়েও কোনো লাভ হয় না। তখন আর বসে না থেকে কিছুক্ষণের জন্যে বেরিয়ে পড়ুন, আলো হাওয়ার স্বাদ নিন। ক্ষণিকের জন্যে সূর্যের আলোয় যাওয়া আপনার ঝিমুনি ভাব দূর করে দিতে পারে নিমেষেই। হাঁটাহাঁটি করলে শরীররটাও একটু রিল্যাক্স হয়। আর সূর্যের আলো মস্তিষ্কের ‘হাইপোথ্যালামাস’কে ভালোভাবে চালিত করে। এটি শরীরকে একটা ছন্দে বেঁধে রাখে। এই ছন্দই ঘুম ও জেগে ওঠা নিয়ন্ত্রণ করে। অসময়ে ঘুম ঘুম ভাব হলে কিছুক্ষণের জন্যে বেরিয়ে পড়ুন, সূর্যের আলো উপভোগ করুন।

দ্রুত হাঁটাচলা করুন কিছুক্ষণ

অফিসের টেবিলে ভালো না লাগলে কিছুক্ষণের জন্য অফিসের মধ্যেই কোথাও হেঁটেচলে সবার সঙ্গে কথাবার্তা বলে আসুন। সেটা পাঁচ মিনিটের জন্যে হলেও। ঘুম ঘুম ভাবের মুহূর্তে শারীরিক ব্যায়াম করলে অবসাদ কিছু পরিমাণে প্রশমিত হয়ে যায়। আপনি ব্যায়াম করতে না পারলে দ্রুত পায়ে কিছুক্ষণ হেঁটে নিন। হাঁটলে মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের হরমোন প্রবাহ বেড়ে যায়। মস্তিস্ক চাপমুক্ত হয়ে অবসাদ দূর হয়ে শরীর ফুরফুরে হয়ে ওঠে।

গভীর শ্বাস নিন

শান্তিতে বা স্বচ্ছন্দে না থাকলে কোনো কাজে শান্তি নেই। চুপচাপ বসে আগে নিজে শান্ত হন। দীর্ঘশ্বাস নিন, এতে একধরনের সজীবতা চলে আসে। শান্ত হয়ে দীর্ঘশ্বাস নিলে শরীর অতিরিক্ত অক্সিজেন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বহন করে শরীরে শক্তি এনে দেয়। দীর্ঘশ্বাস নিণে চাপ ও উদ্বেগও কমে। এই সুফল পেতে সঠিকভাবে শ্বাস নেওয়ার পদ্ধতিগুলো আগে জানুন।

গান শুনবেন বা করবেন

নিজের প্রিয় গান শোনা বা গলা ছেড়ে গাওয়ার মধ্যে আনন্দবোধ চলে আসে। কাজের মধ্যে হালকা সাউন্ডে গান শুনে দেখুন, আপনি কোথায় যেন হারিয়ে যাবেন। সুখ-দুঃখের স্মৃতি মনে পড়বে আপনার। মস্তিষ্কে কিছু রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটবে যা ভালোলাগার অনুভূতির মাধ্যমে চাঙা করে তুলবে। পছন্দের গান শোনা আপনার মস্তিষ্কে ‘ডোপামিন’ রাসায়নিক সরবরাহ করে। ফলে শরীর হালকা লাগবে। তাই ঘুমঘুম ভাব হলে অন্তত একটি পছন্দের গান শুনুন।

চুইংগাম চিবাতে থাকুন

ঝিমঝিম ভাব ধরলে মুখটা চালু রাখতে হবে। এটি মনকে কর্মতৎপ করে রাখবে। দিনের বেলায় ঘুম কাটানোর জন্যে চুইংগাম চিবানো খুবই কার্যকর উপায়। কারণ চিবানোর জন্যে ক্রমাগত চোয়াল নাড়ানোর ফলে রক্তসঞ্চালন ঘটে, যা মস্তিষ্কের কিছু অংশকে সচেতন রাখে।

পারলে একটু ঘুমিয়ে নিন

ঝিমুনি থেকে বাঁচতে ঘুমিয়ে নেওয়া যেতে পারে। তবে বেশি সময় না, মাত্র ৫ থেকে ২০ মিনিটের অল্পনিদ্রাই যথেষ্ট। এটা শরীরকে যথেষ্ট চাঙা করে তুলতে পারে। একে বলা হয় ‘পাওয়ার ন্যাপ’। টানা অনেকক্ষণ ঘুমানোর থেকে ক্লান্তির সময় মাত্র ৫-১০ মিনিট ঘুমিয়ে নেওয়া অনেক বেশি কার্যকর, এটি স্মৃতি সংরক্ষণ ক্ষমতা বাড়ায় এবং সৃজনশীল চিন্তা করতে সাহায্য করে। তাই সবথেকে ভালো উপায় হলো ৫/৬ মিনিটের একটা স্বল্পনিদ্রা দিয়ে ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলা।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭