ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

লোকসভা নির্বাচনের ১০ বোমা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/05/2019


Thumbnail

বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ভারতে দীর্ঘ ভোট গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষে এবার ফলাফলের পালা। ২ মাস ১০দিন ধরে চলা লোকসভা নির্বাচনে ঘটে গেছে অবাক করা নানা ঘটনা। এখানে সেরকমই ১০ টি ঘটনা তুলে ধরা হলো- 

শিবসেনায় প্রিয়াঙ্কা, শত্রুঘ্ন কংগ্রেসে

এবারের নির্বাচনের শুরু থেকেই দল বদলের খেলা চলছিল। প্রায় সব দলের স্থানীয় পর্যায়ের অনেক নেতা নিজেদের পুরোনো দল ছেড়ে শত্রু শিবিরে যোগ দিয়েছেন। তবে সবচেয়ে বড় বোমাটা ফাটিয়েছেন দুই দলের দুই হেভিওয়েট। বিজেপির বহু পুরোনো সেনা শত্রুঘ্ন সিনহা মোদির বিরুদ্ধে ক্ষোভ ঝেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। অন্যদিকে কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র প্রিয়াঙ্কা চতুর্বেদী ভোট শুরুর কয়েকদিন পরই নিজের দল ছেড়ে শিবসেনা শিবিরে চলে যান। 

ওয়ানাদে রাহুল

এবারের নির্বাচনে কংগ্রেস সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধি প্রার্থী হবেন কিনা তা নিয়ে চলছিল নানা জল্পনা কল্পনা। শেষ পর্যন্ত তিনি প্রার্থী হয়ে চমক দেখাতে পারেননি। কিন্তু তার ভাই রাহুল গান্ধি কেরালার ওয়ানাদে প্রার্থীতা করে রীতিমতো বোমা ফাটিয়েছেন। নিজের আসন আমেথির বাইরে দ্বিতীয় আসন হিসেবে ওয়ানাদকে বেছে নিয়ে বিজেপির বুকে কাঁপনও ধরিয়েছেন তিনি।

৪০ তৃণমূল নেতাকে টেনে নিতে মোদির হুংকার

লোকসভা নির্বাচনের মাঝপথেই মোদি দাবি করেছিলেন যে, পশ্চিমবঙ্গের ৪০ জন তৃণমূল নেতা বিজেপিতে নাম লেখাতে যাচ্ছেন। কোন কোন নেতা বিজেপিতে যাচ্ছেন তা নিয়ে তৃণমূলের মধ্যে সন্দেহ আর অবিশ্বাসও ছড়িয়ে পড়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত মোদির দাবি ফাঁকা বুলিতেই পরিনত হয়েছে।

কেজরিওয়ালকে থাপ্পড়

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বহুবারই হামলার শিকার হয়েছেন আম আদমি পার্টির অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মরিচের গুড়া, ডিম, কালি এমনকি জুতাও ছুড়ে মারা হয়েছে তাকে। তবে এবার ভোটের মাঝপথে যেটা ঘটেছে তা একটু অবাক করা ব্যাপারই বটে। অন্য কোনো দল নয়, বরং তার নিজের দলের এক কর্মীই চড় দিয়েছেন তাকে। তাও আবার যে-সে জায়গায় নয়, একেবারে কেজরিওয়ালের গাড়িতে উঠে গিয়ে তার গাল টার্গেট করেছিলেন ওই কর্মী।

‘চৌকিদার’ মামলায় নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা রাহুলের

ভুলভাবে ‘চৌকিদার চোর’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহারের জন্য সুপ্রিম কোর্টের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে হয় ভারতের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রেসিডেন্ট রাহুল গান্ধিকে। ষষ্ঠদফা ভোটের মাত্র তিনদিন আগে আদালতে তিন পৃষ্ঠার একটি হলফনামা পেশ করে নিজের দোষ স্বীকার করে নেন রাহুল।

বাবুল সুপ্রিয়র গাড়ি ভাঙচুর; মুনমুনের বেড টি

চতুর্থ দফা ভোটের দিন কলকাতার আসানসোলের বিজেপি প্রার্থী কণ্ঠশিল্পী বাবুল সুপ্রিয়র ওপর হামলা হয়, তার গাড়িও ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। প্রতিপক্ষ তৃণমূলের কর্মীরাই এটা করেছে বলে দাবি করেন বাবুল। এ বিষয়ে বাবুলের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেনের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, সকালে বেড টি পেতে দেরি হওয়ায় তিনি দুপুরে ঘুম থেকে উঠেছেন। এ কারণে বাবুলের ওপর হামলার বিষয়ে কিছুই তিনি জানেন না। মুনমুনের বেড টি নিয়ে তখন ব্যাপক হাস্যরসের সৃষ্টি হয়।

আটকে গেল মোদির বায়োপিক-ওয়েব সিরিজ, বিজেপির গান

নির্বাচনী বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আটকে দেওয়া হয় মোদির জীবনী নিয়ে নির্মিত ছবি `পিএম নরেন্দ্র মোদি`। এই একই অভিযোগে আটকে দেওয়া হয় কোদির জীবনীভিত্তিক ওয়েব সিরিজ `মোদি:জার্নি অফ আ কমন ম্যান`। এছাড়া প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে বিজেপির একটি প্রচারণা সঙ্গীতও বাতিল করা হয়।

বিদ্যাসাগর নিয়ে মিথ্যাসাগর

শেষ দফার নির্বাচনের আগে কলকাতায় বিদ্যাসাগর কলেজে ঢুকে ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের ভাস্কর্য ভাঙচুর করা হয়। বিজেপির সমর্থকরাই এটা করেছে বলে অভিযোগ। তবে তারা এটা অস্বীকার করেছে। সবচেয়ে মজার ঘটনাটা ঘটে তখন যখন কিনা শত শত ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বিবৃতি দেওয়া হয় যে, তারা বিদ্যাসাগর কলেজের প্রাক্তন ছাত্র এবং কলেজ চত্বরের আশেপাশের বাসিন্দা। দাঁড়ি-কমা-সেমিকোলন, এমনকি বানান ভুলও একরকম রেখে তারা জানান ‘বিদ্যাসাগরের মূর্তি ভাঙচুরের সময় তারা প্রত্যেকেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। বিজেপি কর্মীরা এর সঙ্গে জড়িত নন।’ কিন্তু বিদ্যাসাগর নিয়ে যে এই অ্যাকাউন্টগুলো থেকে মিথ্যাসাগর বানানো হয়েছে তা বুঝতে আর কারোরই বাকি থাকে না।

গোডসে’তে গণ্ডগোল

নির্বাচনের শেষের দিকে এসে নাথুরাম গোডসে নিয়ে টালমাটাল হয়ে পড়ে ভারত। দক্ষিনী সুপারস্টার ও রাজনীতিবিদ কমল হাসান দাবি করেন গান্ধির হত্যাকারী নাথরাম গোডসেই ভারতের প্রথম জঙ্গি। অন্যদিকে ভোপালের বিজেপি প্রার্থী সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেন, গোডসে দেশপ্রেমিক। এ নিয়ে বিজেপির অনেক নেতারাও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন যে, তিনি প্রজ্ঞাকে কখনও ক্ষমা করবেন না।

বুথ ফেরত জরিপ ফাঁস

লোকসভা নির্বাচনের সর্বশেষ বোমাটা ফাটায় ইন্ডিয়া টুডে। ভারতীয় নির্বাচনী আচরণবিধি অনুসারে, লোকসভার নির্বাচন শেষ হওয়ার আগে বুথ ফেরত কোনো  জরিপ প্রকাশ করা আইনের লঙ্ঘন। কিন্তু শেষ দফা ভোটের আগেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে  ইন্ডিয়া টুডের বুথ ফেরত জরিপের ফলাফল ছড়িয়ে পড়ে। ফাঁস হওয়া সমীক্ষায় মোদির বিজেপির ভরাডুবির ইঙ্গিত পাওয়া যায়। কিন্তু ওই সমীক্ষা যে মিথ্যা ছিল তা বুঝতে খুব বেশি সময় লাগে নি। গতকাল নির্বাচন শেষেই ইন্ডিয়া টুডে তাদের আসল সমীক্ষার ফল প্রকাশ করে। সেখানে বিজেপির বিপুল জয়েরই আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭