নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 05/06/2019
অনেক চেষ্টা করে ঈদে ছুটি মিললো না বর্ণ’র। খুব মন খারাপ হচ্ছে। বাড়িতে কীভাবে জানাবে যে সবার সঙ্গে ঈদ করতে যেতে পারছে না সে! সবাই শেষপর্যন্ত আশা করে ছিল ঈদের আগেরদিন হলেও বর্ণ বাড়িতে যাবে। কিন্তু না, যেতে পারলো না। কি আর করা, ব্যস্ত শহরে ব্যস্ততা নিয়েই কাটিয়ে দেবে ঈদ।
ঈদ নাকি সবার জীবনে আনন্দ নিয়ে আসে। সেটা তো সত্যিই। ঈদের ছুটিতে ব্যস্ত শহর ছেড়ে বাড়িতে যাবো, মায়ের হাতের রান্না খাবো, বাবার সঙ্গে কত গল্প করবো, ভাইবোন-স্বজনদের সঙ্গে কত খুনসুটি হবে- এই আনন্দের কোনো ব্যাখ্যাই হয় না। আর তাই তো নাড়ির টানে দুইদিন ছুটি পেলেও হাজারো ঝক্কি সামলে বাড়ি আমাদের যেতেই হবে। কিন্তু বাস্তবতা যথেষ্ট কঠিন। এই কঠিন বাস্তবতা অনেককিছু থেকেই বঞ্চিত করে আমাদের। এই ঈদেও পেশাগত কারণে ছুটি পায় না অনেকে। তাদের ঈদ কাটে একাকী আর বিষণ্নতায়।
সাংবাদিক, ডাক্তার, পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সেবামূলক প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের কল্যাণার্থেই ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যেতে পারে না। তাই বলে ঈদের আনন্দকে তো মাটি হতে দেওয়া যাবে না। আপনার পেশাগত জায়গাটি ঠিক রেখে যতটুকু পারেন আনন্দে ঈদ কাটাতে হবে আপনাকে।
আপনি বাড়িতে না গেলে বাড়ির লোকগুলো মন খারাপ করবে খুব। তবে তাদের বোঝাতে হবে। আপনার জন্য তাদের ঈদ আনন্দ যাতে মাটি না হয় সেই চেষ্টা করবেন। ঈদের সাজগোজ করেই তাদের প্রথমে ফোন দিন। সারাদিনে বার বার ফোনে যোগাযোগ করবেন। এখন তো ইন্টারনেট সারাদেশে, ভিডিও কল করুন। কি খাচ্ছেন, কোখায় যাচ্ছেন তার খোঁজ দিন, তাদের খোঁজ নিন।
আপনি ছুটি পাননি তো কি হয়েছে। আপনি তো চাইলে প্লানটা অন্যভাবেও করতে পারেন। এই ধরুন তাদের যদি কোনোভাবে আপনার কাছে নিয়ে আসতে পারেন। সেটা দুইদিনের জন্য হলেও। সেজন্য কাছে থাকা আত্মীয়দের সাহায্যও নিতে পারেন। এই শহরের ঈদ কেমন হয় সেটাও তারা দেখলো। আপনারও তাদেরকে ফেলে ঈদ করতে হলো না।
সবার জন্য নিশ্চয়ই সাধ্যমত কেনাকাটা করে ফেলেছেন। পরে বাড়িতে যাবেন বা অন্যকারো হাতে পাঠিয়ে দেবো বলে গড়িমসি করবেন না। যেভাবেই হোক, কুরিয়ারে কিংবা কেউ বাড়িতে গেলে তার হাতে কেনাকাটা করে পাঠিয়ে দিন। ঈদ উপহার যেন যথাসময়ে প্রিয়জনদের হাতে পৌঁছে। আপনি যেতে না পারেন, আপনার জিনিসগুলো অন্তত তাদের হাতে পৌঁছাক সেই চেষ্টা রাখবেন।
আপনার মতো কিছু সহকর্মী কিংবা বন্ধুসমাজও ঈদের ছুটি পাবে না। ঈদটা তাদের সঙ্গেই আনন্দময় করে তুলতে পারেন। সকালে ঈদের সাজেই অফিসে বা কর্মস্থলে চলে গেলেন। সেখানে রান্নাবান্নার আয়োজন করুন সবাই মিলে। সেখানেই ঈদের আমেজে খাওয়াদাওয়া করুন। কাজ শেষে একসঙ্গে বের হন সবাই। যার পরিবার শহরে রয়েছে, তাদের বাড়িতে একজোট হোন সবাই। গল্পে, আড্ডায় সময়টা কাটিয়ে দিন। পরিবারকে কাছে না পাওয়ার কষ্ট অনেকটাই কমে যাবে।
রাতে ঈদের বিশেষ পার্টি বা হ্যাংআউটের ব্যবস্থা করতে পারেন। নাইট ডিউটি থাকলে দিনটাকে কাজে লাগান। আর দিনের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে গেলে রাতটা তো পুরোই আপনার হাতে। যে আত্মীয়রা শহরে থাকছে, তাদের বাড়িতে চলে যান।
আপনার যদি নিজের বাসা থাকে সেখানে ছুটি না পাওয়া সহকর্মী বা বন্ধুদের ডেকে নিন। রান্নাবান্না করে, গানের আসর বসিয়ে, টিভিতে ঈদের অনুষ্ঠানাদি দেখে দারুণ সময় কাটিয়ে দিতে পারেন। এতে করে প্রিয়জনদের কাছে না পাওয়ার দুঃখ অনেকটাই কমে যাবে।
ঈদের পর ছুটি কাটিয়ে আপনার সহকর্মীরা ফিরে আসবে। তখন আপনি ঈদের ছুটিটা কাটিয়ে ফেলতে পারেন। কর্তৃপক্ষকে বললে হয়তো আপনাকে ছুটির ব্যবস্থা করে দেবে। তখন ঘুরে আসুন বাড়ি থেকে, মায়ের হাতের মজার খাবার খেয়ে আসুন, আনন্দ করে আসুন সবার সঙ্গে।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭