লিভিং ইনসাইড

অফিসের শুরুতেই আপনার যা করণীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/06/2019


Thumbnail

অ্যালার্ম বাজার একঘণ্টা পর ঘুম ভেঙে দেখলেন, সর্বনাশ! অফিস টাইম হয়ে গেছে। কোনোরকমে রেডি হয়ে চলে গেলেন আধাঘণ্টা দেরিতে। গিয়েই শুনলেন বস খুঁজেছে আপনাকে। আপনার আত্মা শুকিয়ে গেলো। এই স্ট্রেস কাটাতে খালিপেটেই এককাপ কফি নিয়ে বসে পড়লেন। এদিকে কিছুক্ষণ পরেই মিটিং, কিছু কাজও বাকি আছে। কারো সঙ্গে কথা বলতেও ভালো লাগছে না, অফিস থমথমে হয়ে আছে কেন বুঝতে পারছেন না। সারাটা দিন গেলো এমন অস্বস্তি নিয়ে। এজন্য দায়ী করবেন কাকে? অবশ্যই আপনিই দায়ী।

অফিসের শুরুতেই এমন কিছু বিশৃঙ্খলা আপনার সারাদিনটা নষ্ট করে দিতে পারে। তাই আপনার করণীয়গুলো জেনে নিন-

কখনো দেরিতে পৌঁছাবেন না

আমাদের অনেকেরই অফিসের সঠিক সময় ধরতে দেরি হয়ে যায়। আপনি তো জানেনই অফিসে দেরি করে ঢুকলে আপনার বেতন কাটতে পারে, বস আপনাকে সময়মতো খুঁজে না পেয়ে রাগারাগি করতে পারে। আপনি নার্ভাস হয়ে টেনশন করতে করতে অফিসে ঢুকে কোনো কাজেও গতি পাবেন না আপনি। বস আপনাকে শোকজ করতে পারে, খুব বেশিদিন দেরি হলে আপনাকে স্যাকও করতে পারে। সবার কাছে আপনার ইমেজটাও খারাপ হয়ে যেতে পারে। তাই যত দ্রুত সম্ভব অফিসে পৌঁছানোর চেষ্টা করবেন।

সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ইজি হয়ে নিন

আপনি যেয়েই কাজে দিয়ে দিতে পারবেন না।  নিজের এবং আশেপাশের সবার জন্য কমর্ময় পরিবেশ তৈরি করার দায়িত্বটা কিন্তু আপনারও। তাই কয়েক মিনিটের জন্য হলেও সহকর্মীদের সঙ্গে সামান্য আলোচনা করে নিন।  শুরুতে সবার সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করুন, হাই হ্যালো করুন, শরীর কেমন জিজ্ঞেস করুন, খেলা দেখলেন কিনা, কোথাও বের হয়েছিলেন কিনা- এগুলো টুকটাক কথা বলে নিতেই পারেন। এতে সহকর্মীরাও সহজ হলো, আপনি উদ্যম নিয়ে কাজ শুরু করতে পারবেন।

গিয়েই চা বা কফি নিয়ে বসবেন না

আগে সকালের নাস্তা নিয়ে ভাবুন। সকালে খেয়ে বের হলে সঙ্গে চা বা কফিটাও খেয়ে নিতে পারেন। তবে গবেষণা বলে, চা বা কফি একেবারে সকালে না খেয়ে একটু বেলা হলে খেয়ে নেওয়া ভালো। প্রথমে অফিসে গিয়ে কিছুটা চাঙা হোন। বস বা সহকর্মীদের খোঁজখবর নিয়ে তারপর কাজে বসবেন। এরপরে কিছু খেয়ে না বের হলে ব্রেকফাস্ট অফিসেই করে নিন। সেটা হজম হতে লাগলই তারপর চা বা কফি নিয়ে বসুন। পুরো উদ্যম নিয়ে এবার কাজে মন বসান। কারণ হুট করে ক্যাফেইন শরীরে গেলে শরীরও বিগড়ে যেতে পারে।

ইনবক্স খুলে মেসেজ, ই-মেইলের উত্তর দেওয়া

আপনি কাজে সক্রিয় থাকতে হলে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে যোগাযোগটা ঠিক রাখতে হবে। গতকাল অফিস থেকে ফিরে বাসায় গিয়ে হয়ত ঠিকমতো ইনবক্স বা মেইল চেক হয়নি। চেক করলেও তার উত্তর দেওয়া বা পাঠানো বার্তা অনুযায়ী কাজটাও শেষ করতে পারেননি। অফিসে গিয়ে কাজে জড়িয়ে যাওয়ার আগেই সেগুলো ভালোভাবে চেক করুন, সেগুলোর উত্তর দিন, কাজ সেরে ফেলুন, ফিডব্যাক নিন সবসময়। আপনার কিছু জানার থাকলে সেটাও জিজ্ঞেস করে নিন।

কাজের সময়সূচি তৈরি না করে কাজ শুরু করবেন না

কাজে উদ্যোগী হওয়ার আগে আপনাকে অবশ্যই দিনের কাজের পূর্ব পরিকল্পনা করতে হবে, কাজ কীভাবে শুরু হবে এবং দিনের বিশেষ বিশেষ কাজগুলো কি কি সেগুলো লিখে রাখতে হবে। বেবৈ দেখতে হবে যে ওই দিনে আপনি কি কি কাজ করবেন বলে ঠিক করেছেন এবং তার জন্য আপনাকে কোনো কল বা কনফারেন্স এর প্রস্তুতি নিতে হবে কি না। নাহলে হুট করে যখন মিটিং বা কনফারেন্সে আপনাকে কল করা হলে দিশেহারা হয়ে পড়তে পারেন আপনি।

সহজ না কঠিন কাজ করবেন তা ভাবুন

গবেষণা মতে, আপনার কর্মশক্তি ও ইচ্ছাশক্তিই আপনার সবদিনের কাজ করতে সাহায্য করে। এজন্য আপনার গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব করার চেষ্টা করতে হবে। হেলাফেলায় সহজ আর কম জরুরি কাজগুলো আগে করে সময় অনেকটা পার করলেন। তারপর দেখলেন হাতে কত কাজ পড়ে আছে, আবার কঠিন কাজও জমে আছে। কিন্তু হাতে সময় অনেক কম। কি করবেন বুঝে পেলেন না। সবচেয়ে ভালো হয় অফিসে গিয়ে কিছুটা চাঙা হয়ে কঠিন কাজগুলো ধীরে ধীরে সেরে ফেলতে। দেখবেন মাথায় কোনো চাপ থাকবে না। এরপর ধীরেসুস্থে বাকি কাজ করবেন।

অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করবেন না

যেহেতু দিনের শুরুতে আমাদের কর্মশক্তি বেশি থাকে তাই অনেকেই মনে করে এ সময় সে অনেক কাজ একসঙ্গে করতে পারবে। কিন্তু গবেষণা বলে অন্য কথা।  অনেকগুলো কাজ একসঙ্গে করতে গেলে কর্মক্ষমতা কমে যেতে পারে। তাই এক সময়ে মাত্র একটি কাজই করতে হবে। একগাদা কাজ দিয়ে দিন শুরু করলে সবটাতেই আপনি গুবলেট পাকিয়ে ফেলতে পারেন। তাই প্রতিটি কাজ আলাদাভাবে শুরু করুন। তাতে শুরু থেকেই পুরোপুরি মনোযোগ দিতে পারবেন।

ব্যক্তিগত সমস্যা অফিসে নয়

ব্যক্তিগত সমস্যা তো আপনার হতেই পারে। গতরাতে বা সকালে কোনো ঝামেলার নেতিবাচক প্রভাব আপনার মনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই থাকবে। ধরুন অফিসেই কোনো ঝামেলা হয়েছে, বাড়িতেও কোনো সমস্যা হয়েছে। তার রেশ থাকলেও অফিসে এসে সেটা প্রকাশ করতে যাবেন না।  আপনার বর্তমান কাজের ওপর তার কোনো প্রভাব পড়তে দিলে চলবে না। কাজের সময় ব্যক্তিগত বিষয়কে দূরে রাখতে। এসবের প্রভাব অফিসের কাজের ওপর পড়তে দেওয়া যাবে না। ফুরফুরে হয়ে ঢুকুন আর কাজে মন দিন।

শুরুতেই কোনো মিটিং বা বৈঠক না

সকালে অফিসে আসার পর আপনার ঘুম ঘুম ভাব থাকে, ঢিলেঢালাভাবে আপনি কাজ করেন। এসময়ে আপনার মনে আইডিয়া বা যুক্তিগুলো কমই আসে। তাই আপনার মিটিংগুলো দুপুরের আগে বা পরে বেছে নিন। তাহলে সারাদিনের কাজের ফলাফল আর উদ্যম নিয়ে সবার সামেন নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবেন।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭