ইনসাইড গ্রাউন্ড

বিশ্বকাপে রিজার্ভ ডে নেই কেন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/06/2019


Thumbnail

‘মানুষকে চাঁদে পাঠাতে পারলে বিশ্বকাপে রিজার্ভ ডে রাখা যাবে না কেন!’ এমন আক্ষেপ বাংলাদেশ দলের কোচ স্টিভ রোডসের। তবে আক্ষেপ হওয়াটা স্বাভাবিক। ক্রিকেটপ্রেমীদেরও আক্ষেপ রয়ে যায় নিজ দলের খেলা উপভোগ না করতে পেরে। স্বাভাবিক ভাবে খেলে পয়েন্ট নেওয়ার জায়গায় না খেলে পয়েন্ট পাওয়া অনেকটা ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতো। বৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত পরিত্যক্ত হয়েছে বিশ্বকাপের তিনটি ম্যাচ। এই যাত্রায় শেষ নয়। গ্রুপ পর্বের আরও বেশ কিছু ম্যাচের দিন আছে বৃষ্টির সম্ভাবনা। তাহলে স্বভাবত প্রশ্ন জাগে বিশ্বকাপের মতো এতো বড়ো আসরে রিজার্ভ ডে নেই কেন? ইংল্যান্ডের আবহাওয়া সম্পর্কে আয়োজকদের ধারণা ছিল না? শুধু কেন সেমিফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে? গ্রুও পর্বের জন্য কেন নয়। প্রশ্ন থেকেই যায়।

গতকাল বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ কোচ স্টিভ রোডস আক্ষেপ করেন। রোডসের মতো আক্ষেপ আছে সমর্থকদেরও। এত অভিযোগের জবাবে আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভিড রিচার্ডসন জানালেন, বিশ্বকাপের দৈর্ঘ্য যেন বেশি লম্বা না হয় এজন্যই রাখা হয়নি রিজার্ভ ডে।  

তাহলে ব্যাপারটা কি এমন, যে শুধুমাত্র ২০১৯ সালে এসেই বিশ্বকাপের দৈর্ঘ্য যেন বেশি লম্বা না হয় সেই বিষয়ে নজর দেওয়া হয়েছে। নাকি বিষয়টা শুধুই খামখেয়ালীপনা। কেননা ১৯৯৯ সালে শেষবার যখন ইংল্যান্ডে বিশ্বকাপ হয়, সেবার ছিল রিজার্ভ ডে। তবে কেন এই ২০১৯ সালে নেই? এইটা কি আয়োজকদের উদাসীনতা? নাকি তাদের মাথায় খেলা করেছে ভিন্ন প্ল্যান। শুধু ১৯৯৯ কেন ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্বকাপেও ছিল এই নিয়ম। পরিসংখ্যান বলছে, বৃষ্টির কারণে এর আগে কোন বিশ্বকাপই এতটা `ক্ষতির` মুখে পড়েনি। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে, যা এক বিশ্বকাপে এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এর আগে ১৯৯২ ও ২০০৩ সালে দুটি করে ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছিল।   

প্রশ্ন থেকে যায় ইংল্যান্ডে বৃষ্টির পূর্বাভাস আগে থেকেই ছিল তবে কেন আইসিসি রিজার্ভ ডে রাখেনি? আইসিসির জবাবও বাঁকা কথা, ‘রিজার্ভ ডেতে যে বৃষ্টি হবে না, তার নিশ্চয়তা কী?’।   রিজার্ভ ডে প্রসঙ্গে ব্যাখ্যা দিয়েছেন রিচার্ডসন। তিনি জানান, এমনিতেই যেখানে টুর্নামেন্টের দৈর্ঘ্য ৪৫ দিন, সেখানে রিজার্ভ ডে রেখে সেটাকে আর বাড়াতে চাননি তারা, ‘প্রতি ম্যাচের জন্য রিজার্ভ ডে রাখলে টুর্নামেন্টের দৈর্ঘ্য আরও বেড়ে যেত। সেক্ষেত্রে বিশ্বকাপ আয়োজন করা অনেক বেশি জটিল হয়ে দাঁড়াত। পিচ প্রস্তুতি, দলগুলোর বিশ্রাম, ভ্রমণ, হোটেলের বুকিং, ভেন্যুর প্রাপ্যতা, টুর্নামেন্টের স্টাফ, অফিশিয়ালদের তৈরি থাকা, স্বেচ্ছাসেবকদের অংশগ্রহণ ও সম্প্রচারে বিঘ্ন ঘটত’।

বিচার বিশ্লেষণ করে রাখা হয়নি রিজার্ভ ডে। রিচার্ডসন জানান, ‘১২০০ মানুষ নিজেদের সবটুকু দিয়ে ম্যাচ আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছে। রিজার্ভ ডে থাকলে আরও অনেক বেশি মানুষের দরকার হতো। নকআউট পর্বের জন্য আমরা রিজার্ভ ডে রেখেছি। কারণ গ্রুপ পর্বের দৈর্ঘ্য এমনিতেও অনেক লম্বা।’

অন্যদিকে প্রিয় দলের ম্যাচ দেখতে আসে ফেরত গিয়েছেন বহু দর্শক। কারণ ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। তবে তাদের খুব হতাশ করবেন না আইসিসি। সেক্ষেত্রে আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী, কোনো বল হওয়া ছাড়াই ম্যাচ পরিত্যক্ত হলে টিকেটের পুরো টাকাই ফেরত পাবেন দর্শক। যদি ১৫ ওভারের কম খেলা হয়, তবুও তারা পুরো টাকা পাবেন। ১৫ থেকে ৩০ ওভারের মাঝে খেলা হলে টিকেটের টাকার ৫০ শতাংশ ফেরত পাওয়া যাবে। অনলাইনে টিকেট কাটলে ২৮ দিনের মাঝে টাকা তাঁর অ্যাকাউন্টে চলে যাবে। আর মাঠ থেকে কাটলে সেটা চিঠির মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে।

দ্বাদশ আসরে বৃষ্টির কারণে এখন পর্যন্ত তিনটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়েছে। বৃষ্টি হানা দিতে পারে, এমন সম্ভাবনা আছে সামনের আরও কিছু ম্যাচে।

বাংলা ইনসাইডার/এসআরএস

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭