নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 13/06/2019
খুব দাবি নিয়ে বন্ধুকে লিমা বলছিল, ‘জানিস, ও (সঙ্গী) আমার প্রতি খুব কেয়ারিং। আমি কখন কি করছি সব ও জানে। ওর নিয়ন্ত্রণের বাইরে আমি তো কিছু করতেই পারি না। এগুলো হয় কারণ ও আমাকে একটু বেশিই ভালোবাসে।’ এটা শুনে বন্ধু বললো, ‘এটাকে কি আসলেই কেয়ারিং, বেশি ভালোবাসা নাকি পজেসিভনেস!’
এটা একটি বড় প্রশ্ন। সঙ্গীকে অতিরিক্ত ভালোবাসার নামে আমরা পজেসিভ হয়ে যাই। তাকে একেবারে নিজের করে ফেলতে চাই। তার যে আলাদা একটা জগত আছে, সেটা ভুলেই যাই। এই অতিরিক্ত ভালোবাসা কিন্তু ভালো না। এটা আপনাকে একেবারে এককেন্দ্রীক করে দেবে। আরও ঘটাবে অনেক বিপত্তি।
অহেতুক উদ্বিগ্ন হওয়া একটি সমস্যা, দূর করুন সেটা
আপনি হয়ত চান সবসময় সঙ্গীর সঙ্গে লেপ্টে থাকতে, তার সঙ্গেই সবসময় থাকতে। কিন্তু সবসময় একসঙ্গে থাকা তো সম্ভব নয়, সেটার জন্য পর্যাপ্ত সময় আমাদের কই! সেক্ষেত্রে আপনার সঙ্গী আপনাকে যথেষ্ট সময় দিচ্ছে কিনা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে না থাকাই ভালো। আপনি হয়ত ভাবেন যে সঙ্গীর সঙ্গে যথেষ্ট সময় কাটানো হচ্ছে না বা সঙ্গী সময় দিচ্ছে না সবসময়। মনে হচ্ছে তাহলে সে বোধহয় আমাকে চাচ্ছে না বা আমাকে তার ভালো লাগছে না! এটা শুধু শুধুই আপনাকে ভারাক্রান্ত করে দেবে। সম্পর্কের অন্য সবদিক ঠিক রেখে এসব চিন্তা বাদ, অতিরিক্ত কল্পনা এড়িয়ে চলুন।
একে অন্যকে আলাদা জায়গা করে দিন
অনেকেই ভাবেন ভালোবেসে সম্পর্ক করা মানেই সঙ্গীর প্রতি একচ্ছত্র আধিপত্য আর হস্তক্ষেপ করা। তার সব আপনি জানবেন, সে কখন কি করবে বা কোথায় যাবে সব নিয়ন্ত্রণ করা মানেই তো সম্পর্ক নয়। ভালোবাসার সম্পর্ক মানেই অযাচিত হস্তক্ষেপ নয়। এগুলো না হলে বিচ্ছেদ বা বিরহ নিয়ে আসবেন সেটাও তো ঠিক না। অপরের নিজের জগতকে সম্মান করবেন। স্বাধীনতা দিলে দেখবেন সম্পর্ক আরও দীর্ঘস্থায়ী ও মজবুত হবে।
অতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণ হবেন না
ঈর্ষা কোনোসময়ের জন্য ভালো নয়। এটা সব সম্পর্ককে খারাপ করে তুলতে পারে। কিন্তু ভালোবাসার সম্পর্কগুলোতে একটু-আধটু ঈর্ষা চলে আসে। সঙ্গী আমাকে রেখে অন্য কাউকে বেশি সময় দিচ্ছে, আমাকে ফোন দিলো না, অথচ ফোন ব্যস্ত পাচ্ছি- এগুলো বিষয় ভেতরে ভেতরে ক্ষুব্ধ করে তুলবে। ভালোবাসা থেকে এটা হতে পারে। এতে করে গভীরতা থাকে। তবে অতিরিক্ত ভালোবাসার দোহাই দিয়ে যদি মাত্রাতিরিক্ত ঈর্ষাপরায়ণতা দেখান তাহলে সেটা সম্পর্ককে বিষিয়ে তুলতে পারে।
সঙ্গীকে হুমকি-ধামকি
সম্পর্কে ব্লাকমেইল করা বেশিমাত্রায় ভয় দেখানো অনেকেরই অভ্যাস থাকে। তাতে নাকি সঙ্গী নিয়ন্ত্রণে থাকে, বিচ্ছেদের ভয় থাকে না। এমনটা কেন করেন সেই প্রশ্ন করলে বলে বসে অতিরিক্ত ভালোবাসি বলেই এমন করি। কিন্তু এই অতিরিক্ত ভালোবাসা যে সম্পর্ককে ডুবিয়ে দিতে পারে সেটা আপনি বুঝুন আগে। সঙ্গীকে হুমকি দিলে সে হয়ত সব কথা মেনে চলবে, কিন্তু পুরোই শিশুতোষ আচরণ। এটা সম্পর্ককে তিক্ত করতে সময় নেয় না।
ভালোবাসাকে তিক্ত করতে যাবেন না
খুব ভালোবাসা থেকে নাকি ঝগড়া আর অভিমান বেশি আসে। সেই সঙ্গে যদি সন্দেহ চলে আসে, সেটা খুব খারাপভাবে আপনার সম্পর্ককে নষ্ট করে দিতে পারে। সে সামনে থাকুক বা না থাকুক, তাকে চোখে চোখে রাখার প্রবণতাটা খারাপ। ধরুন সে সামনে নেই আর আপনি তার ফোনের দিকে তাকিয়ে আছেন, চেক করছেন। এতে সে অন্যকিছু মনে করতে পারে। মনে রাখবেন, অতিরিক্ত কোনোকিছুই ভালো নয়। এগুলো দুজনের মধ্যে অনিরাপত্তা তৈরি করে, গভীর ভালোবাসাকে হালকা করে দেয়। ভালোবাসার শৃঙ্খলে বেঁধে না রেখে জায়গা করে দিন দুজনেই যাতে মুক্ত থাকতে পারেন। অতিরিক্ত এত ভালোবাসার কি প্রয়োজন?
সবার সামনে অপমান-অপদস্ত
অনেকে আবার সঙ্গীকে সবার সামনে অপমান করেও খুব আনন্দ পান। কেন সেটা? প্রশ্ন করা হলে বলে, আমি তো তাকে খুব ভালোবাসি, সে কোনো ভুল বা পাগলামি করলে সহ্য করতে পারি না বিধায় অপমান করে ফেলি। এতে পরে অবশ্য খারাপ লাগে। কিন্তু কথা হলো, এতোই যখন ভালোবাসা তখন অপমান কেন? তাকে আলাদাভাবেই বুঝিয়ে দেওয়া যায় যে কোনটা ভালো কোনটা মন্দ। অতি ভালোবাসার নামে অপদস্ত না করলেই হলো।
বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭