ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

বাবার পথেই হেঁটেছেন বিশ্বনেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/06/2019


Thumbnail

কথায় বলে, বাবা যেই পথে যান সন্তান ঠিক সেই পথেই হাঁটে। এর পক্ষে-বিপক্ষে বিভিন্ন যুক্তি পাওয়া যাবে। কিন্তু রাজনৈতিক অঙ্গনে চোখ বোলালে দেখা যাবে, এশিয়া, ইউরোপ, আমেরিকা কিংবা আফ্রিকা পৃথিবীর প্রায় সর্বত্রই বাবার পথ ধরে রাজনীতিতে এসেছেন বহু সন্তান। এদের মধ্যে অনেকে বাবার মতো প্রবল পরাক্রমে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এমনও দেখা গেছে যে, দেশের নেতৃত্বে এসে বাবার দেশ পরিচালনার নীতিকেই ফিরিয়ে এনেছেন তারা।

কানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোই যেমন বাবা পিয়েরে ট্রুডোর পদাঙ্ক অনুসরন করে রাজনীতিতে এসেছেন। বাবার মতোই জনগণের ভালোবাসা জিতে নিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে বাবার নীতিকেই ফিরিয়ে আনছেন তিনি। জাস্টিনের বাবা পিয়েরে ট্রুডোকে আধুনিক কানাডার জনক হিসেবে দেখা হয়। তিনি ছিলেন বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু। এদেশের মুক্তিসংগ্রামে তার অবদানের কথা আজও স্মরণ করে বাঙালি। জাস্টিন ট্রুডোও যেন বাবার পথ ধরেই বাংলাদেশের বন্ধু হয়ে উঠেছেন। বড় ট্রুডোর সময়েই আন্তর্জাতিক রাজনীতির কুটিল সব হিসেব নিকেশ এড়িয়ে মানবিকতাকে সবার উপরে স্থান দিয়েছিল কানাডা। এখন ছোট ট্রুডোর দেশ পরিচালনার ক্ষেত্রেও মানবিকতার ছাপ দেখতে পান বিশ্লেষকরা। এই তো গেল মানবিক বোধসম্পন্ন রাষ্ট্রনায়ক দুই পিতা-পুত্রের কথা। এর উল্টো উদাহরণও দেখেছে বিশ্ব।

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট এইচ ডব্লিউ বুশ সিনিয়র এবং তার গুণধর পুত্র জর্জ বুশ জুনিয়রের কথাই ধরা যাক। যুদ্ধবাজ হিসেবে এই দুজনেরই পরিচিতি আছে। এইচ ডব্লিউ বুশ ও এইচ ডব্লিউ বুশ দুজনই মধ্যপ্রাচ্য আক্রমণ করেছিলেন। এই দুই পিতা-পুত্রের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধের ক্ষত আজও বয়ে বেড়াচ্ছে ইরাক আফগানিস্তানের মতো দেশগুলো।

ইন্দোনেশিয়ার পঞ্চম প্রেসিডেন্ট মেঘবতী সুকর্ণপুত্রীও বাবার পথ ধরে রাজনীতিতে এসেছিলেন। ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত দেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনিই ইন্দোনেশিয়ার স্বাধীনতার পর প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি এবং ইন্দোনেশিয়ায় জন্মগ্রহনকারী নেতা। ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক অঙ্গনে তিনি গণতন্ত্র সংগ্রামী হিসেবেও পরিচিত। তার বাবা সুকর্ণকে বলা হয় ইন্দোনেশিয়ার জাতির পিতা। দেশটির প্রথম রাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। স্বৈরাচারী একনায়ক হিসেবেও তাকে চিহ্নিত করেন অনেকে।

ভারতের ইন্দিরা গান্ধিও বাবা জওহরলাল নেহরুর পদাংক অনুসরণ করে রাজনীতিতে এসেছিলেন। কিন্তু দেশকে নেতৃত্বদানের ক্ষেত্রে দূরদর্শীতা এবং পরাক্রমে তিনি বাবাকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন বিশ্লেষকরা।

রাজনীতিতে বাবার যোগ্য উত্তরসূরির প্রসঙ্গ উঠবে আর বাংলাদেশের রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নাম আসবে না এ যেন হতেই পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন। আর তার কন্যা এখন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।

রাষ্ট্রনেতা হিসেবে পিতার মতাদর্শের উল্টোদিকে যাওয়ার উদাহরণও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রয়েছে। এই যেমন মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চি্র বাবা অং সান ছিলেন দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রধান নেতা ও সমরনায়ক। গণমানুষের নেতা হিসেবে তার সুনাম ছিল। তার কন্যা সু চিও সেই পথ ধরেই হাটছিলেন। তাকে গণমানুষের নেত্রী হিসেবেই চিনতো বিশ্ব। কিন্তু গত কয়েক বছরে সবকিছুই যেন বদলে গেছে। বিশ্বের দরবারে আজ সু চির পরিচিতি হলো, ক্ষমতালিপ্সু এক নেত্রী যিনি ক্ষমতায় টিকে থাকতে রোহিঙ্গা নিধন, সাংবাদিক নির্যাতনের মতো ঘটনায় সেনাবাহিনী্কে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছেন।

বাবা জুলফিকার আলির পথ ধরে রাজনীতিতে এসেছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোও। কিন্তু তার রাজনৈতিক পথ চলাটা খুব একটা মসৃণ হয়নি। দুর্নীতির দায়ে তাকে ক্ষমতা হারাতে হয়েছিল একাধিকবার। নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলায় মৃত্যু হয়েছিল তার। 

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭