নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: 16/06/2019
বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ কিছু মামলার বিচার কখনোই শেষ হয় না। বছরের পর বছর এই মামলাগুলো চলছে। এই বিচারগুলো কবে নিষ্পত্তি হবে তা কেউই জানে না। এরকম কিছু মামলার ইতিবৃত্ত নিয়েই এই প্রতিবেদন:
অষ্টম সংশোধনীর মামলা: অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে তৎকালীন সামরিক শাষক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ সংবিধানের দুটি সংশোধনী এনেছিলেন। একটি হলো বিচার বিভাগকে দ্বিকেন্দ্রীকরণ করেছিলেন। উচ্চ আদালতকে তিনি ঢাকার বাইরেও স্থানান্তর করেছিলেন। আরেকটি ছিল রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। দুটিকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট হয়েছিল। সংবিধানের অষ্টম সংশোধনীর বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ সংক্রান্ত আদেশটি সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ বাতিল করে দেয়। কিন্তু রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংক্রান্ত মামলাটি ঝুলে আছে। এখনো মামলাটি বিচারাধীন এবং পরিত্যক্ত অবস্থায় পরে আছে। এই মামলাটির চুড়ান্ত নিস্পত্তি কখনোই হয়নি।
অবৈধ ক্ষমতা দখলের মামলা: ১৯৮২ সালের ২৪ মার্চ হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ সেনা প্রধান থেকে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করেছিলেন এবং সংবিধান স্থগিত করেছিলেন। তার এই অবৈধ ক্ষমতা দখলকে চ্যালেঞ্জ করে জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু একটি রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করেছিলেন। কিন্তু ওই মামলাটি আলোর মুখ দেখেনি। মামলাটি কখনো নিস্পত্তি হয়নি। এই মামলাটির অবস্থা এখন কি তা কেউ জানে না।
মঞ্জুর হত্যা মামলাঃ ১৯৮১ সালের ৩০শে মে নিহত হন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। জিয়াউর রহমানের নিহতের জন্য ততকালীন চট্টগ্রামের জিওসি জেনারেল মঞ্জুরকে দায়ী করা হয়। জেনারেল মঞ্জুরকে গ্রেপ্তারের জন্য গিয়ে হত্যা করা হয়। অনেকেই মনে করেন যে, জিয়া হত্যার মূল রহস্য আড়াল করার জন্য তৎকালীন সেনাপ্রধান হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছিলেন। এ ব্যাপারে বেগম খালেদা জিয়া একাধিকবার অভিযোগও করেছিলেন। এই মঞ্জুর হত্যা মামলা এতবছর পর এখনও নীষ্পত্তি হয়নি। মামলার একের পর এক তারিখ এবং দুবার মামলার রায় ঘোষণার তারিখ হবার পরও ওই তারিখে রায় ঘোষণা করা হয়নি। রাজনৈতিকভাবে এরশাদকে ব্যাবহার করার জন্য এই মামলা অনন্তকাল ধরে চলছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
জামাতের নিষিদ্ধকরণ মামলাঃ জামাতের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এবং জামাতের গঠনতন্ত্র সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এটা চ্যালেঞ্জ করে রিট পিটিশন হয়েছিল ১৬ বছর আগে। কিন্তু সেই মামলাও এখনও আলোর মুখ দেখছে না। এই মামলার নিষ্পত্তির কোনও উদ্যোগও লক্ষ্য করা যায়নি।
বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এই মামলাগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন। এই মামলাগুলোর মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনীতির কতগুলো গুরত্বপূর্ণ মৌলিক সিদ্ধান্ত স্থির হত বলে অনেকে মনে করেন। তবে বাস্তবতা হলো এই, এই মামলাগুলো ঝুলে আছে রাজনৈতিক নানা বিচার বিবেচনা এবং হিসেব নিকেশের কারণে। আমাদের গণতন্ত্রের জন্য, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার জন্য এই মামলাগুলোর দ্রুত নিষ্পত্তি হওয়া প্রয়োজন বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন।
বাংলা ইনসাইডার
প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান
বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭