ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

কে এই মুরসি?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/06/2019


Thumbnail

আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থাতেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন মিসরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মাদ মুরসি। আন্তর্জাতিক মহলে তার এই মৃত্যু নিয়ে আলোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। মিসরের ইতিহাসে প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র গণতান্ত্রিক ধারায় নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট তিনি। সৌদি আরব-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র এই তিন দেশের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েই তিনি ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিলেন বলে ধারণা করা হয়।

মুসলিম ব্রাদারহুড নেতা মুরসি উত্তর মিসরের শারক্বিয়া প্রদেশের আল আদোয়াহ গ্রামে ১৯৫১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকৌশল বিষয়ে স্নাতক ও সন্মান ডিগ্রী লাভ করেছিলেন। পরে তিনি উচ্চ শিক্ষার্থে যুক্তরাষ্ট্রে যান এবং ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।

২০০০ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মুরসি। সে সময়ই তিনি মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন নেতৃস্থানীয় ব্যাক্তিত্বে পরিণত হন। ২০১১ সালে গণঅভ্যুত্থানে হোসনি মোবারকের পতনের পর ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০১৩ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি। ওই অভ্যুত্থানে সমর্থন দেয় সৌদি আরব, ইসরায়েলের মতো আঞ্চলিক শক্তিগুলো। সরকারিভাবে বিবৃতি দিয়ে মুরসি সমর্থকদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে সৌদি আরব।

মুরসি বিরোধীরা বলেন, মিসরের ক্ষমতায় আসার পর তিনি দেশের অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সঙ্কট মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছিলেন। তাছাড়া, দেশের বৃহত্তর স্বার্থের চেয়েও মুসলিম ব্রাদারহুডের ইসলামপন্থি কর্মসূচিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছিলেন তিনি। এসব কারণে মুরসি সরকারের বিরুদ্ধে জনগণের বিরোধিতা বাড়তে শুরু করে এবং ২০১৩ সালের ৩০ জুনে মিসরজুড়ে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। যদিও এর পেছনে সৌদি-ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের ষড়যন্ত্র খুঁজে পায় অনেকে।

২০১৩ সালের ৩ জুলাইয়ে মিসরের সেনাবাহিনী সংবিধান স্থগিত করে। জেনারেল সিসি নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই টেকনোক্র্যাটিক অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের ঘোষণা দেয় এবং মুরসিকে বন্দি করে। অন্ধকার কারাপ্রকোষ্ঠ ছিল তার ঠিকানা। এ সময়ে মাঝে মধ্যেই আদালতে তোলা হতো তাকে।

২০১৮ সালের মার্চে মুরসির পরিবারের উদ্যোগে গঠিত ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা ও আইনজীবীদের একটি প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, মুরসির ক্ষেত্রে বন্দিত্বের ন্যূনতম অধিকারের জন্য নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করা হচ্ছে না। তাকে কারাগারে খুবই বাজে অবস্থায় রাখা হয়েছে। ব্রিটিশ আইনপ্রণেতাদের ওই প্রতিবেদনে নির্বাচিত প্রেসিডেন্টের আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার খর্ব করার অপরাধে বর্তমান প্রেসিডেন্ট সেনাশাসক জেনারেল ফাত্তাহ আল সিসিকে দায়ী করার সুপারিশ করা হয়েছিল।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭