ইনসাইড পলিটিক্স

কাঠগড়ায় মন্ত্রী-এমপিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/06/2019


Thumbnail

আজ শেষ ধাপে উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলো। উপজেলা নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিরোধ ছিলে তুঙ্গে। দল ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রার্থীতা উম্মুক্ত করে দিলেও চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ দলগত মনোনয়ন দিয়েছিল। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তকে লংঘন করে একাধিক আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ সমস্ত এলাকায় তারা সরাসরি নৌকার বিরুদ্ধে প্রচার অভিযান করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন যে, যারা নৌকার বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কথা ছিল গত মার্চ মাসে উপজেলা নির্বাচনের চতুর্থ ধাপ শেষ হওয়ার পরে যারা দলীয় প্রতীকের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন তাদেরকে কারণ দর্শানোর কথা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতির নির্দেশে সেই কারণ দর্শানো তখন হয়নি। আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেছেন, তখন উপজেলা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর এই কর্মপন্থা গ্রহণ করা হবে। উপজেলা নির্বাচন আজ শেষ হয়ে যাচ্ছে। তবে কি ধরনের কর্মপন্থা নেওয়া যাবে এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ রকমের সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। 

১. যারা নৌকার বিরোধীতা করেছেন। নৌকার বিরোধীতা করে প্রার্থী হয়েছেন (ভাইস চেয়ারম্যান পদে নয়) শুধুমাত্র চেয়ারম্যান পদে, তাদের চিহ্নিত করতে হবে এবং কোন প্রেক্ষাপটে কি করেছিল তা জানতে হবে। আওয়ামী লীগ সভাপতি দ্রুতই তাদের বহিস্কার বা দলচ্যুত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

২. আওয়ামী লীগের হিসেব অনুযাী এক তৃতীয়াংশ ভোট পেয়ে আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থীকে পরাস্থ করে স্বতন্ত্র এবং বিদ্রোহীরা বিজয়ী হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি জানতে চেয়েছেন, যারা বিজয়ী হয়েছেন তারা এলাকায় জনপ্রিয় কিনা। তারা কিভাবে জয়ী হয়েছেন। তারা কি নির্বাচনের মাধ্যমে জয়ী হয়েছে প্রভাব বিস্তার ছাড়াই? তাহলে আওয়ামী লীগের তৃনমূলের অন্যপ্রার্থী মনোনয়নের যে ভুল সিদ্ধান্ত ছিল সে ব্যাপারেও তদন্ত করা হবে।

৩. বিদ্রোহী এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীদের যে সমস্ত মন্ত্রী-এমপি এবং প্রভাবশালী নেতারা পৃষ্টপোষকতা দিয়েছেন এবং যাদের প্ররোচনায় এবং প্রলোভনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তৃনমূলের নেতারা নির্বাচন করেছেন সেই সমস্ত মন্ত্রী- এমপি এবং প্রভাবশালীদের চিহ্নিত করতে হবে। ভবিষ্যতে প্রয়োজনে তাদেরকে নৌকা প্রতীক দেওয়া থেকে বিরত রাখা হবে। তাদের বিরুদ্ধে দলের অন্যান্য সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

৪. যে সমস্ত প্রশাসনের ব্যক্তি, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বা সিভিল প্রশাসনের বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছেন এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বিজয়ী করার জন্য নিয়ম বহির্ভূত তৎপরতায় লিপ্ত হয়েছেন। তাদেরকেও চিহ্নিত করা হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করা হবে।

৫. যে নির্বাচন হয়ে গেছে তারপর সবজায়গার বিরোধ মিটিয়ে দলকে একাট্টা ঐক্যবদ্ধ করার সাংগঠনিক সম্পাদকদের উদ্যোগ গ্রহণ এবং তৎপরতা গ্রহণ করতে হবে।

জানা গেছে, আজ উপজেলা নির্বাচন শেষ হওয়ার পরে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সভা হবে। সভায় এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনার পরেই চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। একটি সূত্র বলছে যে, আওয়ামী লীগ সভাপতি যারা উপজেলায় বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে ততটা আগ্রহী নন। তিনি বরং যারা তাদেরকে মদদ দিয়েছেন, যারা তাদের প্রলোভন দিয়েছেন, যাদের কারণে তারা প্রার্থী হয়েছেন সেই সমস্ত মন্ত্রী এমপি চিহ্নিত করে ভবিষ্যতে তারা যেন আওয়ামী লীগের কোন ভালো পদ না পায়, মনোনয়ন না পায়, মন্ত্রীত্ব না পায় সেই ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারেই তিনি বদ্ধ পরিকর। এই প্রক্রিয়াটা চটজলদি করে হবে না। ধাপে ধাপে অত্যন্ত সুক্ষভাবে এই সিদ্ধান্তগুলো বাস্তবায়ন হবে বলেই আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছেন।

বাংলা ইনসাইডার

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭