ইনসাইড বাংলাদেশ

চাহিদা প্রচুর, সরবরাহ সীমিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/05/2017


Thumbnail

কাঠ ফাঁটা রোদ! তীব্র গরম! এসব উপেক্ষা করে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন সালেহা বেগম। সুলভে পণ্য কেনার আশায়। গত বৃহস্পতিবারও লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন পণ্য কিনতে। এসেই বুঝতে পারলেন একটু দেরিই করে ফেলেছেন। বেলা ১২ টা বাজতেই সব পণ্য শেষ। তাই পরদিন শুক্রবার সকাল সকালই এসে লাইনে দাঁড়ান। সালেহার মত এমন অনেকেই আসেন ট্রাকে বিক্রি করা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্য কিনতে।

রমজান উপলক্ষে সারাদেশে ন্যায্যমূল্যের পণ্য বিক্রি করছে টিসিবি। কিন্তু চাহিদার তুলনায় পণ্য সরবরাহ কম থাকায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়েও পণ্য কিনতে পারছেন না অনেকে। লাইন শেষ না হতেই শেষ হয়ে যাচ্ছে টিসিবির পণ্য। চাহিদার র্শীষে আছে চিনি, ছোলা ও সয়াবিন তেল।

রাজধানীতে টিসিবির ন্যায্য মূল্যে পণ্য বিক্রি নিয়ে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের।

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া এলাকায় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রুবেল হোসেন বলেন, ‘দুই ঘণ্টা ধইরা খাড়ায়া আছি, এহন হুনতাছি ছুলা ও চিনি কিছুই নাই। কাম বাদ দিয়া প্রত্যেকদিন কী লাইনে খাড়ান যায়।’

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে টিসিবির পণ্য কিনতে আসা হাবিবুর রহমান অনেকটা ক্ষোভ প্রকাশ করেই বলেন, ‘মাত্র কয়দিন হলো টিসিবি পণ্য বিক্রি করতেছে। এখনই চাহিদামতো পণ্য পাওয়া যাচ্ছে না। পরে কি হবে।’

রাজধানীর শংকর এলাকায় টিসিবির পণ্য বিক্রেতা হাফিজুর রহমান বলেন, ‘ আমাদের দৈনিক ট্রাকপ্রতি ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি চিনি, ছোলা, ২৫০ থেকে ৩০০ কেজি মসুর ডাল এবং ৩০০ থেকে ৪০০ লিটার সয়াবিন তেল বরাদ্দ থাকে। কিন্তু ক্রেতাদের চাহিদার কারণে বেশিরভাগ পণ্যই দুপুরের আগে শেষ হয়ে যায়।’

বয়স্কদের জন্য গরমে লাইনে দাঁড়িয়ে পণ্য কেনা বেশ কষ্টকর। তেমনি একজন রহমত মিয়া (৬০)। থাকেন ডেমরাতে। ন্যায্যমূল্যে পণ্য কেনার জন্য অনেক দূর থেকে আসতে হয় তাঁকে। রহম মিয়া বলেন,‘ সব জায়গাতেই যদি টিসিবির ট্রাক পাওয়া যেত আমাদের জন্য সুবিধা হত।’

টিসিবি গত সোমবার থেকে সারাদেশে ন্যায্যমূল্যে প্রতি কেজি চিনি ৫৫ টাকা, ছোলা ৭০ টাকা, মসুর ডাল ৮০ টাকা ও সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮৫ টাকায় বিক্রি করছে। একজন ভোক্তাকে সর্বোচ্চ ৪ কেজি চিনি, ৩ কেজি মসুর ডাল, ৫ লিটার সয়াবিন তেল এবং ৫ কেজি ছোলা দেওয়ার কথা থাকলেও তা কমবেশি করে দেওয়ার অভিযোগ আছে। আর বাজার মূল্য থেকে টিসিবি চিনিতে ১৫ টাকা, ছোলায় ২০ টাকা, মসুর ডালে ১০ টাকা ও সয়াবিন তেলে প্রতিলিটারে ২০ টাকা কম নিচ্ছে।

প্রতিবছর রমজানকে কেন্দ্র করে পণ্যের দাম বাড়াতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ব্যবসায়ীরা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে চাল, ডাল, চিনি, তেলের দাম কেজি প্রতি বেড়েছে ৫ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। এমন দাম বাড়ায় খুচরা ব্যবসায়ীরা দুষছেন পাইকারদের।

মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের পাইকারী ব্যবসায়ী রহমত মিয়া বলেন,‘ আড়ত থেকেই দাম বাড়লে আমার কী করব। আমাদেরও বাড়াতে হয় পণ্যের দাম।’

অথচ প্রতি বছরই পণ্যের দাম বাড়বে না বলে অনেক আলোচনা সভা, বাজার অভিযানসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালায় টিসিবি। বিশ্লেষকদের মতে, টিসিবির উদ্যোগ এসবেই শেষ। নেই কোনো বাজার নজরদারির ব্যবস্থা। আর এমন নজরদারি না থাকায়ই পণ্যের দাম বাড়ছে।


বাংলা ইনসাইডার/আইএস/জেডএ


 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭