ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

যে ১০ কারণে শক্তিশালী চীন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 25/06/2019


Thumbnail

চীন তার অর্থনৈতিক উন্নয়নের পাশাপাশি সামরিক দিক দিয়েও উন্নতির শিখরে চলে যাচ্ছে। চীনের সামরিক সমৃদ্ধি এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যুক্তরাষ্ট্রও এখন তাদের সমঝে চলছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, আগামী কয়েক দশকের মধ্যেই সবক্ষেত্রে বিশ্বের পরাশক্তিগুলোকে ছাড়িয়ে এক নম্বর দেশ হয়ে উঠতে পারে চীন। এর কারণ হিসেবে বেশিকিছু বিষয়ের কথা উল্লেখ করছেন তারা। এরমধ্যে রয়েছে-

চীনের ‘কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা’

প্রচলিত নানা প্রযুক্তির পাশাপাশি এবার আর্টিফিসিয়াল ইন্টিলিজেন্স বাজার দখলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে চীন। দেশটির প্রায় ২০টি প্রদেশের উৎপাদনশীল  কারখানাগুলোতে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার শুরু হয়েছে। দেশটি এ বিষয়ে বিভিন্ন নিয়ম কানুন করেছে দেশটি।  গত বছর এআইয়ের ওপর ভিত্তি করে ১৫০০ নতুন কারখানা যাত্রা  ২০২১ এ সাড়ে মধ্যে আয় ৮ ট্রিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। খরচ করা হচ্ছে গবেষণা ক্ষেত্রেও।

মহাকাশ অভিযানে চীন

চাঁদের যে অংশটি পৃথিবী থেকে কখনোই দেখা যায় না, সেই দূরবর্তী দিকে এই প্রথম একটি রোবট চালিত মহাকাশযান নামিয়েছে চীন। এটিকে চীনের মহাকাশ কর্মসূচির জন্য এক বিরাট সাফল্য বলে মনে করা হচ্ছে। চীন তাদের মহাকাশ স্টেশন কর্মসূচি শুরু করেছে ২০১১ সালে। সেবছর তারা `টিয়াংগং-ওয়ান` নামে একটি স্টেশন পাঠায়। টিয়াংগং মানে হচ্ছে `স্বর্গের প্রাসাদ`। চীন মহাশূন্যে ঘুরতে থাকা কোন স্যাটেলাইট ক্ষেপনাস্ত্র দিয়ে ধ্বংস করার ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে ২০০৭ সালে।

সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনে চীন

বিশ্বে জ্বালানি শক্তির রূপরেখা আমুল পরিবর্তন এনেছে চীন। দেশটিতে সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১৩০ গিগাওয়াট। পৃথিবীর সর্ববৃহৎ সোলার বিদ্যুৎ প্রকল্পটিও চীনে  অবস্থিত। চীনের টেনযার্ট মরুভূমির এ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা ১৫০০ মেগাওয়াট।

বৈদ্যুতিক গাড়ির উৎপাদনে চীন শীর্ষে

গত বছর প্রায় ১২ লাখ বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির মধ্য দিয়ে বিশ্ব বৈদ্যুতিক গাড়ি বাজারে চালকের আসনে রয়েছে চীন। চীনের বিকল্প জ্বালানিসংশ্লিষ্ট নীতি বৈদ্যুতিক ট্রাক ও বাস খাতের সম্প্রসারণে সহায়তা করছে, বিশেষত শহরের বায়ুর মান নিয়ন্ত্রণে এ নীতি বেশ সহায়ক বলে বৈদ্যুতিক গাড়ি। চীন এখন বৈদ্যুতিক ট্যাক্সি ও  গাড়ি নির্মাণ করে।

সামরিক খাতে চীন

 প্রতি বছরের মতো এবারও সিামরিক খাতে ব্যয় বৃদ্ধি করেছে। সাড়ে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে এ বছর প্রতিরক্ষা খাতে ১৭৭.৬১ বিলিয়ন ডলার। ২০১৮ সালে সামরিক খাতে বাজেট ছিল ১৭৫ বিলিয়ন ডলার। প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেটের তুলনায় এর পরিমাণ তিনগুণ বেশি।

কৃষি পণ্য উৎপাদনে চীন ভূমিকা

চীন সারা পৃথিবীতে কৃষি খাতে এক উল্লেখ যোগ্য ভূমিকা রেখেছে। ২০০০ সালের পর থেকে মানুষের প্রয়োজনীয় সবুজ পণ্য সবচেয়ে বেশি উৎপাদন করেছে চীন। বর্তমানে বিশ্বের ২২ শতাংশ মানুষের সবুজ পন্যের চাহিদা পূরন করছে চীন। দেশটিতে কৃষি উৎপাদনে ব্যবহূত জমির পরিমাণ বিশ্বের মোট আবাদযোগ্য জমির ৭ শতাংশ। চাল, গম, আলু, টমেটো, জোয়ার, বাজরা, বাদাম, চা, বার্লি, তুলা, তেলবীজ, সয়াবিনসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদনে শীর্ষস্থানে রয়েছে চীন।

চীনের জিডিপি গতি ধীর হলেও, কিন্তু এখনও উচ্চ অবস্থায়

চীনের প্রবৃদ্ধি ধীর গতিতে এগোচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে অনেক উচুতে অবস্থান করছে। চীনের মোট দেশজ উৎপাদন জিডিপি বেড়ে দাঁড়িয়েছে শতকরা ৭.৪ শতাংশ। আগামী ৩০ বছরে প্রবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশ থেকে ৮ শতাংশ হলেই তা চীনের উন্নয়নের জন্য যথেষ্ট।

লিঙ্গ বৈষম্য কমিয়েছে চীন

কোনদেশ উন্নত করতে চাইলে নারী-পুরুষের সমান অধিকার দিতে হবে। তেমনি কৌশল অবলম্বন করেছে চীন। আর তার জন্য দেশটি লিঙ্গ বৈষম্য কমানোর দিকে মনযোগ দিচ্ছে। ২০১৮ সালে এক জরিপে লিঙ্গ বৈষম্য কমানোর দিক থেকে ১০৩ তম হয়েছে ১৪৯টি দেশের মধ্যে।

বিআরআইসি জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছেন চীন

বিআরআইসি বা ব্রাজিল, রাশিয়া, চীন এবং ভারত জোটের নেতৃত্ব দিচ্ছে চীন। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক্স ফোরাম ইনডেক্সের ২৮তম অবস্থানে রয়েছে চীন। দেশটি আইটি, গবেষণা খাতে বিনিয়োগ এবং উন্নয়নে বিআরআইসি জোটের সবচেয়ে উপরের স্থানে রয়েছে। সুইজারল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানির পরেই চীনের অবস্থান রয়েছে আবিষ্কারের ক্ষেত্রে।

ট্যুরিজম উন্নয়নে চীন

ট্যুরিজমের দিকে থেকে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় দেশ হবে চীন। ছুটি কাটনোর জন্যে সব থেকে বেশি জনপ্রিয় দেশ হবে চীন। ২০৩০ সালে  চীন বিশ্বের এক নম্বর পর্যটক ভ্রমণকারী দেশ হিসাবে ফ্রান্সকে ছাড়িয়ে যাবে। ২৬০ মিলিয়ন বহির্গামী ভ্রমণের সাথে বহির্গামী ভ্রমণের দিক থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জার্মানিকেও ছাড়িয়ে যাবে তারা।

চীনের এই অপ্রতিরোধ্য যাত্রা থামাবে না। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে চীন হয়ে উঠবে বিশ্বের এক নাম্বার দেশ। সব ক্ষেত্রে বিশ্বের বাঘা বাঘা দেশকে ছারিয়ে যাবে চীন।

বাংলা উনসাইডার/বিকেডি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭