ইনসাইড বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জে নদী ভাঙনরোধে প্রকল্পের কাজে ধীরগতির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 29/06/2019


Thumbnail

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলায় যমুনা নদীর অব্যাহত ভাঙনরোধে দুই দফায় সরকারি বরাদ্দের ত্রিশ লাখ টাকা ব্যায়ে জিও ব্যাগ ফেলে নদীর তীর রক্ষায় অস্থায়ী বাধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ও সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে ধীরগতির অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দাদের। গত দুই দশকে এ উপজেলার ২০/২৫ টি গ্রামসহ ফসলি জমি, ঘরবাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট- বাজার যমুনার ভাঙ্গনে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেলেও নদীর তীর রক্ষায় এখনো নির্মান হয়নি স্থায়ী কোন বাধ।

আর বর্ষা মৌসুম আসার আগেই গত দুই মাসে উপজেলার বাচামারা গ্রামের চারশতাধিক ঘরবাড়ি সহ ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতি বছরই যমুনার ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ভিটেমাটি সব হারিয়ে নিঃস্ব এখন সবাই। মাথাগোজার কোন ঠাই নেই তাদের। কেউ খোলা আকাশের নিচে আবার কেউ বা পাশ্ববর্তী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে পরিবার- পরিজন নিয়ে। এমত অবস্থায়   তাদের ভাগ্যে মেলেনি কোন ত্রান বা সরকারি সাহায্য-সহযোগিতা।

এখানকার সব হারিয়ে নিঃস্ব এক বাসিন্দা জানান  গেলো পাচ বছরে এ নিয়ে তিনবার তার বাড়ি নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে। সব হারিয়ে নিঃস্ব এখন তিনি ও তার পরিবারের লোকজন। মাথার গোজার কোন ঠাই নেই তার এখন। অনেক বছর ধরেই যমুনার ভাঙ্গনে শত শত ঘরবাড়ি ফসলি জমি বিলীন হয়ে গেলেও নদী ভাঙ্গন রোধে এখনো কোন স্থায়ী বাধ নির্মান হয়নি এখানে। আর কত ঘরবাড়ি ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেলে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের টনক নড়বে এ এলাকাটি রক্ষায় বলেন তিনি। 

আরেক বাসিন্দা জানান, আকাশে ঝড় বৃষ্টি দেখা দিলেই আতঙ্কের মধ্যে থাকি কখন সবকিছু নদীতে নিয়ে যায়। রাতে ঘুম হয়না এ চিন্তায়। এখনো এলাকাটি রক্ষায় স্থায়ীভাবে কোন বাধ নির্মান করেনি সরকার। তবে শুনেছি ভাঙ্গন থামাতে সরকারী ভাবে ত্রিশ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছি। নদীতে জিও ব্যাগও ফেলা হচ্ছে ধীরগতিতে। এভাবে জিও ব্যাগ ফেললে নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে ঐতিহ্যবাহী এ গ্রামটি রক্ষা করা কোনমতেই সম্ভব নয়। এছাড়া  আশেপাশের আরো ৮/১০ টি গ্রাম ভাঙ্গনের ঝুকিতে রয়েছে। তাছাড়া ঠিকাদার ঠিকমত কাজ করছে কিনা তার তদারকির জন্য পানি- উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের খুব একটা দেখা যায়না। এতে করে সরকারি অর্থের অপচয় হচ্ছেই শুধু কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছেনা। 

এছাড়াও  বাচামারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফের বাড়িটিও নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে। তিনি জানান, তাদের পুর্বের বাড়িটিও যমুনার ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গিয়েছে। সাতাশ বছর আগে করা পৈতৃক এ ভিটাটিও যমুনা ভাঙ্গন কবলে রয়েছে। এছাড়া এ এলাকার ভাঙ্গনের বিষয়ে বিভিন্ন সময় পত্রিকায় লেখা- লেখি করেও কোন সুফল পায়নি আমরা। সকল মহলকেই অবহিত করেছি এ ভাঙ্গনরোধে দ্রুত স্থায়ীভাবে সমস্যা সমাধানের জন্য। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোন সাড়া মেলেনি কারো। এভাবে ভাঙ্গতে থাকলে দুই এক বছরের মধ্যেই এ ইউনিয়নটি মানচিত্র থেকে মুছে যাবে। তাছাড়া এখনো সরকারি  সাহায্য - সহোযগিতা না মেলায় নদী ভাঙ্গন কবলিত মানুষের পাশে আমরা কোন ত্রান সামগ্রী নিয়ে দাড়াতে পারিনি।

কাজের ধীরগতির বিষয়টি স্বীকার করে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের   উপ- বিভাগীয় প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানান, ইতিমধ্যে বাচামারা এলাকায় ভাঙ্গন রোধে ১০২ মিটার এলাকায় জিও ব্যাগ ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু শ্রমিক সংকটের কারনে কাজের কিছুটা ধীরগতি রয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। তবে কাজ শেষ হলে ওই এলাকায় নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা অনেক অংশেই কমে আসবে বলে জানান তিনি।           

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭