ইনসাইড আর্টিকেল

বিশ্বকাপটা যদি একটা শ্রেণীকক্ষ হতো…

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 30/06/2019


Thumbnail

একটি শ্রেণীকক্ষে কি থাকে না? ভাল ছাত্র বা খারাপ ছাত্র, ফাঁকিবাজ কিংবা মনোযোগী, শিক্ষকদের কাছের কিংবা দূরের। এইসব ছাত্র থাকে প্রতিটা শ্রেণীকক্ষেই। কেমন হতো যদি ক্রিকেট বিশ্বকাপে অংশগ্রহনকারী দলগুলো যদি একই ক্লাসের শিক্ষার্থী হতো? যদি তাদেরকে তুলনা করা হতো আমাদের ক্লাশের সেই পরিচিত মুখগুলোর সাথে? চলুন দেখে নেয়া যাক কোন দলের সাথে ক্লাশের কোন ছাত্রগুলোর আচরণ মিলে যায় হুবুহু।  

পাকিস্তান

পাকিস্তান হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই শিক্ষার্থী যার পড়াশোনার কোনো ঠিক ঠিকানা নেই। মেধা আছে কিন্তু পরিশ্রমের বালাই নেই। সেমিস্টার ফাইনালের আগে কোনো রকমে নোট-শিট ম্যানেজ করে, নাকে মুখে পড়া গুঁজে এক্সাম হলে পৌছায়। মাঝে মাঝে ঠিক সময়ে পৌছাতেও পারেনা। ১০ মিনিট দেরি করে জবুথুবু অবস্থায় হল সুপারের পারমিশন নিয়ে এক্সামে বসে। পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করে কয়েকবার বহিষ্কৃত হবার নজির ও যার আছে। তারপর ও কিভাবে যেন একবার ফাইনালে টপ করেছিল। সেই থেকে সবাই কেমন যেন সমীহের চোখে দেখে। 

ভারত

ভারত হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে সিরিয়াস স্টুডেন্ট। শতভাগ এটেন্ডেন্স, সামনের সিটে বসা, নিয়মিত মন দিয়ে লেকচার শোনা, নোট বানানো-সবকিছুতে তার আগে পিছে কেউ নেই। পরীক্ষার দিন চুলের মাঝখানে সিথি কেটে, স্কেল-বক্স বগলদাবা করে, ঘড়িতে টাইম দেখতে দেখতে যে সবার আগে পরীক্ষার হলে পৌছায়। বিভিন্ন সময় টিচারদের ভাল ভাল উপহার দেয় । এসব কারণে টিচারদের সাথে তার সম্পর্ক ভাল। নৈতিক-অনৈতিক সবরকম ভাবেই সে উপর মহলের সাহায্য পায়।    

শ্রীলংকা

শ্রীলংকা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের বখে যাওয়া প্রাক্তন মেধাবী শিক্ষার্থী, সঙ্গদোষে ও অভিভাবকত্বের অভাবে যার মারাত্বক অবনতি ঘটেছে। এখন শুধু সে তার আগের রেজাল্টগুলো দেখে হাপিত্যেশ করে। কোনো এক ঈদের ছুটির পর আবার পড়াশোনা শুরু করবে বলে ভেবে রেখেছে। কিন্তু কোন ঈদ এটা জানা যাচ্ছে না।

ইংল্যান্ড

ইংল্যান্ড হলো ক্লাসের সবচেয়ে ধনী ছাত্র। তার দাদা এই বিশ্ববিদ্যালয় খুলেছিল কিন্তু সে নিজেই এখন পাশ করে বের হতে পারছে না। পরীক্ষার হলে কেমন যেন নার্ভাস ফিল করে। শেষের দিকে সব গন্ডগোল করে বসে। এবারের প্রস্তুতি খুব ভাল হলেও শেষ পর্যন্ত পাশ করে বের হতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।

আফগানিস্তান

আফগানিস্তান হলো মফস্বল থেকে উঠে আসা চ্যাংড়া যুবক। আশে পাশের ১৪ টা গ্রামের ভেতর বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া প্রথম ছেলে। সংগত কারনেই চরম এক অহংকার ভাব তার চোখে মুখে। সারাক্ষণই ধরাকে সরা জ্ঞান করে। তার কাছে সে নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের সবচেয়ে মেধাবী শিক্ষার্থী। অবশ্য গত সেমিস্টার ফাইনালে প্রতিটা সাবজেক্টে ধরা খেয়েছে। আজকাল খুব বিষন্ন দিন কাটে। পা এখন মাটিতে এসে পৌঁছেছে।

দক্ষিণ আফ্রিকা 

দক্ষিণ আফ্রিকা হলো ক্লাসের সেই ডিসেন্ট শিক্ষার্থী যার সারাবছরের পারফরমেন্স খুব ভাল। মিডটার্ম, কুইজ, প্রেজেন্টেশন সবকিছুতে খুব ভাল করে। শুধু ফাইনাল আসলেই ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াতে ভোগে। একারণে সিজিপিএর অবস্থা ভাল না। তাছাড়া পরীক্ষার সময়ে তার অসুস্থ হয়ে পড়ার বিশেষ ইতিহাস আছে।

নিউজিল্যান্ড

নিউজিল্যান্ড ক্লাসের আন্ডাররেটেড স্টুডেন্ট। কেউ তাকে তেমন দাম টাম দেয়না। টিচাররাও তেমন একটা চেনেনা। কিন্তু এক্সাম আসলে ফাটিয়ে দেয়। দেবে না কেন ভাগ্যটা যে খুব ভাল। যাই পড়ে এক্সামে তাই কমন পায়।

অস্ট্রেলিয়া

অস্ট্রেলিয়া হলো ড্যাশিং প্লেবয়। সারাবছর পড়াশোনার নাম নেই। খেলাধুলা, আড্ডাবাজি, প্রেম নিয়ে সারাবছর ব্যস্ত থাকে। অথচ এক্সাম শুরু হলে দেখা যায় সেই টপ করেছে। আগে অন্যরা হিংসা করত। এখন আর করে না। সবাই ধরেই নিয়েছে সে ধরা ছোঁয়ার বাইরে।

বাংলাদেশ

বাংলাদেশ হলো, মধ্যবিত্ত গরীব ও আবেগী এক স্টুডেন্ট। বাড়িতে তাকে নিয়ে অনেক আশা ভরসা। বাবা-মা, ছোট ভাই-বোন সবাই তার দিকে তাকিয়ে আছে। পরিবারের সুদিন তাকেই ফেরাতে হবে। টপ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সম্মানজনক কোনো রেসাল্ট করে ভাল একটা চাকরী পেলেই হলো।এবার ঘটনাটা আলাদা। প্রিপারেশন মোটামুটি হলেও এখন এ+ তোলাও অসম্ভব কিছু না। ধীরে সুস্থে পরীক্ষা দিচ্ছে। এখন যা অর্জিত হয় তাই বোনাস। বড় কিছু সামনে উঁকি দিচ্ছে।

বাংলা ইনসাইডার/এসএম



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭