ইনসাইড আর্টিকেল

শেখ হাসিনার কারাবন্দী দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 16/07/2019


Thumbnail

২০০৭ সালে বাংলাদেশের শাসনভার চলে যায় তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নেতৃত্ত্বাধীন ফখরুদ্দিন ও মইনুলদের দখলে। তাদের দেশকে দূর্নীতিমুক্ত করার সাজানো পরিকল্পনায় বেশ কয়েকটি দুর্নীতি মামলায় আসামী করে বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ- সভাপতি শেখ হাসিনাকেও। এই মামলার শিকার তখন প্রভাবশালী রাজনৈতিকদের মধ্যে অনেকেই হয়েছে কিন্তু শেখ হাসিনার নামে করা মামলাগুলো ছিলো একেবারেই মিথ্যে যা তিনি জেলে যাবার পূর্বে লিখে রেখে যাওয়া তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। তাকে নিয়ে যে সকল সময়েই ষড়যন্ত্র করা হতো তা তিনি টের পেতেন এবং সাহস না হারিয়ে বরং আরো নির্ভিকচিত্তে শত্রুকে মোকাবেলা করে নিজস্ব অস্তিত্বকে টিকিয়ে রেখেছেন! তাই গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তিনি চিঠিতে দেশবাসীর কাছে বলেছেন,

`প্রিয় দেশবাসী,

আমার সালাম নেবেন। আমাকে সরকার গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় জানি না। আমি আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যেই সারাজীবন সংগ্রাম করেছি। জীবনে কোনও অন্যায় করিনি। তারপরও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও আপনারা দেশবাসীর ওপর আমার ভরসা।

আমার প্রিয় দেশবাসী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে আবেদন কখনও মনোবল হারাবেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন। যে যেভাবে আছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। মাথা নত করবেন না। সত্যের জয় হবেই। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে, আমৃত্যু থাকব।আমার ভাগ্যে যা-ই ঘটুক না কেন আপনারা বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান। জয় জনগণের হবেই।

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বই। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবই।

জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু

শেখ হাসিনা`

অর্থাৎ কোনো দোষ না করেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রোষানলে পড়েন তিনি এবং এরই প্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ১৬জুলাই তাকে গ্রেপ্তার ক্রা হয়। এদিন ভোরে রাজধানীর ধানমণ্ডির ৫ নম্বর সড়কের ৫৪ নম্বরে প্রধানমন্ত্রীর নিজ বাসভবন- ‘সুধা সদন’ থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এসময় সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে তাকে রাখা হয়। তার গ্রেপ্তারের খবরে সারাদেশে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে সারাদেশের চেহারা। তারপরেও কতোগুলো মিথ্যা মামলার সাজানো পরিকল্পনায় দীর্ঘ এগারো মাস তিনি কারাবাস করেন শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে সীমাহীন কষ্টের মধ্য দিয়ে!

কিন্তু সত্যকে চেপে রাখা সম্ভব নয় কখনোই। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের তীব্র আন্দোলন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ২০০৮ সালের ১১ জুন শেখ হাসিনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জামিনে ৮ সপ্তাহের জন্য মুক্তি দেওয়া হয়, কেননা ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় তার কান এবং চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। পরে তিনি ৮দিনের জামিনে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে যান। চিকিৎসা শেষে ২০০৮ সালের ৬ নভেম্বর তিনি দেশে ফেরেন। এরই মধ্যে কয়েকদফা তার জামিনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। তারপর দেশে ফিরলে জনগণের দাবির মুখে তাকে স্থায়ী জামিন দেয় তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার।

গ্রেনেড হামলাসহ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রের শিকার একজন মানুষ যিনি চোখের সামনে নিজের দলের কর্মী ও নেতৃবৃন্দের আকস্মিক ও ভয়ংকর মৃত্যু দেখেছেন, নিজেও আহত হয়েছেন। এই মানসিক ও শারীরিক আঘাত থেকে বের হতে না হতেই মিথ্যে মামলা সাজিয়ে পুণরায় জেলহাজতে রেখে শাস্তি দেয়া জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিবেকের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল সেসময়। আর বাঙালি জাতি তখনই বুঝতে পেরেছিলেন আসলে কে এই জাতির জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করতে সদাপ্রস্তুত। তাই সে বছরই ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল সমর্থনে জনগণ তাকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করেন। আর এ সুযোগ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামীলীগ সভাপতি গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন পূরণ তথা বাংলাদশেকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে বিশ্ব মানচিত্রে স্থান দেয়ার ক্ষেত্রে কাজে লাগান।

আজ বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার এই কারাবন্দী দিবস। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগের অঙ্গ সংগঠন এবং বিভিন্ন সংগঠন আলোচনা সভা ও সমাবেশসহ নানা কর্মসূচী পালন করছে।

বাংলা ইনসাইডার/জেএফ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭