ইনসাইড আর্টিকেল

আজ বনফুলের জন্মদিন!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 19/07/2019


Thumbnail

বিদ্যালয়ের সবচেয়ে ভালো সংস্কৃত জানা ছাত্রটি হঠাৎ কবিতা লেখা শুরু করলেন। বিদ্যালয়ের সংস্কৃতের পণ্ডিত তখন কড়াভাষায় জব্দ করলেন সেই ছাত্রকে। বলে দিলেন, কবিতা লেখা চলবেনা, না মানে না! কিন্তু ছাত্রটিও নাছোড়বান্দা। কবিতা সে লিখবেই। খুঁজতে শুরু করলেন উপায়, কীভাবে পণ্ডিত শিক্ষককে লুকিয়ে কবিতা লেখা যায়! খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলেন একটি উপায় আর তা হলো ছদ্মনামের ব্যবহার- বনফুল! 

আজ বনফুলের জন্মদিন! বনফুলের জন্ম ১৯ জুলাই, ১৮৯৯। তিনি ‘নিমগাছ’র বনফুল! তাঁর প্রকৃত নাম-বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায়। তাঁর বাবা সত্যচরণ মুখোপাধ্যায় এবং মা, মৃণালিনী মুখোপাধ্যায়। জন্মের পরপরই তিনি মাকে হারান এবং বড় হয়ে ওঠেন বাড়িরই এক মুসলমান মজুর চামরুর বউয়ের স্তন্য পান করে। এই দুধমায়ের কাছেই তার প্রকৃতিকে চেনা, প্রকৃতির সান্নিধ্যলাভ!

বনফুল স্বভাবগতভাবে ছিলেন অত্যন্ত স্বাধীনচেতা এবং একরোখা স্বভাবের। স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরও তাঁর একরোখা স্বাভাবের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের সাথে ছিলো তাঁর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। অত্যন্ত দায়িত্বশীলতাও বনফুলের চরিত্রে দেখা যায় যখন তিনি শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের সাথে কোনও প্রত্যক্ষ পরিচয় না থাকা সত্ত্বেও ‘পারাপার’ উপন্যাসটি পড়ে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়কে চিঠি দিতে কসুর করেননা। একজন অপরিচিত লেখকের কাছে নিজের উপন্যাসের প্রশংসা- ‘তোমার এই উপন্যাসে কোনও বে-দাগ চরিত্র পেলাম না।’ দেখে শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় কিছুটা অবাকই হয়েছিলেন!

৪০ বৎসর ধরে প্যাথলজিস্টের দায়িত্ব পালন করা এই ডাক্তার ছিলেন একাধারে- কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, কবি। ১৯১৫ সালে  মালঞ্চ পত্রিকায় একটি কবিতা প্রকাশের মধ্য দিয়ে তাঁর সাহিত্যিক জীবনের শুরু। তখন তিনি সাহেবগঞ্জ স্কুলে পড়াতেন। শনিবারের চিঠি তে তিনি নিয়মিত ব্যঙ্গ কবিতা ও প্যারডি কবিতা লিখতেন যা সাহিত্য জগতে তাঁর নামকে প্রস্ফুটিত করে-বনফুল!

নিমগাছ-খ্যাত এই লেখক তাঁর লেখনীতেই নিজস্ব সংবেদনশীলতার পরিচয় দিয়েছেন। একজন গৃহবধূর সমস্ত জীবন এবং সেই জীবনের বাস্তবতাকে তিনি তুলে ধরেছেন মাত্র কয়েকটি লাইনে। মানুষের জীবনের অত্যন্ত সূক্ষ্ম অনুভূতির  সহজ প্রকাশ দেখা যায় তাঁর লেখায়!

তাঁর লেখা কাব্যগ্রন্থগুলো হলো- বনফুলের কবিতা, ব্যঙ্গ কবিতা, অঙ্গারপণী, চতুর্দশী, করকমলেষু ইত্যাদি।
উপন্যাস সম্পাদনাঃ তৃণখণ্ড- ১৯৩৫, বৈতরণীর তীরে-১৯৩৬, নিরঞ্জনা-১৯৫৫, ভুবন সোম-১৯৫৭, মহারাণী-১৯৫৮,, অগ্নীশ্বর-১৯৫৯, মানসপুর-১৯৬৬, এরাও আছে-১৯৭২, নবীন দত্ত-১৯৭৪, হরিশ্চন্দ্র-১৯৭৯, কিছুক্ষণ-১৯৩৭, সে ও আমি-১৯৪২ ইত্যাদি

তাঁর ছোটগল্প সঙ্কলনের মধ্যে রয়েছেঃ  বনফুলের গল্প, বনফুলের আরো গল্প, বাহুল্য, বিন্দু বিসর্গ, অনুগামিনী, বনফুলের শ্রেষ্ঠ গল্প বনফুলের গল্প সংগ্রহ – ১, বনফুলের গল্প সংগ্রহ – ২ ইত্যাদি।

নাটক সম্পাদনাঃ শ্রীমধুসূদন, বিদ্যাসাগর ইত্যাদি।

আমাদের বাংলা সাহিত্যের এই বনফুল ১৯৭৯ খ্রিস্টাব্দের ৯ ফেব্রুয়ারি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন।

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭