ইনসাইড হেলথ

ডেঙ্গুজ্বরের পর কেমন হবে রোগীর পরিচর্যা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 05/08/2019


Thumbnail

দেশে বিরাজ করছে ডেঙ্গু আতঙ্ক। হাসপাতালগুলোতে চলছে চিকিৎসা, সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে অসংখ্য লোক। কিন্তু ডেঙ্গু থেকে তো মুক্তি পেলেন, ডেঙ্গু পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা নিয়েও তো আপনাকে ভাবতে হবে। আবার জ্বরের পরে ডেঙ্গু আর কোনো সমস্যা তৈরি করতে পারে কিনা সেগুলো জেনে নেওয়া অবশ্যই জরুরি।

ডেঙ্গু পরবর্তী স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বিবিসি বাংলা‘র বেশকিছু চিকিৎসকদের মতামত, পরামর্শ নিয়ে প্রতিবেদনের কিয়দংশ নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা-

রোগতত্ত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে বিরাজমান আবহাওয়া যেমন কখনও প্রখর রোদ, আবার কখনও বা থেমে থেমে বৃষ্টি। এতে ডেঙ্গুবাহী এডিস মশার জন্ম বেশি হচ্ছে। ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনসহ স্থানীয় সরকার ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু মশা নির্মূল ও নিয়ন্ত্রণে মশার ওষুধ ছিটানোসহ ডেঙ্গু সম্পর্কিত নানা সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। হাসপাতালে ডেঙ্গু সন্দেহে জ্বর নিয়ে প্রতিদিন শত শত মানুষ আসছে, রোগ পরীক্ষা করছে।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, এবার যাদের ডেঙ্গু হচ্ছে তাদের মধ্যে জ্বর খুব একটা বেশি উঠছে না। আবার উঠলেও দুই-তিনদিনের মধ্যেই নেমে যাচ্ছে। আর ডেঙ্গুর প্রবণতাও আগের বছরগুলোর মতো নয়, এমনকি লক্ষণও আলাদা হচ্ছে।

আগের বারগুলোতে এডিস মশা কামড়ালে প্রচণ্ড জ্বর হতো। কিন্তু এবার আক্রান্তদের তাপমাত্রা খুব একটা বেশি হচ্ছে না। এবারের যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা এই অবস্থার নাম দিয়েছে ‘শকড সিনড্রোম’। তাই অল্প জ্বর হলেই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে বলছেন। তিন-চার দিনে জ্বর কমে আসার পরই মূলত ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর জটিলতা বেশি দেখা যাচ্ছে।

বলা হচ্ছে যে, রক্তের উপাদান কমে যাওয়া কিংবা রক্তের ঘনত্ব বেড়ে যাওয়ার মতো সমস্যা জ্বর চলে যাওয়ার পরই দেখা যায়। অনেকে মনে করেন জ্বর কমে গেলে আশঙ্কা থাকবে না। আসলে কিন্তু তা নয়। জ্বর কমে গেলেও চিকিৎসকদের পরামর্শমতো ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলেই ভয়ের কিছু থাকবে না।

এবার ডেঙ্গুতে বা পরবর্তীতে যেসব জটিলতা সাধারণত দেখা যায় তা হলো- রক্তের ভেতরের তরল অংশ বের হয়ে আসা, রক্ত ঘন হয়ে যাওয়া কিংবা রক্তের প্রেসার কমে যাওয়া- এর চিকিৎসা একটাই স্যালাইন নেওয়া বা প্রয়োজনে শিরায় স্যালাইন দেওয়া।

তবে রক্তের প্লাটিলেট নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। প্লাটিলেট অতিমাত্রায় কমে না গেলে এ নিয়ে ব্যবস্থাও নিতে হয় না। প্লাজমা লিকেজ বা রক্তের তরল অংশ কমে যাওয়ার কারণে সমস্যা হয়। তাই প্রয়োজনীয় স্যালাইন দেওয়ার পাশাপাশি ডাবের পানি, ওরস্যালাইন, লেবুর শরবত এসব প্রচুর পরিমাণে খাওয়াতে হবে যাতে প্রেসার কমে রোগী শক সিনড্রোম পর্যন্ত না যায়।

আর এটুকু করা গেলেই ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে ভয়ের কিছু নেই। তরল খাবার ঠিকমতো খেলে ডেঙ্গু নিয়ে ভয়ের কোনো কারণ নেই। জ্বর চলে গেলে রোগীকে সচেতনভাবে চিকিৎসকের পরামর্শমতো চলতে হবে, তাহলেই আর সমস্যা হবে না।

জ্বর চলে গেলে সাধারণত ভাইরাসটিও আস্তে আস্তে বিদায় নিতে থাকে। এরপর ভাইরাসের যেসব প্রতিক্রিয়া বিশেষ করে রক্তের তরল উপাদান কমে যাওয়া তার চিকিৎসা ঠিকমতো হওয়াটাই এর সমাধান।

যেটুকু সময় জ্বর থাকে শুধু সে সময়টুকুই ভাইরাসটা সচল থাকে। এরপর অ্যান্টিবডি তৈরি হলে ভাইরাসটা আর থাকার সুযোগ নেই। অর্থাৎ আক্রান্ত রোগীর রক্তের প্লাটিলেট কাউন্ট উন্নত হলে ভাইরাস আর থাকে না।

রোগী সচেতন হলেই ঝুঁকি এড়ানো যায়। কিন্তু দেরি হলে ঝুঁকি তৈরি হয়। মোটকথা জ্বর চলে গেলই যে ভালো হয়ে গেলেন তা নয়। পুরোপুরি বিশ্রাম নিতে হবে এবং প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে।

সূত্র: বিবিসি বাংলা

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭