লিভিং ইনসাইড

কুরবানীর আগে এবং কুরবানীর পরে আপনার করণীয়-বর্জনীয়

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 11/08/2019


Thumbnail

রাতটা পোহালেই আগামীকাল ঈদুল আযহা। ত্যাগের মহিমায় ভাস্বর এই কুরবানীর ঈদের মোটামুটি সব ধরনের প্রস্তুতিই আমরা শেষ করার পথে। শুধু অপেক্ষা পশু কুরবানীর। প্রকৃতিতে বর্ষাকাল, চারিদিকে ডেঙ্গুর প্রকোপের মধ্যে কুরবানীর আগে এবং পরের পরিচ্ছন্নতা এখন সবচেয়ে জরুরি। কিন্তু শহরের চিত্রগুলোর দিকে তাকালেই বোঝা যায় যে, কুরবানীর সময়ে কতটা অপরিচ্ছন্ন হয়ে থাকে চারদিক। রাস্তাঘাটে বর্জ্য আর রক্তের গন্ধে টেকাই যায় না। তাই আপনাকে সবার আগে হতে হবে সচেতন এবং পরিচ্ছন্ন।

কুরবানীর আগে এবং কুরবানীর সময়ের পরিচ্ছন্নতা

পশুকে অবশ্যই কুরবানীর আগে ভালো করে গোসল করিয়ে নিন। কুরবানীর আগে প্রয়োজনীয় ছুরি আছে কি না এবং সেগুলো যথেষ্ট ধারালো কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে নিন। কুরবানীর দেওয়ার স্থান যথেষ্ট পরিষ্কার আছে কি না সেদিকে নজর দিন। স্থানটি সাবান পানি ছিটিয়ে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। চাটাই থেকে শুরু করে তক্তা পর্যন্ত সবকিছু যোগাড় করে সেগুলো পরিষ্কার করে রাখুন।

সবচেয়ে ভালো হয় কুরবানীর জন্য রাস্তাঘাট ব্যবহার না করা। একটু কোলাহলের বাইরে কোনো খোলামেলা পরিবেশে পশু কুরবানী করলে জীবাণু খুব বেশি ছড়াতে পারে না।

নাড়িভুঁড়ি এবং ক্ষুর আলাদা করে ফেলে দিন, নয়ত মাংসে জীবাণুর সংক্রমণ ঘটবে। মাংস যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কেটে বিলিয়ে দিন এবং বাকিটা দ্রুত ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখুন।

কুরবানীর পরের পরিচ্ছন্নতা

কুরবানীর পরের পরিচ্ছন্নতা সবচেয়ে বেশি জরুরি। সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করা এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থাপনা কমিটির সহযোগিতা নেওয়া যেতে পারে। এলাকাভিত্তিক ব্যক্তিগত বা সমষ্টিগত ছোটো পদক্ষেপই বৃহৎ আকারে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। কুরবানী করা পশুর হাড়, লেজ, কান, মাথার খুলি ও পায়ের অবশিষ্টাংশ অবশ্যই এলাকার নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে দিতে হবে। চেষ্টা করতে হবে কোনো মোটা প্লাস্টিকের ব্যাগে জড়িয়ে সেটি কাছাকাছি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেওয়া। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ১-২ দিনের মধ্যেই তা সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে উদ্যোগ নিয়ে থাকে। কোরবানির সময় ব্যবহৃত পাটি, হোগলা, ন্যাকড়া, কাপড় বা কাঠের গুঁড়ি- এ ধরনের সামগ্রী রাস্তায় না ফেলে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলার ব্যবস্থা করতে কুরবানী আদায়কারীর সচেতন হতে হবে। কুরবানী যেন অন্যের বিরক্তি বা অসুবিধার কারণ না হয় সেদিকে অবশ্যই যত্নবান থাকতে হবে।

বর্জ্য অপসারণ

কোরবানির ক্ষেত্রে পশু জবেহ শেষে তার রক্ত ও শরীরের যাবতীয় উচ্ছিষ্ট যথাযথভাবে অপসারণ করা জরুরি। গরু জবাইয়ের গর্তটি মাটি দিয়ে ঢেকে দিন। গর্তের মধ্যে কিছু চুন বা ব্লিচিং পাউডার বা জীবাণুনাশক পদার্থ দিন। আর আশেপাশে যদি কোনো বর্জ্য থাকে তাহলে তা ঝাড়ু দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে। এছাড়া রক্তপানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। নাড়িভুঁড়ি বা এ জাতীয় বর্জ্য কোনোভাবেই পয়ঃনিষ্কাশন নালায় ফেলা যাবে না।

নাড়িভুঁড়ির উচ্ছিষ্ট

পশুর দেহ থেকে নাড়িভুঁড়ির উচ্ছিষ্ট বের করে যত্রতত্র ফেলে দিলে তা পচে মারাত্মক দুর্গন্ধ ছড়াবে এবং পরিবেশ দূষিত হয়ে বিভিন্ন রোগ ছড়াবে। তাই যথাযথ স্থানে ফেলতে হবে।

গরম পানি

যে স্থানটিতে পশু জবাই করবেন ওই স্থানটি সম্ভব হলে গরম পানি ঢেলে পরিষ্কার করতে পারেন বা ঠাণ্ডা পানি হলেও চলবে। তবে পানি দিয়ে স্থানটি পরিষ্কার করার পর অবশ্যই ব্লিচিং পাউডার ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে দূর্গন্ধ ছড়াবে না এবং জীবাণুমুক্ত হবে।

স্যাভলন

বর্জ্য পরিষ্কারের পরে যে কাজটি করতে হবে সেটি হলো আপনার হাত, পা ও সারা শরীর ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিন। পরিস্কারের জন্য স্যাভলন ব্যবহার করতে পারেন। রক্ত যেন শুকিয়ে না-যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

সবচেয়ে বড় কথা হলো, এখন ডেঙ্গুর মৌসুম চলছে। পানি দিয়ে চারপাশ এমনভাবে পরিস্কার করতে হবে যাতে করে কোথাও কোনো পানি জমে না থাকে। ড্রেন বা কোনো নালায় সরাসরি বা ঝাড়ু দিয়ে রক্তমিশ্রিত পানি বা উচ্ছিষ্ট ফেলবেন না। ড্রেন বা নালায় কোনোভাবে পানি জমে গেলে দুর্গন্ধ তো হবেই, মশা, পোকামাকড়ও জন্মাবে প্রচুর।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭