ইনসাইড আর্টিকেল

জাতির পিতার স্বপ্ন ও আজকের বাংলাদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/08/2019


Thumbnail

১৯৭৫ থেকে ২০১৯- দীর্ঘ ৪৩ বছর পেরিয়ে আবারও এসেছে আগস্ট। পঁচাত্তরের এই আগস্টেই বাংলাদেশের রূপকার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছিল। হত্যাকারীরা শুধু জাতির পিতাকেই হত্যা করেনি, ওরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাকে বিলীন করে দিতে চেয়েছিল। ওরা গোটা দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। জাতির পিতার প্রয়াণের পর পেরিয়ে গেছে ৪৩ বছর। আজ কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ? ষড়যন্ত্রকারীদের নীলনকশা কি বাস্তবায়িত হয়েছে? নাকি জাতির পিতার স্বপ্নেরই জয় হয়েছে?

বাংলাদেশ সবসময়ই একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। প্রায় প্রতিবছরই এদেশে ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাস হানা দেয়। আর লণ্ডভণ্ড করে দেয় বিস্তীর্ণ জনপদ। কেড়ে নেয় বহু প্রাণ। দেশে মানুষের এই দুর্ভোগ কীভাবে দূর করা যায় তা নিয়ে সবসময়ই ভাবতেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের অধীনে থাকার সময় দুর্যোগ পরিস্থিতিতে শাসকদের অবহেলা অব্যবস্থাপনা নিয়ে সোচ্চার হতেন তিনি।

সত্তরের ভয়াবহ দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘যদি প্রলয়ের ২০ ঘন্টার মধ্যে ব্যাপকভাবে উদ্ধারকাজ ও সাহায্য অভিযান চালানো হতো, তাহলে হাজার হাজার লোককে বাঁচানো সম্ভব হতো। হাজার হাজার লোক- যারা প্রলয়ের ধাক্কা সামলেও টিকে ছিল তাদেরকেও অনাহার, অনাশ্রয় ও বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুবরণ করতে হতো না।’

জাতির পিতার এই কথার মধ্য দিয়ে তাঁর আর্তনাদ প্রকাশ পেয়েছিল। তিনি চাইতেন ঝড়-বন্যার আগে থেকেই দেশের সরকার মানুষকে রক্ষা করতে ব্যবস্থা নিয়ে রাখুক। একই সঙ্গে দুর্যোগ পরবর্তী সময়েও সুশৃংখল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবেলা করুক। বঙ্গবন্ধু জানতেন যে, সুশৃংখল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাই প্রাণহানি কমিয়ে আনতে পারে।

আজকের বাংলাদেশ অন্য সবকিছুর মতো দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাতেও বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করেছে। দুর্যোগ মোকাবেলা, উদ্ধার তৎপরতা এবং সর্বস্তরের মানুষের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আজ এক বিস্ময়। ৯৮ এর বন্যা, ২০০৭ এ ঘূর্ণিঝড় সিডর, ২০০৯ এ আইলা এবং এর পরবর্তী সময়েও প্রতিবার দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সাফল্য দেখিয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যাও শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে।

বর্তমানে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় বাংলাদেশকে একটা রোল মডেল রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হয়। এদেশ যেভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে সেটা সারা বিশ্বের জন্য একটা অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। সর্বশেষ ফণী মোকাবেলার ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ এর প্রমাণ দিয়েছে।

উন্নত দেশগুলোতে দেখা যায় যে, টর্নেডো বা ঘূর্ণিঝড় হলে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়। জরুরি অবস্থা জারি করা হয়, সবকিছু বন্ধ করে দেওয়া হয়। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলেও এমনটাই দেখা যায়। কিন্তু এই দেশগুলোতেই প্রস্তুতির মধ্যে সমন্বয়ের কিছুটা অভাব থেকে যায়। ফলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটে। কিন্তু বাংলাদেশ সেখানে ব্যতিক্রম। বাংলাদেশ সমন্বিতভাবে দুর্যোগ মোকাবেলার প্রস্তুতি নেয়।

বাংলাদেশ যে দুর্যোগ মোকাবেলায় রোল মডেল এর এমটি কারণ হলো, এদেশের মানুষের সহজাত দুর্যোগ মোকাবেলার সাহস, কৌশল এবং মানুষের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি। আরেকটি হলো, সরকারের ব্যবস্থাপনা। এই দুটির সমন্বয়ে বাংলাদেশ দুর্যোগ মোকাবেলায় অত্যন্ত দক্ষ হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে জাতির পিতার পিতার স্বপ্নকেও সত্য করেছে। বাংলাদেশ এখন আর দুর্যোগ এলে আতঙ্কিত হয় না, বরং সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে তা মোকাবেলা করে।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭