ওয়ার্ল্ড ইনসাইড

ভারতের চন্দ্রযানে কেন এত সোনা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/08/2019


Thumbnail

ভারতের যেই চন্দ্রযানটি চাঁদে অভিযানে গেছে সেটার পুরোটাই সোনা দিয়ে মোড়ানো। চন্দ্রযান-২ এর ভিতরে থাকা ল্যান্ডার ‘বিক্রম’ও সোনায় মোড়া। আর বিক্রমের ভেতরে লুকিয়ে থাকা রোভার ‘প্রজ্ঞান’, যেটি চাঁদের মাটিতে চষে বেড়াবে সেটারও একই অবস্থা। ভারতের চন্দ্রযান জুড়ে কেন এত সোনা, সেগুলো আসল নাকি নকল তা নিয়েও উঠছে নানা প্রশ্ন।

ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো বলছে, একেবারে নিখাদ সোনা যেমন আমরা গায়ে পরতে পারি না, তেমনই চন্দ্রযান-২ এর গা মোড়া যে সোনায়, সেটাও সত্যিকারের সোনা নয়। আবার স্যাকরার দোকানে ‘সোনার জল’ বলতে যা বোঝানো হয়, তাও নয়। ওই সোনা আসলে ‘পলিমাইড’ ও অ্যালুমিনিয়ামের একটি মিশ্র ধাতু বা সংকর ধাতু। যার সামনের দিকটায় রয়েছে পলিমাইড পদার্থ। আর পিছনের দিকটায় রয়েছে অ্যালুমিনিয়াম।

চন্দ্রযান-২ এ কেন এই বিশেষ ধাতুর দরকার হলো সে সম্পর্কে বিশিষ্ট জ্যোতির্বিজ্ঞানী সন্দীপ চক্রবর্তী বলছেন, মহাকাশযানের ওই সোনার সাজসজ্জা দু’রকমের সমস্যা মেটাতে প্রধান ভূমিকা নেয়। পলিমাইড এমন এক ধরনের পদার্থ, যার পিঠে এসে আছড়ে পড়া সূর্যরশ্মি বা বিকিরণ অথবা মহাজাগতিক রশ্মির বেশির ভাগটাই প্রতিফলিত হয়ে ফিরে যায়। পলিমাইডের মধ্যে দিয়ে সেই রশ্মি বা বিকিরণ গলে যেতে পারে না। ফলে, মহাকাশযানের পিঠে পলিমাইডের ওই ‘সোনার সাজ’ থাকলে সূর্যরশ্মি বা ক্ষতিকর বিকিরণের জন্য তা সেই দিকের যন্ত্রগুলিকে অসম্ভব গরম হয়ে পড়ার হাত থেকে বাঁচায়।

এই স‌োনার সাজে না সাজালে চন্দ্রযান-২, বিক্রম আর প্রজ্ঞানকে চাঁদের মুলুকে খুব বেশি ক্ষণ সচল রাখা যেত না। তারা নিস্তেজ হয়ে পড়ত অচিরেই।

জোতির্বিজ্ঞানীরা বলছেন, মহাকাশে গেলে যে কোনও মহাকাশযানকেই সইতে হয় দু’রকমের ধকল। হয় তাদের পিঠে আছড়ে পড়ে সূর্যের অসম্ভব জোরালো আলো, ক্ষতিকর বিকিরণ। না হলে মহাজাগতিক রশ্মির (কসমিক রে) ঝড়, ঝাপটা। আর সেগুলি অসম্ভব গতিতে এসে আছড়ে পড়ে বলেই কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে মহাকাশযানে থাকা যন্ত্রগুলি অসম্ভব গরম হয়ে যায়। আর সেই খুব বেশি তাপমাত্রায় যন্ত্রগুলির পক্ষে আর কাজ চালিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। সেগুলি বিকল হয়ে পড়ে। আবার মহাকাশযানের যে দিকটায় সূর্যের আলো একেবারেই পড়ে না, বা পড়লেও তা নেহাৎই হয় যৎসামান্য, সেই দিকটার যন্ত্রগুলিকে সচল রাখার ক্ষেত্রে সমস্যাটা হয় ঠিক উল্টো। মহাকাশের হাড়জমানো ঠান্ডায় সেই দিকটার যন্ত্রগুলি দিয়ে আর কাজ চালানো যায় না। সেগুলি নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এই ধকল থেকে চন্দ্রযানকে বাঁচাতেই বিশেষ সোনা বেছে নিয়েছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো।

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭