লিভিং ইনসাইড

কেন এতো বিয়ের চাপ দিচ্ছেন বাবা-মা?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/08/2019


Thumbnail

ফেসবুকে খুব আয়েশ করে কাছের বন্ধুর বিয়ের ছবি দেখছিলেন। একটু শখ করে মাকে দেখালেন সেই ছবি। মা তো দেখে প্রথমে খুশিই হলেন। পরক্ষণেই শুরু হলো মায়ের একগাদা আফসোস। তিনি বলতে শুরু করলেন, ‘আজ তোমারও এমন ঘটা করে বিয়ে হওয়ার কথা। আশেপাশে সবাই তোমার বিয়ে নিয়ে কতো কথাই না বলছে। তুমি কেন বিয়ে না করে একা থাকছো সেটাই তো বুঝতে পারছি না।’

অমুক আত্মীয়, তমুক পরিচিতের কথা বলে আপনার বাবা-মা নিয়মিতই আপনার কাছে হাজির হচ্ছেন। উদ্দেশ্য একটাই, আপনাকে তাড়াতাড়ি বিয়ে করানো। এখন কিছুতেই বিয়ে করতে রাজি হচ্ছেন না আপনি। বিয়ে করতে আপনি এখনই ইচ্ছুক না, সেটা তারা বুঝছে না। উল্টো দুইপক্ষেই রাগ অভিমান বাড়ছে। মনে প্রশ্ন জাগছে, কেন এমন করছেন বাবা-মা?

এর অবশ্যই কিছু কারণ তো আছে। সেজন্যই বাবা-মা আপনার বিয়ে নিয়ে ভাবছে। সেগুলো আপনাকে না বললেও আপনার নিজ থেকেই বুঝে নিতে হবে। সেগুলো নিয়েই থাকছে আমাদের আজকের আলোচনা-

আত্মীয় ও বন্ধুদের কাছে জবাব দিতে দিতে ক্লান্ত

আপনাদের কাছের বা দূরের আত্মীয়, প্রতিবেশী আর বন্ধুরা প্রতিনিয়তই আপনার বাবা-মাকে প্রশ্ন করে বিব্রত করে ফেলেন- ‘ছেলেকে বা মেয়েকে বিয়ে দিচ্ছেন কবে, বয়স তো থেমে থাকছে না, উপযুক্ত সঙ্গী পাচ্ছেন না নাকি অন্য কোনো কারণ?’ আপনার বিয়ে নিয়ে এমন জবাবদিহি করতে করতে ইতিমধ্যেই বাবা-মা ক্লান্ত। আর তাই তারা চান, দ্রুত আপনাকে ভালো একজন মানুষের সঙ্গে বিয়ে দিতে চান।

বাবা-মায়ের ওপর তাদের অভিভাবকদের চাপ

আপনার বাবা-মায়েরও নিশ্চয়ই দু-চারজন অভিভাবক আছেন। আপনার দাদা-দাদী, নানা-নানীও চাইছেন যে আপনি দ্রুত বিয়ে করে ফেলেন। আর তাই তারা তাদের সন্তানদের অর্থাৎ আপনার বাবা-মা কে চাপ দিচ্ছেন নিয়মিত। আপনি বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করায় আপনার বাবা-মাকে দোষারোপ করছেন তারা। এতে করে বাবা-মা কখনোবা রেগেও যাচ্ছে আপনার ওপর।

নাতি-নাতনির মুখ দেখার খায়েশ

একটি সংসারে শিশুরা নতুন প্রাণ বয়ে নিয়ে আসে যেন। সন্তান বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাবা-মায়ের সঙ্গে দূরত্ব বেড়ে যায়। ফলে তাদের একাকীত্বও বেড়ে যায়। আর তাই বাবা-মায়েদের ইচ্ছে হয় নাতি-নাতনির মুখ দেখার। ঘরময় তাদের উচ্ছলতা দেখার ইচ্ছা থেকেই আপনাকে জলদি বিয়ের বন্দোবস্ত করতে চান তারা।

আপনি যদি সম্পর্কে জড়িয়ে থাকেন বা একাধিক প্রেমের সমস্যা

আপনি হয়ত কোনো না কোনো সময়ে প্রেম করেছেন, তাতে নসফলতা বা ব্যর্থতা দুটোই আসতে পারে আপনার। এই প্রেম দেখতে দেখতে বাবা-মা বিরক্ত আপনার প্রতি। আপনাকে বিমর্ষ দেখেও হয়তো তাদের ভালো লাগে না। তারা চান আপনার একটা গতি হোক। আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা দুশ্চিন্তায় আছেন। একাধিক বার সম্পর্ক পরিবর্তনের কারণে নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কিত তারা। আর তাই আপনাকে তাড়াতাড়ি একটা আশ্রয় করে দিতে তাদের তো চেষ্টা থাকবেই।

তাদের অবর্তমানে আপনার দেখাশোনার জন্য

আপনার অভিভাবক প্রায়ই ভাবেন, তাদের অবর্তমানে আপনার একাকীত্বের কথা। তাই তারা চান আপনি দ্রুত একজন জীবনসঙ্গী বেছে নেন। এতে তাদের অবর্তমানেও আপনার পাশে সঙ্গ দেয়ার মানুষ থাকবেন। আপনি তো একা থাকতে পারবেন না। আপনার পাশে থাকা, ভরসা দেওয়ার জন্য আপনার পাশে সর্বক্ষণ একটা মানুষ থাক, এটা তো তারা চাইবেই।

আগে তো সবাই কম বয়সেই বিয়ে করতো

আগেরদিনের মানুষ সাধারণত কম বয়সেই বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতো মানুষ। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। বয়স ত্রিশের কোটায় চলে গেলেও আজকাল বিয়েমুখো হতে চান না কেউ। হতাশা, বিয়ে নিয়ে ভয়, ক্যারিয়ার- সব মিলিয়ে বিয়েটা কেমন যেন অসহ্য মনে হয়। কিন্তু বিষয়টি অনেক অভিভাবকই মানতে পারেননা। তাদের কাছে মনে হয়, আপনার বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে এ ধরনের চাপ বেশি থাকে।

‘কেউ তো তোমার মতো বসে নেই’

বাবা-মা অবিবাহিত সন্তানকে প্রায়ই বলে ফেলেন যে, ‘দেখো আশেপাশে কেউ তোমার মতো বসে নেই। সবাই সংসারধর্ম, সন্তান নিয়ে দিব্যি ভালো আছে। আর তুমি আছো তোমার মতো করে।’ এই কথাগুলো একেবারে কমন। আপনি যদি চাকরি করেন, কর্ম থাকলে তাও একটা কথা থাকে যে আপনার কোনো কাজ আছে। কিন্তু বেকার বসে থাকলে বাবা-মা এই কথাগুলো বেশি করে শোনাবে। বিশেষ করে আশেপাশে কেউ যদি সন্তানকে নিয়ে টিপ্পনি কেটে কোনো কথা বলে বসে, সেক্ষেত্রে বাবা-মা একেবারেই সহ্যের বাইরে চলে যায়।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭