ইনসাইড গ্রাউন্ড

বিদায় ফার্নান্দো তোরেস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/08/2019


Thumbnail

ফার্নান্দো তোরেস। ১৮ বছরের ফুটবল ক্যারিয়ারের ইতি টানলেন জাপানিজ ক্লাব সাগান তসু’র জার্সি গায়ে। ইতিহাসের অন্যতম সেরা স্ট্রাইকারের তকমা গায়ে মেখে উঠিয়ে রাখলেন বুটজোড়া। যদিও শেষটা ভাল হলো না এই স্প্যানিয়ার্ডের। বিদায়ী ম্যাচে ইনিয়েস্তার ভিসেলে কোবের কাছে ৬-১ গোলের পরাজয় বরণ করতে হয়েছে তোরেসের দলকে। 

ফুটবলে যদি ‘নন-ননসেন্স প্লেয়ার’ নামে কোনো খেলোয়াড়কে আখ্যায়িত করা যায়, ফার্নান্দো তোরেস তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ। লিভারপুলে গোল করার সহজ সুযোগ পেয়ে তোরেস কাজে লাগাতে পারেননি, সেটা কখনো হয়নি। যার দরুন লিভারপুল সমর্থকেরা ‘He gets the ball and scores again’ নামক একটি জনপ্রিয় গান গাইত সবসময়।

অসামান্য ড্রিবল করার সামর্থ্য তার ছিলো না, চমকে দেবার মতো শারীরিক সক্ষমতাও তার ছিলো না। তবে মোক্ষম সময়ে সঠিক স্থানে চলে যাবার মতো দক্ষতা তার ছিলো, যে কারণে তিনি পেয়েছিলেন সেরা স্ট্রাইকারের খেতাব। দারুণ সেন্স অফ হিউমার আর প্রবল গতিতে দৌড়ানোর দক্ষতার কারণে স্টিফেন জেরার্ডের সাথে তোরেসের বনিবনা হতো দারুণ।

স্পেনের ফুটবলের সেরা প্রজন্মের অন্যতম নায়ক তোরেস। স্পেনের টানা দুই ইউরো এবং একটি বিশ্বকাপ জয়ে দলের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়দের একজন ছিলেন। ২০০৮ সালের ইউরোর ফাইনালে জার্মানির বিপক্ষে গোল করে দলের জয় নিশ্চিত করেন তোরেস। আর ফাইনালের ম্যান অব দ্য ম্যাচও নির্বাচিত হন। ২০১০ সালের বিশ্বকাপ জয়েও দলে অপরিহার্য ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি।

ফিফার সেরা দলে দুইবার জায়গা করে নিয়েছিলেন তোরেস। ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে ফিফার সেরা একাদশের অন্যতম ফুটবলার ছিলেন তিনি। এছাড়াও ২০০৮ সালের ব্যালন ডি অরের তৃতীয় স্থান অর্জন করেন তিনি।

লা রোহাদের হয়ে মোট ১১ বছর খেলেছেন তোরেস। ২০০৩ সালে অভিষেকের পর ২০১৪ বিশ্বকাপ পর্যন্ত খেলা চালিয়ে গেছেন। স্পেনের ইতিহাসের তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতা তিনি। ১১০ ম্যাচে লক্ষ্যভেদ করেছেন ৩৮ বার। তোরেসের সামনে রয়েছেন ডেভিড ভিয়া (৫৯ গোল) ও রাউল (৪৪ গোল)। ২০১২ ইউরো ও ২০১৩ কনফেডারেশন্স কাপে সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার গোল্ডেন বুট জিতছিলেন তিনি।

অ্যাথলেটিকোর জার্সি গায়ে চড়িয়ে ২০০১ সালে ক্লাব ফুটবলে যাত্রা শুরু তোরেসের। এরপর কেবল সামনে এগিয়ে চলা। ক্যারিয়ারের সব থেকে বেশি সময় অতিবাহিত করেছেন অ্যাতলেটিকোর জার্সি পরেই। এরপর ২০০৭ সালে পাড়ি জমান ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলে। লিভারপুলের হয়ে ২০০৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত চার মৌসুমে ১০৫টি ম্যাচ খেলেন। আর নামের পাশে যোগ করেন ৬৫টি গোল। এর আগে অ্যাতলেটিকোর হয়ে ২১৪ ম্যাচে করেছেন ৮২টি গোল।

২০১১ সালে লিভারপুল অধ্যয়ের সমাপ্তি টেনে যোগ দেন লন্ডনের ক্লাব চেলসিতে। সেখানে খেলেছেন ২০১৫ সাল পর্যন্ত। এই চার মৌসুমে ব্লুজদের হয়ে তোরেস ১১০ ম্যাচে ২০টি গোল করেছেন। চার বছর পর পাড়ি জমান ইতালিয়ান জায়ান্ট এসি মিলানে। তবে সে সময় মিলানের সাফল্যের সুর্যটা ডুবতে শুরু করেছিল।

নিজের ক্যারিয়ারের শেষভাগে এসে নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেননি তোরেস। যেখানে শুরু করেছিলেন, সেই অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের জার্সি গায়ে আবারো ফিরেছিলেন ক্যারিয়ারের শেষভাগে। তবে সেখানেও ভাগ্য ফেরেনি তার। অবশেষে তার শেষ ম্যাচটা খেলতে হলো জাপানি ক্লাব সাগান তসুর হয়ে।

অনেকে হয়তো ফার্নান্দো তোরেসকে স্মরণে রাখবে চেলসি ফ্লপ হিসেবে, তবে লিভারপুলে কাটানো তার দুর্দান্ত সময়কে চেলসির ব্যর্থ সময় দিয়ে যে কখনো চাপা দেওয়া যাবে না। লিভারপুল ছেড়ে যাবার কারণে তোরেসকে অনেক লিভারপুল সমর্থক এখনও ঘৃণার চোখে দেখে। ঘৃণা, অভিমান থাকলেও লিভারপুলে তিন বছরের রোমাঞ্চকর তোরেস অধ্যায় ভুলে যাওয়ার সাধ্য কারও আছে?

বাংলা ইনসাইডার/এসএম  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭