ইনসাইড বাংলাদেশ

পারিবারিক কোন্দলে রংপুর সদরে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারছে না জাপা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 24/08/2019


Thumbnail

জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ আসনে জাপার প্রার্থী চূড়ান্ত করা নিয়ে হযবরল অবস্থা। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত এ আসনে প্রার্থী না দিলেও এরশাদের জাপায় পারিবারিক বিরোধ চরম পর্যায়ে পৌছেঁছে। সিদ্ধান্তহীনতায় দলটি। ভাবী-দেবরের বিরোধে এ আসনটি হাতছাড়া হবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে বলে অভিমত দিয়েছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। এমনটি হলে বিএনপি এ আসনে শক্ত প্রার্থী দিলে কাঙ্খিত ফল তাদের পক্ষে আসবে বলে মনে করছেন অনেকেই। যদিও জাপা নেতারা এমনটি বিশ্বাস করতে নারাজ। তাদের মতে, জাপার আসন জাপারই থাকবে।

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সদর আসনের এমপি হিসেবে মনোনয়ন পেতে জাপার প্রভাবশালী অনেকেই দৌড়ঝাঁপ করছেন। কিন্তু প্রকাশ্যে কেউ প্রার্থীতা ঘোষণা করার সাহস পাচ্ছেননা রোষানলে পড়ার ভয়ে। জাপা সূত্র বলছে.প্রার্থিতায় চমক থাকতে পারে। এরশাদ পরিবারের ৪ সদস্যের পাশাপাশি দলের অন্তত তিনজন নেতা ওই আসনে নির্বাচন করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে কিছুটা বেকায়দায় পড়েছেন দলটির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদের সঙ্গে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারছেন না তিনি।

চমক হিসেবে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের নিজেই এ আসনে প্রার্থী হতে পারেন। তিনি নিজে না হলে ওই আসনে তার ভাই আমেরিকা প্রবাসী ড. হুসেইন মুর্শেদ প্রার্থী হতে পারেন। সেক্ষেত্রে জিএম কাদেরর লালমনিরহাট-৩ আসনে দেখা যেতে পারে অন্য কাউকে। রংপুর-৩ আসনের মনোনয়ন নিয়ে বিরোধ থেকেই জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছিলেন দলটির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ। গোলাম মোহাম্মদ কাদের ও বেগম রওশন এরশাদ বিভিন্ন ইস্যুতে নিজেদের মধ্যে দর কষাকষি করতেই এ সব বিষয়গুলোকে অমীমাংসিত রাখতে চান। গোলাম মোহাম্মদ কাদেরকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হিসেবে মানতে বেগম রওশন এরশাদের কোনো আপত্তি নেই, যদি তাকে বিরোধী দলীয় নেতা করা হয়। তাই গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ ইস্যুকে কেন্দ্র করেই বাকিগুলো নিজের নিয়ন্ত্রণে রাখতে চান।

জানা গেছে, রংপুর-৩ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের মধ্যে রয়েছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছোট ভাইয়ের ছেলে সাবেক সংসদ সদস্য আসিফ শাহরিয়ার। দলীয় মনোনয়ন না পেলেও স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে তিনি ওই আসনে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

এ ছাড়া এরশাদ পরিবারের অন্যতম সদস্য হিসেবে মনোনয়ন প্রত্যাশী তার মামাতো ভাইয়ের ছেলে মেজর (অব.) খালেদ আখতার। তিনি দীর্ঘদিন চাচা এরশাদের একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। মনোনয়ন প্রত্যাশী এরশাদের বোন সাবেক সংসদ সদস্য মেরিনা রহমানের মেয়ে মেহেজেবুন্নেছা রহমান টুম্পাও। তিনি জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলুর স্ত্রী।

জাতীয় পার্টি সূত্রে আরও জানা গেছে, রংপুর-৩ আসনে মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন এরশাদ-রওশন দম্পতির সন্তান রাহগীর আল মাহি সাদ এরশাদ। আর এতেই ঘটেছে বিপত্তি। মা রওশন এরশাদ বাবার আসনে সাদকে মনোনয়ন দেয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।

জাতীয় পার্টির বিভিন্ন পর্যায়ের একাধিক নেতা জানিয়েছেন, রংপুর-৩ আসনে দলীয় মনোনয়নের অন্যতম দাবিদার জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এস এম ফখর-উজ-জামান। তিনি দীর্ঘদিন জাতীয় পার্টির সঙ্গে আছেন এবং শিল্পপতি হওয়ার সুবাদে বিভিন্ন কর্মসূচিতে মোটা অঙ্কের অনুদান দিয়ে থাকেন। শিল্পপতি এস এম ফখর-উজ-জামান এরশাদের বাবা মকবুল হোসেন ট্রাস্টের অন্যতম ট্রাস্টি।

জানা গেছে, রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসির ওই আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীরা এস এম ইয়াসিরকে মনোনয়ন দেয়ার দাবি জানিয়ে আসছেন।

এরশাদের মৃত্যুর পর গত ১৬ জুলাই শূন্য ঘোষণা করা হয় জাতীয় সংসদের রংপুর-৩ আসন। শূন্য ঘোষিত এ আসনে আগামী তিন মাসের মধ্যে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী কোনও সংসদীয় আসন শূন্য ঘোষণা করা হলে ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাকতা রয়েছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭