লিভিং ইনসাইড

আপনার লক্ষ্য যখন বিসিএস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 17/09/2019


Thumbnail

সামনে মাস্টার্স ফাইনাল, আবার এরমধ্যে তারিখ পড়েছে বিসিএস প্রিলিমিনারির। আপনার তো মাথায় হাত। মাস্টার্সের প্রস্তুতি তো মোটামুটি নিয়েছেন, কিন্তু বিসিএসের প্রস্তুতি আপনার শেষ হয়নি। এতো কম সময়ে এতো পড়া যায়! তখন কপাল চাপড়াতে চাপড়াতে মনে হবে, ইস একটু আগে থেকে যদি বিসিএসের প্রস্তুতি একটু একটু করে নিতে থাকতাম তাহলে আজ এই চিন্তায় পড়তে হতো না। ওদিকে বিসিএস আপনার স্বপ্ন। দেশের সবচেয়ে সম্মানজনক প্রথমশ্রেণীর চাকরি মানেই তো বিসিএস। সেটা তো স্বপ্ন হবেই।

একাডেমিক পড়াশোনার শেষপর্যায়ে এসেই আমরা যেন বিসিএস প্রস্তুতি নিয়ে বেশি হুমড়ি খেয়ে পড়ি। কিন্তু স্নাতকের শুরুর পর্যায় থেকেই যদি প্রস্তুতিতে নামা যায়, সুবিধাটা আপনার জন্যই বেশি হয়। তাই আপনাকে প্রস্তুতির বিষয়ে কিছু টিপস দিতে আমাদের আজকের আয়োজন-

সবার আগে ভাবুন আপনার নিজ ডিপার্টমেন্টের পড়াশোনার চাপ কেমন। সেটার ওপর নির্ভর করবে আপনি বিসিএসের পিছনে কতটুকু সময় দেবেন। ডিপার্টমেন্টে যদি বেশি চাপ থাকে তো আপনার সেখানেই বেশি সময় দিতে হবে। তবে পড়ার অভ্যাস ধরে রাখার জন্য দিনের একটা নির্দিষ্ট সময় বিসিএসের জন্য অবশ্যই দেবেন।

একবর্ষ থেকে পরের বর্ষে আপনার বিসিএস প্রস্তুতি বাড়তে থাকবে। প্রথমবর্ষে যেমন বিসিএস প্রস্তুতি নিয়েছিলেন, পরের বছর পড়াশুনার গতি আরও বেশি হবে। এভাবে শেষবর্ষের দিকে থাকবে একেবারে চূড়ান্তু প্রস্তুতির প্রক্রিয়া।

এই ফাঁকে আবার নিজ বিভাগ বা ডিপার্টমেন্টকে অবহেলা করতে যাবেন না। সেখানেও পর্যাপ্ত সময় দেবেন। অন্য কাজে, আড্ডাবাজিতে কম সময় দিয়ে দুইদিকের পড়াশুনায় সময় দিন ভাগাভাগি করে। কিছুদিন কষ্ট করলে তো কেষ্ট মিলতে বাধ্য।

বিসিএসে বিভাগের সিজিপি এরও গুরুত্ব আছে। এটা আপনার ভাইভাতে কাজে দেবে। তবে শুধু সিজিপিএ দিয়েও বিসিএস হবে না। ৩.০০–এর মতো থাকলেই আর অসুবিধা হয় না। আর বেশি থাকলে তো ভালোই।

জাতীয়, পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে তেমন বৈষম্য করা হয় না বিসিএসের ক্ষেত্রে। কারণ মনে রাখবেন, কর্তৃপক্ষ আপনাকে বিচার করবে; বিশ্ববিদ্যালয় নয়। তাই প্রতিষ্ঠান নিয়ে খুব একটা প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন পর্যাপ্ত পড়াশোনা।

প্রথমবর্ষে থাকতেই বিসিএসের প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার সিলেবাসটা খুব ভালো করে পড়ে নেবেন। এতে করে কোন ধরনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত, তা বুঝে আগাতে পারবেন।

ধাপে ধাপে এগোন। আপনাকে সহজ কিছু ধাপ বুঝিয়ে বলি। প্রথমবর্ষের শেষের দিকে বিগত বিসিএসের প্রশ্নগুলো বিশেষ করে প্রিলির প্রশ্ন ব্যাখ্যাসহ পড়বেন। লিখিত প্রশ্নগুলো দেখবেন। দ্বিতীয় বর্ষে এসে মূল বইপুস্তকগুলো ডিপার্টমেন্টের পড়ার ফাঁকে ফাঁকে পড়বেন। এই যেমন, ক্লাস সিক্স টু টেন বোর্ডের বই, উচ্চমাধ্যমিকের কম্পিউটার ও পৌরনীতিও পড়বেন। অবশ্যই ধীরে ধীরে ও বুঝে বুঝে পড়বেন।

সম্ভব হলে একাডেমিক কোচিংয়ে পড়ান বা টিউশন করান একটি বা দুটি। বাংলা, বিজ্ঞান, ইংরেজি ও গণিত পড়ান। নিজেরও কাজে লাগবে। সঙ্গে সঙ্গে কথা বলার জড়তা কাটবে, যা ভাইভায় কাজে আসবে।

তৃতীয়বর্ষে এসে কিছু মৌলিক বই পড়ে নিন। বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি, মুক্তিযুদ্ধ, রাজনীতি নিয়ে যথেষ্ট পড়াশুনা করে নিন। চতুর্থ বর্ষের প্রথম থেকে প্রিলির জন্য বিষয় ধরে গাইড পড়া শুরু করুন। প্রতিটি বিষয়ের জন্য একটি করে গাইড হলেই যথেষ্ট। এছাড়া আগে যে বইগুলো পড়েছেন, তা থেকে গুরুত্বপূর্ণ অংশগুলো চতুর্থবর্ষে এসে রিভিশন দেবেন।

লিখিত ও ভাইভার জন্য যে তথ্যগুলো দরকার, তা দেকবেন ইতিমধ্যেই আপনার মূলবইগুলোতে পড়া হয়ে গেছে দেখবেন। এরপর লিখিত ও ভাইভার সময় বিষয়ভিত্তিক কিছু গাইড সংগ্রহ করে নেবেন। আর মৌলিক বই তো পড়া আছেই।

সাধারণ জ্ঞানের বিষয়গুলো একটু পরে পড়া ভালো। কারণ, তা সময় গড়াতে গড়াতে অনেক পরিবর্তন হতে থাকে। যেগুলো পরিবর্তিত হয় না যেমন বিজ্ঞান, গণিত, ইংরেজি আপনি প্রথমবর্ষ থেকেই নোট করতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয়, বন্ধু বা পারদর্শী কারো সঙ্গে গ্রুপস্টাডি করতে পারলে।

আগে বুঝুন তো আপনি কোন বিষয়ে দুর্বল, ইংরেজি বাংলা নাকি গণিত। কোনো বিষয়ে দুর্বল থাকলে তা প্রথম থেকেই ভালো করে পড়ে নিন। আগে থেকে পড়লে এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আর দৈনিক পত্রিকা প্রতিদিন পড়ার অভ্যাস করুন প্রথমবর্ষ থেকেই। সম্পাদকীয়, মতামত, আন্তর্জাতিক, খেলাধুলার পাতা খুব মনোযোগ দিয়ে পড়বেন।

ধীরে ধীরে ইংরেজি শব্দের অর্থও পড়া শুরু করুন। কারণ, তা সহজে আয়ত্তে আনা যায় না। আর পড়ার সময় তাড়াতাড়ি বই শেষ করার চেষ্টা করবেন না। বিষয়টির গভীরে ঢোকার চেষ্টা করুন। ধারণা পরিষ্কার থাকলে যেকোনো আকারে লিখতে পারবেন।

আপনার প্রস্তুতি আপনার কাছেই। আপনি মনোযোগ দিয়ে রুটিনমতো একটু নিয়মিত পড়লেই আপনার স্বপ্নের বিসিএস খুব একটা কঠিন হবে না।

 

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭