লিভিং ইনসাইড

এড়িয়ে চলুন কিছু বিরক্তিকর অভ্যাস

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/09/2019


Thumbnail

বাসে বেশ চাপাচাপি শেষে বসার জায়গা পেলেন, পাশে একজন ভদ্রলোক। কানে হেডফোন লাগিয়ে তিনি এতোই জোরে গান শুনছেন যে, আপনার কানেও সেই আওয়াজ আসছে অনেক জোরে। সঙ্গে সঙ্গে তিনিও গান ধরার চেষ্টা করছেন। মোটামুটি আপনি বিরক্ত হয়ে গেলেন। আবার আপনি সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারেন না, আপনার কোনো বন্ধুই আপনার সামনে সিগারেট খেয়ে আপনার সামনেই ধোঁয়া ছাড়ছে। আপনার তো বমি এসে যাওয়ার উপক্রম। আপনার পরিবারেরই কারো সঙ্গে বাজারে গেলে আপনার মাথা ধরে যায় তার দামাদামি নামক যুদ্ধ দেখে। উফ, মানুষ কেমন করে এতো কথা বলতে পারে!

এগুলো ঘটনা নৈমিত্তিক। প্রতিদিনই এমন ঘটনা ঘটে আমাদের সামনে। কিছু মানুষের কিছু না বুঝে ওঠা বদঅভ্যাস অন্যদের জন্য যে কতোটা বিরক্তিকর, তা তারা বুঝে উঠতে পারে না। এমনই কিছু অভ্যাস নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা-

খুব বেশি সুগন্ধী না মাখা

কিছু মানুষের সুগন্ধী অর্থাৎ সেন্ট, পারফিউম, বডি স্প্রে, আতরের প্রতি একটু বেশিই আকর্ষণ থাকে। সেই আকর্ষণের জায়গা থেকে বেশ গাঢ়, ঝাঁঝালো গন্ধের সুগন্ধী ব্যবহার করেন অনেকে। মিষ্টি, সাধারণ গন্ধগুলো সহ্য করা যায়, বরং এটা ভালো অনুভূতি এনে দিতে পারে। কিন্তু উগ্র, ঝাঁঝালো গন্ধে আপনি অভ্যস্ত হলেও আপনার আশেপাশের লোকগুলোর কিন্তু অস্বস্তিবোধ হতে পারে। মাথাব্যথা, মাথাঘোরা, বমিভাব হতে পারে কারো কারো। তাই সুগন্ধী মাখার ক্ষেত্রে একটু সাবধান, অন্যের কথাও একটু ভাবুন।

খুব বেশি ভলিউমে গান না শোনা হেডফোনে

যাত্রাপথে বা কোনো রেস্টুরেন্ট, বা কোনো আড্ডার মধ্যে কানে হেডফোন দিয়ে আপনি দিব্যি গান শুনছেন। আশেপাশে কি হচ্ছে তা আপনি টেরও পাচ্ছেন না। এদিকে আপনার ফোনে যে ফুল ভলিউম দেওয়া, হেডফোনের সেই গান যে আশেপাশের মানুষগুলোও শুনতে পাচ্ছে, তাতে কোনো মনোযোগ নেই আপনার। আপনার কান ভেদ করে শব্দ অন্যদের কানে পৌঁছানোর থেকে আস্তে গান শুনুন। আর কানে বাজতে থাকা গানের সঙ্গে নিজে সবার মাঝে গান গাইতে যাবেন না, অন্যে তো বিরক্ত হবে।

পথেঘাটে জোরে কথা না বলা

আশেপাশে মানুষজন থাকলে কিছু ম্যানারস তো জানা থাকা ভালো। এই ধরেন বাসে, ওয়েটিং রুমে বা অফিসের ডাইনিং রুমে আছেন, এর মধ্যে আপনার ফোন এলো। আপনি ফোনে নিজের বাসার মতো করে খোশগল্প শুরু করলেন উচ্চস্বরে, তাও সব ব্যক্তিগত কথাবার্তা শুরু করলেন। এটা অবশ্যই বিরুক্তকর। আবার পরিচিত কারো সঙ্গে চলতে বা কারো সঙ্গে দেখা হয়ে গেলে পথের মধ্যেই সুখ-দুঃখের আলাপ শুরু করে দিলো। পাশের লোকদের তাতে বিরক্তি লাগারই কথা।

প্রকাশ্যে সাবধান হন খাওয়াদাওয়ায়ও

পথেঘাটে চলতি পথে আমাদের ক্ষুধা পেতেই পারে। খাওয়ার জন্য দোকানপাট, রেস্টুরেন্ট রয়েছে। এছাড়াও বাসে, ক্লাসে, অফিসে অসময়ে খাওয়ার অভ্যাস বাদ দেওয়াই ভালো। আবার সবার সামনে বসে শব্দ করে খাওয়া, সবার সঙ্গে বসে তাড়াতাড়ি খাওয়া বা দীর্ঘক্ষণ খাবার নিয়ে বসে থাকাটাও সবার চোখে ভালো দেখায় না। তাই পথেঘাটে আয়েশ করে না খাওয়াই ভালো। আর সবার মাঝে ভদ্রভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাওয়া শেষ করবেন।

নাক বা কান খোটাখুটি না করা, দাঁত দিয়ে নখ কাটা

নাক কান যেকোনো সময়ে চুলকাতেই পারে। সেটা কায়দা করে এড়িয়ে যেতে হবে। সবার সামনে কানে আঙুল বা কাঠি ঢুকিয়ে চুলকানো, আঙুল দিয়ে নাক খোটানোর মতো ব্যাপারগুলো খুবই বিরক্তিকর। এগুলো করবেন না। মনোযোগ অন্যদিকে নিয়ে যান, চুলকানি বা অস্বস্তিভাব চলে যাবে আস্তে আস্তে।

ট্রায়াল রুমের বাইরে পোশাক পরিবর্তন না করা

কোনো পোশাকের দোকানে পোশাক পরিধানের সময় কিছু নিয়ম আপনার অনুসরণ করা উচিত। সোয়েটার, কোট বা শালের চাদর আপনি ট্রায়াল রুমে না গিয়েও পরে দেখতে পারেন। কিন্তু ভেতরে পরিধানযোগ্য পোশাক যদি আপনি ট্রায়াল রুমের বাইরে প্রকাশ্যে পরিধান করেন তাহলে সেটা অন্যকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলবে। যে মাপের পোশাক আপনার ফিট হবে সে মাপের পোশাক নিয়েই ট্রায়াল রুমে যান। বারবার ট্রায়াল রুমে গেলে দোকানদারও প্রচণ্ড বিরক্ত হতে পারেন।

জিনিসপত্রের অতিরিক্ত দামাদামি করা

কিছু মানুষের অভ্যাসই আছে দোকানপাটে গিয়ে জিনিসপত্রের অতিরিক্ত দামাদামি করা। কিছুটা দামাদামি আমরা সবাই-ই করি। কিন্তু সেটা সবসময় তো না। ধরুন সামান্য কিছু টাকার জন্য আপনি যদি পুরো এলাকাটাই একাকার করে ফেলেন তাহলে তো মুশকিল। দামে বনিবনা না হলে অন্য কোথাও সরে যান। আবার যানবাহনে উঠলেও ভাড়া নিয়ে দরকষাকষি করতে করতে একশ্রেণীর লোক প্রায় পাগলই হয়ে যায়। এগুলো অনেকের কাছে বেশ অস্বস্তিকর। 

সবার সামনে কাপড় ঠিকঠাক বা রূপচর্চা না করা

চলতে ফিরতে কাপড়চোপড় এলোমেলো হয়ে যেতে পারে। সেটা একটু কায়দা করে একটু পাশে গিয়ে ঠিকঠাক করে নেওয়া যায়। সবার সামনে বসে, হোক সেটা চেনা বা অচেনা- কারো সামনে কাপড়চোপড় ঠিক না করাই ভালো। আবার রূপচর্চার ক্ষেত্রেও ঠিক তাই। যেখানে সেখানে চুলটা আচড়ে নেওয়া, একটু সেজেগুজে না নেওয়াই ভালো।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭