লিভিং ইনসাইড

সুস্থ থাকুক আপনার হার্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 29/09/2019


Thumbnail

হৃদপিণ্ড বা হার্ট আমাদের গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ। বর্তমানে সময়ে হার্টের সমস্যা এতোটাই প্রকট যে পৃথিবীতে প্রতিদিন শুধুমাত্র হার্ট অ্যাটাকের কারণে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়। হার্ট অ্যাটাক মানুষকে পঙ্গু ও বিকলাঙ্গও করে দেয় । তাই হার্টের সুস্থতা সকলেরই একান্ত কাম্য। কিন্তু আজকাল ভেজাল খাদ্য আর ব্যস্ত জীবন-যাত্রার কারণে শরীরের সুস্থতার দিকে আমরা মোটেও নজর দেইনা। তাই নানা রকম শারীরিক সমস্যার সাথে সাথে হার্টেও সমস্যা দেখা দেয়। তাই আগে থেকেই হার্টকে সুস্থ রাখতে পালন করুণ কিছু সহজ নিয়ম। এতে করে আপনার শরীরও যেমন সুস্থ থাকবে অন্যদিকে হার্টও থাকবে ভালো।

আজ বিশ্ব হার্ট দিবসে হার্টকে সুস্থ রাখতে খুব সাধারণ কিছু টিপস জানাচ্ছি আপনাদের-

ধূমপান এড়িয়ে চলুন

আমরা সবাই জানি যে ধূমপানে বিষপান। ধূমপানের ফলে একজন সুস্থ মানুষের গড় আয়ু ১৫ থেকে ২৫ বছর কমে যায়। আর একজন ধূমপায়ীর হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা একজন অধূমপায়ীর তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এই অভ্যাসটি হার্ট অ্যাটাকের মতো ভয়াবহ অসুখের দিকে ঠেলে দেবে আপনাকে। ধূমপান বন্ধ করার মুহূর্ত থেকেই হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা কমতে থাকে।

বুকে ব্যথাকে কখনো অবহেলা করবেন না

বুকে ব্যথা হলে তাকে অবহেলা করা মোটেও উচিৎ নয়। দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ব্যায়াম করার সময় যদি বুক ব্যথা করে, তবে সেটা বিপদসংকেত। অবশ্য অতিভোজনের পর ব্যথা হলে তা হজমের অসুবিধার কারণে হতে পারে। যদি মনে হয়, বুক ভারী হয়ে আসছে, শরীর ঘেমে উঠছে, তখনই দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে। মোদ্দাকথা, বুকের ব্যথা যেমনই হোক, দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যান।

ওজন নিয়ন্ত্রনে রাখুন

ওজন বাড়া এবং দেহে মেদ জমা কার্ডিওভ্যস্কুলার রোগের অন্যতম প্রধান কারণ। অতিরিক্ত ওজন হৃদপিণ্ডের উপর অনেক বাড়তি চাপ ফেলে, এতে ধীরে ধীরে হৃদপিণ্ড নিজের কর্মক্ষমতা হারাতে থাকে। তাই নিজের ওজনটার দিকে একটু বিশেষ নজর দিনে এবং ওজন নিয়ন্ত্রণের যথাসাধ্য চেষ্টা করুন।

লবণ খাওয়া একেবারে কমিয়ে দিন

খাবারে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া উচ্চ রক্তচাপের জন্য দায়ী। এর ফলে হৃদপিণ্ডের রক্তসরবরাহকারী ধমনী সম্পর্কিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই আজ থেকেই খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

অ্যালকোহলের মাত্রা কমাতে হবে অবশ্যই

অতিরিক্ত অ্যালকোহল হৃদপিণ্ডের পেশির ক্ষতি করে, রক্তচাপ বাড়ায় এবং পাশাপাশি ওজনও বৃদ্ধি করে। তাই অ্যালকোহল গ্রহণ বাদ দেওয়া শরীরের জন্য ভালো। একবারে বাদ দেওয়া সম্ভব না হলে প্রতিদিন একটু একটু করে কমানোর চেষ্টা করতে হবে। বেশিমাত্রায় অ্যালকোহল রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইডের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। হার্টের যেকোনো সমস্যা তৈরি করে এই ট্রাইগ্লিসারাইড।

ডায়েট মেনে চলতে হবে আপনাকে

শরীরের জন্য যা উপকারী, সেইসব খাবার খান। সবসময় সুষম খাবার খাওয়া উচিত। ডায়েট মেনে চলুন। মাংস ও দুগ্ধজাত দ্রব্য কোলেস্টেরল লেভেল বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ে। তাজা ফল এবং সবজি, শষ্যজাতীয় খাবার যেমন- শষ্য থেকে তৈরি রুটি খাওয়া স্বাস্থ্যের জন্য বেশ উপকারী। তাই প্রতিদিনের খাবারে এগুলো খাওয়ার চেষ্টা করুন।

চর্বিযুক্ত খাবারকে না বলুন চিরতরে

তেল হচ্ছে আমাদের নিত্যদিনের খাবারের এক অপরিহার্য উপাদান। চর্বি আমাদের শরীরের এক প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। পরিমিত চর্বিযুক্ত খাবার আমাদের শরীরে শক্তি যোগায়। কিন্তু অতিরিক্ত তেলাভাজা বা চর্বিযুক্ত খাবার হার্টের জন্য খুবই ক্ষতিকর। মাংসে চর্বি এড়িয়ে চলবেন। আর রান্নাতেও তেল যতটা সম্ভব কম ব্যবহারের চেষ্টা করবেন।

মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখুন

আমাদের একটি বহুল প্রচলিত শ্লোগান আছে- রেগে গেলেন তো হেরে গেলেন। আসলে রাগ মাঝে মাঝে প্রয়োজনীয় হলেও, কথায় কথায় রেগে যাওয়া বা অতিরিক্ত রেগে যাওয়া কখনোই ভালো নয়। আপনি যখন প্রচণ্ড রেগে যান বা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন, তখন আপনার শরীরের নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে যার মাঝে বুকে ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ ও রক্তে উচ্চ শর্করা ইত্যাদি প্রধান। তাই নিজের মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখুন, সুস্থ থাকুন।

কর্মক্ষম থাকার চেষ্টা করুন সবসময়

চিকিৎসকদের পরামর্শমতে প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট শরীরচর্চা করা উচিত। তাছাড়া কর্মক্ষম থাকা কেবল হৃদযন্ত্র সুস্থ রাখার জন্যই নয়, এটি মানসিক স্বাস্থ্য সুস্থ রাখতেও সাহায্য করে। আপনি পর্যাপ্ত হাঁটুন, সকালের মিষ্টি পরিবেশে হালকা দৌঁড়ান। সবসময় রিকশা বা গাড়িতে না উঠে যতটুকু দূরত্বে হাঁটা যায়, হাঁটুন। মাঝেমাঝে লিফটে না উঠে সিড়ি দিয়ে ওঠানামা করুন।

হাসিখুশি থাকুন

হাসি নাকি আমাদের সব রোগ থেকে মুক্তি দিতে পারে। আপনার হৃদয়টাকে হাসিখুশি রাখুন। তাকে কখনো দুশ্চিন্তা, অবহেলা বা কষ্টে রাখবেন না। আপনার মনটা না হাসলে আপনি হাসতে পারবেন না। মন যা চায় তাই করুন। ভালোলাগার কাজ করুন। দুশ্চিন্তাগুলোকে পাশ কাটিয়ে চলার চেষ্টা করুন। অন্যকেও হাসিখুশি রাখতে চেষ্টা করুন। হাসি মানবদেহ সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। হাসির মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের চাপ কমানো সম্ভব। তাই হাসুন, আর সুস্থ থাকুন।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭