ইনসাইড থট

বুঝলে বুঝপাতা, না বুঝলে কী!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 10/10/2019


Thumbnail

বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার হত্যা সারা দেশের দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনের আনন্দ আর আতংক থেকে অনেককে বঞ্চিত আর মুক্ত করেছে। অনেকের কাছে নতুন স্বপ্নের জাল বোনার সুযোগ করে দিয়েছে।  অনেকে বলেছেন ফেসবুকে আবরারের সরকার বিরোধী যে স্ট্যাটাস দিয়েছিলো তার জন্য হত্যার স্বীকার হয়েছে। কিন্তু ড. আসিফ নজরুল, ড. তুহিন মালিক, বিএম এ খুলনার নেতা ও আওয়ামী লীগ নেতা বাহার। ফেসবুকে সরকার প্রধান ও দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য প্রদান এবং তা পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা বিএমএ’র সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। কিন্তু ড. আসিফ নজরুল বহাল তবিয়তেই আছেন। মধ্য থেকে আবরারের প্রাণ কেড়ে নেওয়া হল নির্মমভাবে। 

#Nadezda Fatema Shikha লিখছেন, আমার একটা সাহায্য দরকার। দোয়া করে কেউ সাহায্য করুন।

আবরারকে হত্যা করার পেছনে দুইটি বিষয় সামনে আনা হচ্ছে।

১. বলা হচ্ছে আবরারকে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে নিজের ফেসবুক একাউন্টে দেয়া শেষ পোস্টটির জন্য।

২. আবার বলা হচ্ছে সন্দেহ করা হচ্ছিল সে ইসলামী ছাত্র শিবির করে। আমি জানতে চাচ্ছিলাম যে, আবরারকে কেন খুন করা হলো, তা তো খুনিরা ছাড়া অন্য কারো জানার কথা না। তাহলে আমরা কিভাবে জানলাম? প্রথম কিভাবে হত্যার মোটিফ হিসাবে বিষয়গুলো আলোচনায় এলো? হত্যার মোটিফ গোয়েন্দাদের ঘাম ছুটে যায়, আর এরা এত সহজে জানে কী করে? যারা বলছেন তারা কি কেউ সাথে ছিলেন!)   

#Sadia Humaira তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন:  শুনলাম আবরার নাকি মেধাবী ছাত্র ছিল। অথচ তার পোস্ট ভরা উল্টাপাল্টা ভুলভাল তথ্য। সে লিখেছে ভারতকে দিনে ১,৫০,০০০ কিউবিক মিটার পানি দেবে বাংলাদেশ। আসলে দেবে ৪,৪৫৩ কিউবিক মিটার। ইচ্ছা করে উসকানি দেওয়ার জন্য লিখলে বলার কিছু নেই। আর যদি না বুঝে জ্ঞানের স্বল্পতায় লিখে থাকে তাহলে বলতে হবে, এরাই সেই শ্রেণি যারা ভার্সিটিতে একটা সিট ম্যানেজ করার সাথে সাথে ধরাকে সরা জ্ঞান করে এবং মনে করে তাদের চেয়ে বেশি আর কেউ বোঝে না।

যেদিন থেকে চায়ের কাপে ঝড় তোলা মূল্যহীন প্রলাপ ফেসবুকের কারণে পাবলিক হয়ে গেছে সেদিন থেকে সমাজে নানান অস্থিরতার বেড়ে গেছে। এই ছেলে ছোকরাগুলোকে বোঝাবে কে চায়ের আড্ডায় প্রলাপ বকে, উসকানিমূলক কথা বলে বন্ধুদের কাছ থেকে মিশেল ফুকো উপাধি পাওয়া কিংবা ফেসবুকে পর্দার পেছন থেকে যাচ্ছেতাই লিখে কার্ল মার্কস উপাধি পাওয়া আর বাস্তবেই মিশেল ফুকো আর কার্ল মার্কস হওয়া এক না। এর জন্য নিরন্তর সাধনা ও জ্ঞানচর্চা প্রয়োজন হয়, প্রয়োজন হয় অসামান্য মেধার।

বি.দ্রঃ আবরার চাই আর চায় এর ব্যবহারও ঠিকমতো জানতো না। এই বয়সেও মাতৃভাষায় এত দুর্বলতা দুঃখজনক। 

আগের পোষ্টে তিনি বলেনঃ ১. গণজাগরণ মঞ্চের সময় বামরাও স্লোগান দিয়েছিল, "একটা দুইটা শিবির ধর, ধইরা ধইরা জবাই কর"। ২০১২-১৩ সালের দিকে যারা শিবির করতো তারা কেউ স্বাভাবিকভাবেই একাত্তরে পৃথিবীতে ছিল না। তাই বোঝা যায়, জবাই করতে চাওয়ার পেছনে কারণটা ছিল শিবিরের আদর্শিক বিশ্বাস, কোনো সুনির্দিষ্ট অপকর্ম নয়। আবার সুনির্দিষ্ট অপকর্ম থাকলেও প্রাতিষ্ঠানিক আইনি কাঠামোতে বিচার চাইতে হবে, জবাই করা যাবে না এমনটাই সুশাসনের রক্ষকরা বলে থাকেন। তো ঐ স্লোগান দেওয়ার কারণ তথাকথিত প্রগতিশীল বা বামরা কীভাবে ব্যাখ্যা করেন??

২. দেশে যেহেতু পরমতসহিষ্ণুতার একটা জোয়ার উঠেছে তাই তসলিমা নাসরিনসহ সকল নাস্তিক নির্বাসিতদের দেশে ফিরিয়ে আনা উচিত। এখন সরকার যদি তাদের দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয় জামাত, হেফাজত ও ইসলামপন্থীরা কি তা মেনে নেবে?? 

#অনির্বাণ আরিফ তার ফেসবুকে লিখেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি লাশ ফেলার কথা বলেছিলেন মাহমুদর রহমান মান্না। সেই লাশটি পড়েছে। কিন্তু এ লাশটি মান্নার সে লাশ নয়।

এটি আওয়ামী লীগের টপ লেভেলের যে কোন একজন নেতার চাওয়া লাশ। প্রশ্ন হতে পারে কেনও আওয়ামী লীগ নেতা লাশ চাইতে গেলেন। উত্তর হলো- দুর্নীতি বিরোধী চলমান অভিযান চলমান। এ অভিযান জনমনে গ্রহণযোগ্যতা পেয়ে গেছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও সুদৃঢ় হয়েছে।

কিন্তু আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগে থাকা রাজনৈতিক সিন্ডিকেটবাজরা পুরোপুরি দুর্বল হয়ে গেছে। এ মূর্তে পরিস্থিতি ঘোলাটে না করলে ঠিক তাদের পতন ঠেকানো যাচ্ছে না। সুতরাং একটি লাশ আবশ্যক হয়ে গেছে।

কেনও বিরোধী পক্ষের লাশ দরকার হলো?

উত্তর - একই ঢিলে তিন পাখি বধ। প্রথমত, নিজেদের রক্ষা। দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনার পতন। তৃতীয়ত, প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের নতুন সমীকরণ।

এই তিন পাখি মারতে হলে বিরোধী পক্ষের কাউকে ভিকটিম করা দরকার ছিলো এবং সেটিই হলো। এবার অপেক্ষা করতে হবে আওয়ামী লীগে থাকা সিন্ডিকেট পক্ষটি এক ঢিলে তিনটি পাখি মেরে কতদূর যায় আর শেখ হাসিনা তাদের কোথায় নিয়ে থামায়।

(এ লেখার স্বপক্ষে কোন নির্ভরযোগ্য তথ্য নেই। তবে বাস্তবতা আছে।)

সত্য জানতে বা উপলব্ধি করতে আমাদের হয়ত আর কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। তবে এত দ্রুততার সাথে আবরার হত্যাকারী হিসেবে যাদের সন্দেহ করা হয়েছে তাদের বিরাট একটা অংশ ইতোমধ্যে আটক হয়েছে, যা খুব দ্রুত বাংলাদেশের ইতিহাসে। এখন আমরা দেখি বিচার কত দ্রুত হয়। তবে আবরাররা আর বাবা মায়ের কাছে ফিরে আসবে না। এতে তার পারিবারিক সংস্কৃতি, সামাজিক সংস্কৃতি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিবেশ বা সংস্কৃতির কোন দায় নেই! 

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭