ইনসাইড থট

আবরার কি বিবিসির পরকীয়ার বলি!

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 12/10/2019


Thumbnail

১৯৭১ সাল থেকেই বাংলার মানুষ বিবিসি বাংলার ভক্ত। তারা বিবিসির খবরের গুরুত্ব দেয় অন্যভাবে, অন্য মাত্রায়। সেই বিবিসি যদি বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে তাহলে তা বাংলাদেশের মানুষের মাঝে কী প্রভাব ফেলতে পারে তার সাম্প্রতিক জ্বলন্ত উদাহরণ বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার হত্যাকাণ্ড বলে অনেকেই অনুমান নয়, বিশ্বাস করেন। 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের যে সংবাদ বিবিসি বাংলা প্রকাশ করে তাতে বলা হয়- জ্বালানি সঙ্কটের মধ্যে বাংলাদেশ এই প্রথমবারের মতো তাদের প্রাকৃতিক গ্যাস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে রফতানি করবে। এ বিষয়ে দিল্লীতে দুই দেশের পক্ষ থেকে যৌথ ঘোষণার কথাও সংবাদে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি ভুল হয়েছে বুঝতে পেরে রবিবার রাতে বিবিসি সংশোধনী দেয়। তবে এর আগেই বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। সমালোচনার ঝড় ওঠে। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে  বাংলাদেশে পাকিস্তানী এজেন্ট খ্যাত ড. আসিফ নজরুল, ড. তুহিন মালিকের উস্কানিমুলক পোষ্ট লেখে। অন্যদিকে একদার নাস্তিক আর হালের সম্ভাব্য আস্তিক লন্ডন প্রবাসী উকিল ও ইউটিউবার মুফাখখারের তার ইউটিউব চ্যানেলে গালাগালি আর খিস্তি খেউর দেখে আবরাররা প্রভাবিত হয়। আবরার এই খবরটির ওপর ভিত্তি করে নিজের ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিল। যে স্ট্যাটাসে মংলা বন্দর ব্যবহার এবং ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারের সঙ্গে গ্যাস রফতানির বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি। আবরার তার স্ট্যাটাসের শেষাংশে লেখেনে ‘কয়েক বছর আগে নিজেদের সম্পদ রক্ষার দোহাই দিয়ে ভারত কয়লা-পাথর রফতানি বন্ধ করেছে অথচ আমরা তাদের গ্যাস দেব। যেখানে গ্যাসের অভাবে নিজেদের কারখানা বন্ধ করা লাগে সেখানে নিজের সম্পদ দিয়ে বন্ধুর বাতি জ্বালাব। 

বিদ্যুৎ জ্বালানি খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, না বুঝে একটি সংবাদ মাধ্যম গ্যাস রফতানি নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে। আমাদের সঙ্গে গ্যাস রফতানি সংক্রান্ত কোন চুক্তিই হয়নি। একটি নন-বাইন্ডিং এমওইউ (প্রতিপালন বাধ্যতামূলক নয় এমন সমঝোতা স্মারক) সই হয়। এর ভিত্তিতে বাংলাদেশে একটি এলপিজি প্ল্যান্ট নির্মাণ করা হবে। ভারতের সরকারী কোম্পানি এবং বাংলাদেশের একটি বেসরকারি কোম্পানি প্ল্যান্টটি নির্মাণ করবে। সেখান থেকে মূলত ত্রিপুরাতে এলপিজি রফতানি করা হবে। এই এলপিজির পুরোটা আবার দেশের বাইরে থেকে আমদানি করা হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ থেকে এখন নেপাল এবং ত্রিপুরাতে এলপিজি রফতানি করছে বেসরকারি উদ্যোক্তারা। সই হওয়া এমওইউ বেসরকারি খাতের সম্প্রসারণের জন্য সুবিধাজনক বলে উল্লেখ করেন তিনি।

প্রসঙ্গত এলপিজি এবং এলএনজির মধ্যে পার্থক্য বুঝতে ভুল করেছে বিবিসি, নাকি ইচ্ছাকৃত ভুল করার ভান করেছে তা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে। এলপিজি হচ্ছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস। মূলত তেলখনির উপজাত থেকে এলপিজি উৎপাদন হয়। দেশে গ্যাস খনিতে যে কনডেনসেট ওঠে সেখান থেকে সামান্য এলপিজি পাওয়া যায়। কিন্তু বাকি সব এলপিজির মূল উপাদান প্রপেন এবং বিউটেন বাইরে থেকে আমদানি করা হয়। অন্যদিকে এলএনজি হচ্ছে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস; যা মূলত প্রাকৃতিক গ্যাস বা মিথেন থেকে উৎপাদন করা হয়। অধিক চাপে এই গ্যাসকে সঙ্কুচিত করে তরল আকারে জাহাজে আমদানি করা হয়। এই তরলকে আবার রিস্যাসিফিকেশন বা পুনরায় গ্যাসে রূপান্তর করে পাইপ লাইনে সরবরাহ করা হয়।

উল্লেখ্য, কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশে একটি এলপিজি প্ল্যান্ট নির্মাণের চেষ্টা করছিল ভারত। মূলত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোর রান্নার গ্যাসের সমস্যা সমাধানের জন্য দেশটি এই উদ্যোগ নিয়েছে। চট্টগ্রামে প্ল্যান্টটি নির্মাণ করা হবে। সেখান থেকে বার্জ বা ট্রাকে এলপিজির বড় ট্রাক যাবে ভারতে।

অন্যদিকে বিতর্কিত ও নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেছেন, আবরার শিবির না করলেও তার ফেসবুক স্ট্যাটাস ছিল শিবিরের কর্মীদের মত। এছাড়া অনেকেই বলছেন যে, আবরারের খুন হবার পরে জামায়াত-শিবিরের যে প্রতিক্রিয়া, সারা দেশে শিবিরের মিছিল সাধারণের মনে অন্য বার্তা দেয়। আবরারের মত অনেক শিশুকে বেপুথা করেছে কেননা বাংলাদেশের আইনে বয়স ২১ বছর পূর্ণ না হলে ছেলেদের নাবালক বা শিশু বলা হয়ে, তাদের সাবালক ধরা হয় না। 

এখানে উল্লেখ করা জরুরী যে, তারেক রহমানের মত সারা দুনিয়ার সম্পদ লুটেরাদের অধিকাংশই লন্ডনে বাস করে আয়েশি জীবন যাপন করে তাদের নিজ দেশের সম্পদ লুটের টাকায়। কিন্তু এই উপনিবেশবাদি ব্রিটিশরা আমাদের মত গরীব দেশে সুশাসনের জন্য বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে টাকা দিয়ে নানা ভালোমানুষি প্রচার চালায়। সেখানে জুয়া হালাল আয়ের উৎস। তারেক জিয়ার আয়ের উৎস হিসেবে জুয়া খেলাকে দেখান হলেও আসলে তার টাকা কথা থেকে আসে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা ভাল করেই জানে। তাহলে কী তারেক জিয়ার টাকায় বা পাকিস্তান পন্থী জামায়াতের টাকায় ইচ্ছা করে এমন ভুল সংবাদ পরিবেশন করেছে বিবিসি, যার আরেক নাম পরকীয়া!

 

তথ্যসূত্র: বিভিন্ন অনলাইন ও প্রিন্ট মিডিয়া       

বাংলা ইনসাইডার  



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭