ইনসাইড আর্টিকেল

প্রেম: বিয়ের আগে নাকি পরে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/10/2019


Thumbnail

“নতুন ভাড়াটের আগমন। শুনেছি মা কোনো একটা প্রাইভেট ক্লিনিকে সেবিকার কাজ করেন। মেয়ে কোনো শপিং সেন্টারে একটা ট্রাভেলস এজেন্সির রিসেপশনিস্ট। বয়স ২০–২২ বছর হবে। তেমন সাজগোজ করে না। চোখে শুধু গভীর কাজল পরে। অভাবী সংসার, তাই অল্প বয়সেই কাজ শুরু করেছে। ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক দেয়। মার্জিত রুচি বলা যায়। গাল দুটি কেমন ফোলা ফোলা। মসৃণ ত্বক। মায়া জাগানিয়া চেহারা। সবকিছুতে অতি সাধারণ ছাপ, যেন আরও মায়াবী করে তোলে”!

“আর পাশের বিল্ডিং এ যে উঠেছে , নাম তাঁর সুমিত। পড়াশোনার দৌরাত্ম্য বেশি না হলেও সব বিষয়ে প্রবল জ্ঞান রাখে। যদিও জীবনে জ্ঞান মেধা কাজে লাগাতে পারেনি। মাথাভর্তি ঘন লম্বা চুল। ব্যাক ব্রাশ করা। অমিতাভ বচ্চন, মিঠুনের ভক্ত। পোশাকেও নায়ক নায়ক ভাব। তবে মেয়েদের প্রতি তাঁর কোনো আসক্তি কখনো দেখা যায়নি বা প্রকাশ পায়নি।বই, সিনেমা, মাছ ধরা এই ছিল তাঁর জীবন। মাসুদ রানা পড়তে পড়তে নিজেকে কখনো মাসুদ রানাও ভাবত। মাসুদ রানার মতো ক্যাসিনোতে জুয়া খেলতে না পারলেও সুযোগ পেলে ছোট ছোট মজলিশে সে বসে যেতো”।

আচ্ছা? এই নীলা আর সুমিতের মধ্যে কি প্রেম হবে? হতেও পারে। আচ্ছা এই প্রেম জিনিসটা আসলে কি?

উইকিপিডিয়া বলছে, প্রেম হল অন্য কোন ব্যক্তির প্রতি কোন ভালোবাসার অনুভূতি, বা কোন দৃঢ় আকর্ষণ, এবং এসকল বিষয়ের ফলে সৃষ্ট আবেগ-অনুভূতি প্রকাশের উদ্দেশ্যে কোন ব্যক্তি কর্তৃক বিয়ের নিমিত্তে বিবাহপূর্ব সম্পর্ক গঠনকারী আচরণাবলি প্রকাশের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

মানে গিয়ে দাঁড়ায়, বিয়ের আগের সম্পর্ক। কিন্তু প্রেমতো বিয়ের পরেও হতে পারে। আমাদের বাবা-মায়েরা তো প্রেম করে বিয়ে করেনি। এতোদিনের সংসার, তাঁর মানে নিশ্চিত তাদের বিয়ের পরেই প্রেম হয়েছিলো।

বর্তমানে ছেলে-মেয়েরা কোনটাকে প্রাধান্য দেয়? বিয়ের আগের প্রেম নাকি বিয়ের পরের প্রেম?

এ বিষয়ে আমরা কথা বলেছি বেশকিছু ভার্সিটি পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। তাঁরা নিজেদের মতামত তুলে ধরেছেন, বিয়ের আগে প্রেম করার প্রসঙ্গে-

‘বিয়ের আগে একটা সম্পর্ক থাকাটা ছেলে-মেয়ে উভয়পক্ষের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এতে করে একজন আরেকজনকে জানতে পারে। বুঝতে সুবিধা হয় যে দীর্ঘস্ময় একসাথে থাকতে পারবে কিনা। যদি দুজন বিয়ের আগে একজন আরেকজনের খুটি নাটি বিষয়ে পুরোপুরি জানার চেষ্টা করে তাহলে দুজনের মধ্যে ভালো আন্ডারস্ট্যান্ডিং হয়।

যার ফলে, বিয়ের পরের সিচুয়েশন গুলো হ্যান্ডেল করতে পারে। আর যদি আন্ডারস্ট্যান্ডিং না থাকে তাহলে বিয়ের পর ঝামেলা সৃষ্টি হলে সেটা ডিভোর্স পর্যন্ত গড়ায়। আর আমাদের সমাজে ডিভোর্সের পর সারভাইব করাটা খুব মুশকিলের বিষয়। আর যারা ডিভোর্সের দিকে যায়না, তাদের জন্য ব্যাপারটা আরও বেশি কষ্টোকর, কারণ লাইফ টাইম পর্যন্ত সমস্যাগুলো ফেইস করতে হয় তাদের’ বলছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আশরাফুল আলম তানভীর।

তবে হুমায়ন আহমেদ বলেছেন, “গভীর প্রেম মানুষকে পুতুল বানিয় দেয়। প্রেমিক প্রেমিকার হাতের পুতুল হন কিংবা প্রেমিকা হয় প্রেমিকের পুতুল। দুজন এক সঙ্গে কখনো পুতুল হয় না। কে পুতুল হবে আর কে হবে সূত্রধর তা নির্ভর করে মানসিক ক্ষমতার উপর। মানসিক ক্ষমতা যার বেশী তার হাতেই পুতুলের সুতা। ”

এ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থী তামান্না জানান, প্রেমের মূল ভিত্তি হলো, একে অপরের প্রতি বিশ্বাস আর ভরশা রাখা। যেখানে বিশ্বাস নেই, সেখানে কিছু নেই। গভীর প্রেমে দুজন হয়ে উঠে একজনে। এমনটায় বিশ্বাস করি আমরা। তাই কে কাকে নিয়ন্ত্রণ করছে সেটি তেমন মুখ্য নয়। যে আমারে নিয়ন্ত্রণ করছে, আমি ভেঙ্গে পড়লে সেই আবার আমাকে টেনে তুলছে, পাশে থাকছে ছায়ার মতো। আমরা দুজন হয়ে উঠি এক আত্নার।

বাকি শিক্ষার্থীরাও প্রেম করে বিয়ে করাটাকেই প্রাধান্য দিয়ে যুক্তি দেন। তাদের সাথে একমত হয়ে তাইতো ইংরেজ কবি লিও তলস্তয় বলেছেন, “ একমাত্র প্রেমেই বিয়েকে পবিত্র করতে পারে। আর একমাত্র অকৃত্রিম বিয়ে হচ্ছে সেটাই, যেটা প্রেমের দ্বারা পবিত্রকৃত।”

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭