লিভিং ইনসাইড

গান শোনার যত উপকারিতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 14/10/2019


Thumbnail

দুপুরের পর কাজের চাপে মাথা খারাপ অবস্থা। চোখ বুজে যাচ্ছে ক্লান্তিতে। একটা হালকা পছন্দের গান শুনতে ইচ্ছে হলো, হালকা সাউন্ড দিয়ে কানে হেডফোন গুজে গান শুনে শে চাঙাবোধ হলো আপনার। আবার অংকের কঠিন সমাধান কিছুতেই করা যাচ্ছে না। মাথা এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। চেয়ার ছেড়ে উঠে একটা গান চালিয়ে দেখুন, গানের কথাগুলো মন দিয়ে শুনুন। দেখবেন মাথা হালকা লাগছে, চেয়ারে বসে অংকটাকেও আগের চেয়ে সহজ মনে হচ্ছে। হ্যাঁ, গানের মাঝে এমনই সব যাদু আছে। গান মনের নেতিবাচক অবস্থাকে কাটিয়ে দিতে পারে। আপনাকে শান্তি দিতে পারে। দেশি-বিদেশি অনেক গবেষণাও এটাই বলে।

এখন জানুন কেন গান শুনবেন, কীভাবে গান আপনাকে প্রশান্তি দিতে পারে-

গান মনে সুখ আনে। গবেষণা মতে, মানুষ যখন গান শোনে তখন তার মস্তিষ্ক থেকে ডোমাপিন ক্ষরিত হয়, যা স্নায়ুর মধ্যে সুখানুভূতি তৈরি করে। এছাড়া সুর মানসিক চাপ কমায় এবং স্বাস্থ্য উন্নত করে। সঙ্গীত এবং সুর ব্যথা উপশম করে, মানুষের ভেতর থেকে মানবিকতা বের করে। সকল সংস্কৃতির মানুষের মধ্যেই রয়েছে সুরের মেলা, যখন কেউ গান শোনে তখন ব্যক্তির অজান্তেই তার মধ্যে ছন্দ তৈরি হয়।

এটা প্রমাণিত হয়েছে যে গান শুনতে শুনতে দ্রুত হাঁটা যায়, দৌঁড়ানো যায়, দ্রুত কাজ করা যায়। এমনকি অফিসে কাজের ফাঁকে গান শুনলে স্ট্রেস হুট করে নেমে যায়। পড়তে পড়তে মাথা জ্যাম হয়ে গেলে গান শুনে নিলে যথেষ্ট চাঙা লাগে।

গান আপনাকে ভালো ঘুম দিতে পারে। অনেকে বলেন, সঙ্গীত প্রতিদিন মনে জমা হওয়া ধুলোময়লা দূর করে। ঘুমাতে যাওয়ার ত্রিশ থেকে পয়তাল্লিশ মিনিট আগে যারা সুন্দর গান শুনে ঘুমোতে যায় তাদের ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

সঙ্গীত আর সুর আমাদের বিষন্নতা কমায়। পৃথিবীতে অসংখ্য লোক বিষন্নতায় ভুগছে, এর মধ্যে বেশিরভাগের রয়েছে ‍ঘুমের সমস্যা। ধ্রপদী সঙ্গীত মানুষের বিষন্নতা কাটিয়ে ঘুমাতে সহায়তা করে।

আপনার হার্ট কে সুস্থ রাখতে চাইলেও নিয়মিত গান শুনুন। কারণ ইউরোপের কিছু গবেষকের মতে গান শোনার মাধ্যমে আপনার মন ভালো থাকবে, যার ফলে আপনার দেহে এক ধরনের বায়োলজিকাল পরিবর্তনের মাধ্যমে রক্তের প্রবাহ সঠিক নিয়মে হবে আর আপনার হার্ট সুস্থ থাকবে।

সঙ্গীত-সুর মানুষকে অধিক খাওয়া হতে বিরত রাখে। মণীষীরা বলেন, খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গীত ও সুরের সম্পর্ক রয়েছে। খাওয়ার সময় সুন্দর সুর চালিয়ে রাখলে খাওয়াটা আরও উপভোগ্য হয়, এবং মানুষ পরিমিত খায়।

গান যেকোনো কিছু শেখার ক্ষমতা বাড়ায়, স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। সুর মস্তিস্কের মধ্যে শিখতে এবং মনে রাখতে সহায়তা করে। আপনার মাথায় যে চিন্তাগুলো জমে থাকে, সেগুলো গান শুনলে শিথিল হতে থাকে। তখন নতুন অন্য চিন্তাগুলো মাথায় নেওয়ার জায়গা পাওয়া যায়।

সঙ্গীত আর সুর শরীর এবং মনের ব্যথা কমায়। গবেষণা মতে, সঙ্গীত যখন অন্তরে প্রবেশ করে তখন আর কোনো দুঃখ থাকে না। শুধু তাই নয়, গান আলজেইমার আক্রান্ত রোগীর স্মৃতিশক্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। এটা মনটাকে আর মাথাকে একেবারে হালকা করে দেয়। মনের মধ্যে প্রফুল্লতা নিয়ে আসে। ফলে স্মৃতিশক্তি মজবুত হয়। সবকিছু মনে রাখতে সাহায্য করে। কারণ আমরা গান শুনতে শুনতে সেটা মনে রাখার বা পরে গাইবার চেষ্টা করি।

সঙ্গীত আমাদের ভাষাগত দক্ষতা বাড়ায়। সঙ্গীত মনসংযোগ বৃদ্ধিতে ও বুদ্ধিমত্তার বিকাশে সাহায্য করে। যখন কোনো কাজে আলসেমি চলে আসে তখন খুব ফাস্ট বিটের গান আপনার আলসেমি দূর করতে সাহায্য করে। যেমন ব্যায়ামে আলসেমি লাগলে এরকম গান শুনতে শুনতে ব্যায়ামের চেষ্টা করুন। দেখবেন খুব দ্রুত আপনার আলসেমি কেটে যাচ্ছে আর আপনি সঠিক নিয়মে ব্যায়াম করতে পারছেন। এমনকি আগের চাইতে ব্যায়াম করার গতিও বৃদ্ধি পাবে।

সঙ্গীত আর সুর বৃদ্ধ বয়সে মাথা ঠাণ্ডা রাখে। নিজেদের ভেতরের সুর আর ছন্দকে জাগাতে না পারলে আমরা দিন দিন মনের দিক থেকে বুড়িয়ে যেতে থাকি। আমরা গান শুনি যাতে আমরা নিজের ভেতরের সুর শুনতে পাই। সঙ্গীত আর সুর মানুষের অন্তর্গত আচরণ উন্নত করে, যৌক্তিক করে তোলে।

গান আমাদের মেজাজটাও ছাণ্ডা করে দেয়। যানজটের সমস্যায় জর্জরিত একটি জায়গায় আপনি আটকে আছেন। ঠিক তখন আপনার গাড়ি অথবা ফোনে গান ছেড়ে আপনার মেজাজটাকে একটু প্রশমিত করতে পারেন।

ঘন্টার পর ঘন্টা কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনবে না। আর হাই বিটেতো একদমই না। এমনভাবে গান বা গান শুনুন যাতে আশেপাশের মানুষের জন্য সেটা সমস্যার কারণ না হয় আবার। আর রাস্তা পারাপারের সময়ে কানে হেডফোন গুজে রাখবেন না। এতে দুর্ঘটনার মুখে পড়তেই পারেন।

বাংলা ইনসাইডার/এসএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭