কালার ইনসাইড

‘তুই’ থেকে ‘তুমি’ যেভাবে হলো

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/10/2019


Thumbnail

অভিনেত্রী সাবিলা নূর এ প্রজন্মের জনপ্রিয় অভিনেত্রী। হুট করে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন বলে অনেকেই ভাবছেন। প্লানিং কিন্তু চলছিলো অনেকটা দিন ধরেই। যেভাবে তিনি নেহাল সুনন্দ তাহেরের স্ত্রী হচ্ছেন সেই গল্প বললেন।

প্রথম দেখা:

অভিনেতা তৌসিফ মাহবুব সাবিলার অন্যতম ভালো বন্ধু। সেটা মিডিয়ার অনেকেই জানে। নেহালও তেমনি তৌসিফের অনেকদিনের বন্ধু। আর এই সুবাধেই ২০১৬ সালের ঈদের দিন দেখা দুজনার। তারপর থেকে শুরু হয় বন্ধুত্বটা। সেই বন্ধুত্বটা কখন যে প্রেম হয়ে যায় সেটা সাবিলা টের পায়নি। নেহাল টের পেয়ে প্রস্তাবটা আর সাবিলাকে দেয়নি। টেকনিক খাটিয়ে প্রস্তাবটা সাবিলার মায়ের কাছে দিলেন, ‘আমি সাবিলাকে পছন্দ করি। আমি ওকে বিয়ে করতে চাই। আপনাদের পারমিশন আছে কিনা।’

বিয়ের পথে হাটা:

সাবিলা বলেন,‘বন্ধুত্বের একটা পর্যায়ে মনে হয়েছে ও আমাকে পছন্দ করে। মনে হয়েছে ও আমাকে বোঝে। আমাকে বলার আগে ও আমার মাকে বলেছে, এরপরে আমার পরিবার কথা বলেছে। তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে আরো কিছুটা সময় যাক। যেহেতু তুলনামূলকভাবে বিয়ের জন্য তৈরী বয়সের চেয়ে আমার বয়সটা কম বলেই তারা মনে করছিলেন। আমি পরিবারের সবার ছোট। সেক্ষেত্রে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আরো কিছুদিন সময় নেওয়া উচিত। তারপরে তিনমাস আগে তারা একটি সিদ্ধান্তে পৌছেছে। ফাইনালি এই ২৫ অক্টোবর আমার বিয়ে।’

যেভাবে ফাঁস হলো বিয়ের খবর:

সাবিলা নূরের প্ল্যান ছিল বিয়ের চার পাঁচদিন আগে বিয়ের খবরটা জানাতে। কিন্তু তার সেই প্ল্যান আর সফল হলো না। এর আগেই বিয়ের খবর রটে গেল। যার সতত্যাও স্বীকার করেন। একদম কাছের কয়েকজনকে দিয়েছিলেন বিয়ের কার্ড। আর তাতেই রটে যায় তার বিয়ের খবর। কিছুটা দু:খ নিয়ে বললেন, কোন একজন আমাকে নিয়ে ছয় মাস আগে নিউজ করেছিলেন যে আমার বিয়ে হচ্ছে। ছয়মাস আগে আমার বিয়ের কথাবর্তা কিছুই হয়নি। তখন আমি আমার পরীক্ষার কারণে কাজ কম করছিলাম। সে অনুমান করে এ ধরণের একটি নিউজ করেছে। কোন কারণে ওনার আমার ওপর রাগ বা ক্ষোভ আছে। সে এই ব্যাপারটি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। সে একটি নাটকের গ্রুপে যেখানে প্রায় লাখ খানেক মেম্বার। সেখানে আমার বিয়ের কার্ড দিয়ে বলেছেন কে কে বিয়েতে যাচ্ছেন। এটা এক ধরণের হ্যারাজমেন্ট আমাকে। আমি যেটা আশা করিনি। আমি কখনো কারো সঙ্গে এমন কিছু করিনি যার জন্য আমার প্রতি ক্ষোভ থাকা উচিত।’

সাবিলাদের পরিচয়:

সাবিলার বাবা তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুল করিম। দুই বোন আর এক ভাইয়ের মধ্যে সাবিলা সবার ছোট। বর নেহাল সুনন্দ তাহের পেশায় বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এসএ টিভির ব্রডকাস্ট প্রকৌশলী। গ্রামের বাড়ি চাঁদপুর। বাংলাদেশ বেতারের সাবেক উপ-মহাপরিচালক মরহুম আবু তাহেরের একমাত্র ছেলে সে। হবু শাশুড়ি মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে আছেন। নেহালরা এক ভাই ও এক বোন। সে হিসাবে সাবিলা বাড়ির একমাত্র বউ।

বিয়ের অনুষ্ঠান:

২৫ অক্টোবর রাজধানীর একটি পার্টি সেন্টারে জাঁকালো আয়োজনে হতে যাচ্ছে তাদের বিয়ে। ২৪ অক্টোবর গায়ে হলুদ, ২৫ অক্টোবর বিয়ের অনুষ্ঠান ও ২৭ অক্টোবর বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। ঢাকার আলাদা তিনটি স্থানে অনুষ্ঠানের ভেন্যু আগে থেকেই নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘ডেকোরেশন, ফটোগ্রাফারসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়গুলোও ঠিক করে ফেলেছি। এখন বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র দেওয়া ও টুকটাক ছোটছোট বিষয়গুলো গোছাচ্ছি। বলা যায় খুব ব্যস্ত সময় যাচ্ছে। এখানেও একটা ব্যাপার দেখলাম আমার অনুষ্ঠানের স্থান অনেকে মেনশন করছেন। যেটা আমি আসলে চাচ্ছি না। যারা অনুষ্ঠান অ্যারেঞ্জ করেছে। তাদের তো একটা প্রস্তুতি আছে। ওভাবে সব ওপেন হলে সেটা আসলে বিব্রতকর কোন পরিস্থিতি তৈরী করতে পারে।’

দুজন দুজনকে নিয়ে কি ভাবেন?

ঠান্ডা প্রকৃতির মানুষ নেহাল। সবার সঙ্গে খুব ভালোভাবে মিশতে পারে। খুব বন্ধুবৎসল এবং ভালো একজন মানুষ বলেই তাকে মনে করেন সাবিলা। তবে তিনি ফিউচার নিয়ে অনেক ভাবেন। ভবিষ্যতটা কিভাবে সুন্দর হবে তা নিয়ে ভাবেন। যারা সাবিলার ফ্যান তারা তো বলে সাবিলা সুন্দর বা অভিনয় সুন্দর। সাবিলা জানালেন, ‘নেহাল বলে তোমার ব্রেন অনেক বেশি মুগ্ধ করে। তাৎক্ষণিক বুদ্ধি বের করতে পারো। তোমার ব্রেনটা দ্রুত কাজ করে।’

বিয়ের কেনাকাটা:

ঢাকা ও কলকাতা দুই জায়গা থেকেই কেনাকাটা করা হয়েছে। তাছাড়া অনুষ্ঠানে মেকআপ কোথা থেকে করবেন, তাও ঠিক করে রেখেছেন। তবে সেসব নিয়ে মুখ খুলতে চাইলেন না।

এখনো ‘তুই’:

মজার ব্যাপার হলো আর মাত্র কয়েকদিন পর বিয়ের পিঁড়িতে বসতে যাচ্ছেন। কিন্তু এখনো একে অপরকে ‘তুই’ বলেই সম্বোধন করেন। আর এরজন্য পরিবারের কাছ থেকেও ধমক খেতে হচ্ছে। এইতো কিছুদিন আগে নেহাল দেখা করতে গিয়েছিলেন সাবিলার দাদির সঙ্গে। দুজনে অনেক প্রাকটিস করে গিয়েছেন ‘তুমি’ বলার। কিন্তু সেখানে গিয়ে ‘তুই’ চলে আসে। দাদিও কাছে আচ্ছামতো ধমক খেতে হয় দুজনারই।

ব্যাক টু দ্যা প্যাভিলিয়ন:

বিয়ের পড়ে নভেম্বরের প্রথম কিংবা দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই কাজ শুরু করবেন বলে জোর দিয়ে বললেন। ‘নেহাল তো সবসময় আরো উৎসাহ দিতে থাকে যে কাজ করো। এই করো সেই করো।

সাবিলা সঙ্গ পেয়েছেন তখনও:

এটা সকলেরই জানা, কিছুদিন আগে আমার সময়টা খারাপ গিয়েছিল। আমি মানসিকভাবে অনেকটা ভেঙ্গে পড়েছিলাম। এমন পরিস্থিতি এর আগে আমার জীবনে আসেনি। মিথ্যা একটা ভিডিও নিয়ে আমি হেনস্থা হলাম। সেই সময় ও আমার ফ্রেন্ড ছিলো। ফ্রেন্ড হিসাবে ও আমাকে অনেক সাপোর্ট করেছে। আমি সবসময় বলেছি আমি আমার ফ্রেন্ড কলিগ পরিবারে সাপোর্টে আমার ঘুরে দাড়াতে পেরেছি। সেই সময়ে ও আমাকে বিশ্বাস করেছে আমাকে সর্বক্ষণ সময় ও সাপোর্ট দিয়েছে। যে রিউমারটা ছড়িয়েছিল এটার পরেও আমি যেন কাজ করি। আমি যেন এই ডিপ্রেশন থেকে বের হতে পারি সেটার পেছনে ও এমনকি ওর মায়েরও অনেকবেশি ভূমিকা ছিল।’

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭