ইনসাইড আর্টিকেল

শিশুদের ওপর যত নৃশংসতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 18/10/2019


Thumbnail

শেখ রাসেলের আজ জন্মদিন। পঁচাত্তরে যখন ছোট্ট রাসেলকে হত্যা করা হয়েছিল তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১০ বছর। অবুঝ রাসেল জানতোই না কেন তাকে হত্যা করা হচ্ছে।

শিশু হত্যার বিরুদ্ধে সারা বিশ্ব সোচ্চার থাকলেও দেশ-কাল নির্বিশেষে সারাবিশ্বেই বহু শিশুকে এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হতে হয়েছে এবং হচ্ছে।

কখনও ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য শিশুকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আবার কখনও যুদ্ধ বা গণহত্যার শিকার হয়েছে শিশুরা। ইউরোপ থেকে আফ্রিকা, কিংবা এশিয়া থেকে অস্ট্রেলিয়া সব জায়গাতেই চলছে শিশুহত্যার উৎসব।

বাংলাদেশে যেমন সাম্প্রতিক সময়ে বাবার হাতে শিশু তুহিনের হত্যার ঘটনায় শিউরে উঠেছে সারা দেশ। তেমনি যুক্তরাষ্ট্রের একটা ঘটনাতেও স্তম্ভিত হয়ে পড়েছিল গোটা বিশ্ব। ২০১৪ সালের ২৮ আগস্ট এক থেকে আট বছর বয়সী পাঁচ সন্তানকে হত্যা করেছিল টিমোথি জোন্স নামের এক ব্যক্তি।

ভারতের মধ্য প্রদেশে গত সেপ্টেম্বরে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যা করা হলো ১০ বছর বয়সী দুই শিশুকে। তাদের অপরাধ ছিল খোলা জায়গায় মলত্যাগ করা। উন্নত কিংবা অনুন্নত বিশ্বের প্রায় সব দেশেই শিশুদের প্রতি চলছে এমন নৃশংসতা। মধ্যযুগ কিংবা আধুনিক বিশ্ব সবসময়ই পাশবিকতার শিকার হয়েছে অবুঝ শিশুরা। কোথাও আবার শিশুদের উপর চালানো হয়েছে হত্যাযজ্ঞ। এখানে তেমন কিছু হত্যাকাণ্ডের কথা তুলে ধরা হলো-

জ্যাক্সেনহাউজেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প: পৃথিবী বোঝার আগেই নরক দেখলো শিশুরা

১৯৩৬ সনের জুলাইয়ে বার্লিনের উত্তরে অরানিয়েনবার্গ শহরে গড়ে তোলা হয়েছিল কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্প। শুরুতে নাৎসি পুলিশ প্রধান হাইনরিশ হিমলার এই ক্যাম্পটি পরিচালনা করতো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানে বন্দিদের অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হতো। বাদ পড়তো না শিশুরাও। ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৫ পর্যন্ত ৯ বছরে শুধু এই জ্যাক্সেনহাউজেন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে দুই লাখ মানুষকে হত্যা করে নাৎসি বাহিনী। যাদেরকে হত্যা করে তাদের মাঝে ইহুদি ছাড়াও রোমা, সিন্টি, জিপসি, সমকামী এমনকি কমিউনিস্ট জার্মানরাও ছিল। ধারণা করা হয় এই ক্যাম্পে বন্দিদের মধ্যে অন্তত ৫ হাজার ছিল শিশু। যারা পৃথিবীটাকে বুঝে ওঠার আগেই নরকের নির্যাতন দেখে ফেলেছিল। এদের প্রায় সবাইকেই গ্যাস-চেম্বারে হত্যা করে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছিল। শুধু জ্যাক্সেনহাউজেনই নয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির প্রত্যেকটি কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের চিত্রই ছিল একই রকম।

ফিলিস্তিন: শিশুদের মৃত্যুপুরী

বর্তমান বিশ্বে শিশুদের জন্য মৃত্যুপুরী হয়ে উঠেছে ইসরায়েলের দখলকৃত ফিলিস্তিন ভুখন্ড। আন্তর্জাতিক একটি সমীক্ষা বলছে, ইসরায়েলি সেনাদের গুলিতে প্রতি তিনদিনে একজন করে ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হচ্ছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যম আনাদোলুর তথ্য অনুযায়ী, ২০০০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়াও ইসরায়েল প্রতি বছর প্রায় সাতশ ফিলিস্তিনি শিশুকে গ্রেপ্তার করে কারাবন্দি করে। নির্যাতন করে তাদের কাছ থেকে স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। প্রহসনের বিচারের পর তাদের শাস্তিও দেওয়া হয়।

সিরিয়া: শৈশব যেখানে কান্নার অন্য নাম

বর্তমানে শিশু হত্যার কেন্দ্র বলা যেতে পারে সিরিয়াকে। ইউনিসেফের তথ্য বলছে শুধুমাত্র ২০১৮ সালেই সেখানে ১ হাজার ১০৬ জন শিশুকে হত্যা করা হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে হিসেব করলে শিশু মৃত্যুর এই সংখ্যাটা পাঁচ হাজার ছাড়িয়ে যাবে নিঃসন্দেহে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ ইয়েমেনেরও এই একই অবস্থা। নিষ্পাপ শিশু, যে বোঝে না কোনো রাজনীতি, যে বোঝে না কোনো ক্ষমতা দখলের হিসাব নিকাশ, তাকেই কেন যুগে যুগে প্রতিহিংসার বলী হতে হবে এই প্রশ্নের উত্তর দেবে কি বিশ্ব? 

বাংলা ইনসাইডার/এএইচসি



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭