ইনসাইড পলিটিক্স

প্রধানমন্ত্রীর ধমক খেয়েই সুর পাল্টালেন মেনন

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 20/10/2019


Thumbnail

সুর পাল্টালেন রাশেদ খান মেনন। ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি- গত নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি’, ১৪ দলের শরিক বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননের এই বক্তব্য তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি করেছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। মেননের এই বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মন্ত্রিত্ব পেলে কি মেনন নির্বাচন নিয়ে ‘বিরূপ’ মন্তব্য করতেন?

অবশেষে রাশেদ খান একদিনের মাথায় তার ভোল পাল্টালেন। রাশেদ খান মেনন গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, ‘জাতীয় রাজনীতি ও ১৪ দলের রাজনীতিতে একটা ভুল বার্তা গেছে। আমার বক্তব্য সম্পূর্ণ পরিবেশন না করে অংশ বিশেষ পরিবেশন করায় এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।’

রাশেদ খান তার বক্তব্য ভুলভাবে উপস্থাপন হয়েছে বললেও জানা যায় অন্য খবর। প্রধানমন্ত্রীর ধমক খেয়েই সুর পাল্টেছেন মেনন।

আওয়ামী লীগের দীর্ঘ দিনের শরিক ১৪ দলে ভাঙনের শব্দ শোনা যাচ্ছে। ২০০৩ সালে গঠিত ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের থেকে অন্তত দুটি দল বেরিয়ে যাবে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। অবশ্য ১৪ দলের একাধিক শীর্ষ নেতা ভাঙনের বিষয়টিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তার বলেছেন, জোটের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি বা মতের পার্থক্য হতেই পারে সেজন্য জোট ভাঙবে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই।

১৪ দলে ভাঙনের গুঞ্জন শুরু হয়েছে রাশেদ খান মেননের প্রকাশ্য উক্তির মধ্যে দিয়ে। রাশেদ খান মেনন ৩০শে ডিসেম্বরের নির্বাচন সম্পর্কে বলেছেন, এই নির্বাচনে জনগণ ভোট দেননি। জানা গেছে যে, রাশেদ খান মেনন প্রকাশ্যে বলার আগে শরিকদের অন্তত তিনটি দলের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন এবং কথা বলে তিনি তার অনুভূতি ব্যক্ত করেছেন।

উল্লেখ্য, আজকে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রাশেদ খান মেননের এই বক্তব্যে অত্যন্ত ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ৩০ শে ডিসেম্বর নির্বাচন যদি ঠিক না হয় তাইলে উনি এমপি থাকেন কেন। মন্ত্রীত্ব পাননি বলেই তিনি এ ধরণের বক্তব্য রাখছেন। প্রধানমন্ত্রীর এই ক্ষোভ গেছে রাশেদ খান মেননের কানেও। তাই সুর পাল্টাতে দেরি করেননি তিনি।

উল্লেখ্য, পরবর্তীতে ওবায়দুল কাদেরও গণমাধ্যমে সাংবাদিকদের বলেন যে, রাশেদ খান মেনন যদি মন্ত্রী থাকতেন তাহলে এ ধরণের বক্তব্য রাখতেন? তবে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ১৪ দলের অসন্তুষ্টিকে আমলে নিচ্ছেন না। ১৪ দলের কেউ যদি এখন মন্ত্রীত্ব না পাওযার কারণে জোট ত্যাগ করে তাহলে তিনি তাতে বাধা দেবেন না।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৪ দল গঠন করা হয়েছিল একটি আদর্শিক কারণে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বপক্ষে যেসমস্ত রাজনৈতিক দল সেসমস্ত রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে এই জোট গঠিত হয়েছিল। মন্ত্রিত্ব পাওয়া না পাওয়ার মধ্যে এর কোন সম্পর্ক নেই। কিন্তু কেউ যদি মনে করে যে ১৪ দলে থাকলেই তাদের মন্ত্রিত্ব দেয়া হবে তাহলে আমাদের কিছু করার নেই। মন্ত্রিত্ব বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর একক এখতিয়ার।

উল্লেখ্য যে, ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে জাসদ (ইনু) এবং ওয়ার্কার্স পার্টির (মেনন) দুজনকে ২০১৪ সালে মন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু ১৮ সালের নির্বাচনের পর ১৯এর ৭ই জানুয়ারি গঠিত মন্ত্রিসভায় কোন শরিককেই অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তখন থেকেই শরিকদের মধ্যে নানারকম টানাপোড়েন চলছে। এরমধ্যে ১৪ দলের পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রীও তাঁদেরকে সময় দেননি। এরপর থেকে ১৪দলে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে।

ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ যখন শুদ্ধি অভিযান শুরু করেছে তখন অনেকের মত রাশেদ খান মেননের নামও এসেছে। এরপর থেকেই তিনি ১৪দল ভাঙার জন্য প্রতিযোগিতা চালাচ্ছে বলে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছে। তবে রাশেদ খান মেনন একাই ১৪দল থেকে চলে যাচ্ছেন নাকি তারসঙ্গে দুই জাসদ যাবে সেটা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন খুব শীঘ্রই ১৪ দলের একটা বৈঠক হবে। এই মান অভিমান কাটিয়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।

বাংলা ইনসাইডার/এমআরএইচ



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭