ইনসাইড পলিটিক্স

জামাত প্রশ্নে বিএনপি বেরিয়ে যাচ্ছে ঐক্যফ্রন্ট থেকে?

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 21/10/2019


Thumbnail

আগামীকাল ২২ অক্টোবর ঐক্যফ্রন্ট সমাবেশ ঘোষণা করেছে। এই সমাবেশে বিএনপির যাওয়া না যাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরী হয়েছে। বিএনপির একাধিক নেতা মনে করছেন যে, বিএনপি যে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে নতুন করে আন্দোলন শুরু করেছিল সেই আন্দোলন বাধাগ্রস্থ করার জন্যই ঐক্যফ্রন্ট কর্মসূচি দিয়েছে। ঐক্যফ্রন্টের কর্মসূচিতে বিএনপি যাবে কি যাবে না সেটা নিয়ে বিএনপির মধ্যে মতবিরোধ তৈরী হয়েছে। বিএনপির কেন্দ্রের একটি বড় অংশ ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে না থাকার জন্য মত দিয়েছে বলে বিএনপির দায়িত্বশীল একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, বিএনপির মধ্য থেকে বলা হয়েছে যে, জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে বিএনপি যেতে পারে যদি সেখানে প্রথম দাবি হিসাবে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি উত্থাপিত হয়। এবং বর্তমান সংসদ বাতিল করে অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি উত্থাপিত হয়। এছাড়া তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা হয়রানি মামলা প্রত্যাহার করার দাবি যেন তোলা হয়।

একই সঙ্গে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে যে, জামাতকে নিয়ে সমালোচনা করা বা জামাতকে রাখা না রাখা নিয়ে কোন আলোচনা ঐক্যফ্রন্টের সমাবেশে করা হয় তাহলে বিএনপি যাবে না।

কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের অন্যান্য নেতারা বলছেন যে, জামাতের ব্যাপারে তাদের অবস্থান খুবই সুস্পষ্ট। ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত বড়ুয়া বলেছেন, আমরা স্বাধীনতা বিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের সঙ্গে কখনোই হাত মেলাতে পারি না। তাদের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান খুব পরিস্কার। এতে যদি কেউ ঐক্যফ্রন্টে থাকে বা না থাকে সেটা তাদের বিষয়। ঐক্যফ্রন্ট তাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে সরে আসবে না।

এদিকে বিএনপির অন্যতম নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বাংলা ইনসাইডারকে জানিয়েছেন, যখন বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য আন্দোলন করলো। জনগনের মধ্যে তা ব্যাপক সাড়াও ফেলেছে। তখন ঐকফ্রন্টের এই আন্দোলন কর্মসূচি রহস্যজনক। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা কখনোই তার জনসভায় বিশেষ করে ড. কামাল হোসেন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিটি উত্থাপন করেন না। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি ছাড়া ঐক্যফ্রন্টের বৈঠকে বিএনপির যাওয়া অনুচিত বলে তিনি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করেন।

উল্লেখ্য যে, ৩০শে ডিসেম্বর নির্বাচনের আগে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয় এবং ঐক্যফ্রন্টের অধীনে বিএনপি জাতীয় নির্বাচন করে। নির্বাচনের পরও ঘোষণা করা হয় যে ঐক্যফ্রন্ট থাকবে কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের প্রধান নেতা ড. কামাল হোসেনের বিভিন্ন বিবৃতিতে অস্বস্তি এবং আপত্তি রয়েছে। জানা গেছে যে, ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন সবসময় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশের কথা বলেন এবং তিনি বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি উত্থাপন করেন না। এ নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ড. কামালের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ড. কামাল হোসেন বলেছেন তিনি তাঁর অবস্থান থেকে একচুলও সরবেন না। তবে বিএনপির একটি অংশ এখনও ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ঐক্য অটুট রাখার পক্ষপাতী। তারা মনে করে বিনপিতে জামাতের সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক এবং তারেক জিয়ার নেতৃত্ব নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে। আর সেজন্যই ড. কামাল হোসেন যদি থাকেন তাহলে আন্তর্জাতিক মহলের সঙ্গে দেন দরবনার দাবি দাওয়া নিয়ে কথাবার্তা বলা যায়। যদি ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে বিএনপি না থাকে তাহলে বিএনপির পক্ষে একা কূটনৈতিক মহলে লবিং করা এবং কূটনৈতিক মহলের কাছে দেশের অবস্থা তুলে ধরার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে দাঁড়ায়। একারণেই বিএনপির অনেক নেতাই মনে করেন যে ঐক্যফ্রন্ট ব্যাপারে আপত্তি থাকলেও ঐক্যফ্রন্ট থেকে বেরিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না। তবে ২২ তারিখের জনসভায় বিএনপি শেষ পর্যন্ত যাবে কিনা তা নির্ধারিত হবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে। তবে এই ঐক্যফ্রন্ট নিয়ে টানাপোড়নে শেষ পর্যন্ত বিএনপি ভাঙবে না ঐক্যফ্রন্ট ভাঙবে সেটাই হলো দেখার বিষয়।

বাংলা ইনসাইডার



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭