ইনসাইড পলিটিক্স

খালেদার কাছে তারেক- জামাত মুক্ত বিএনপি চাইবেন কামাল

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 22/10/2019


Thumbnail

ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বেগম খালেদা জিয়ার বৈঠকের সময়সূচি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। তবে জেল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার বৈঠক হতে পারে। বৈঠকের আলোচ্যসূচী কি হবে বা বৈঠকে কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে এই নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা জল্পনা কল্পনা চলছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা আজ বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে কি কি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে তা নিয়ে বসেছিলেন। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা বলেছেন, বৈঠকে মূলত ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে বেগম খালেদা জিয়ার কাছে তিনটি বিষয় তুলে ধরা হবে;

১. তারা বিএনপির নেতৃত্ব থেকে আপাতত তারেক জিয়াকে সরিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব করবেন। কারণ যেহেতু তারেক জিয়া দেশে অবস্থান করছেন না। তারেক জিয়াকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে অনেক ধরনের আপত্তি আছে। এই বাস্তবতায় ড. কামাল হোমেন প্রস্তাব করবেন বেগম খালেদা জিয়া দলের চেয়ারম্যান থাকুক এবং তারেক জিয়া আপাতত দলের বাইরে থাকুক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম নেতা ড. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এই প্রস্তাব করার জন্য ড. কামাল হোসেনকে অনুরোধ করেছেন। কামাল হোসেন এটা গ্রহণ করেছেন।

২. বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয় নিয়ে ঐক্যফ্রন্ট আন্দোলন করবে। সেই বিষয়ে একটি সুনির্দিষ্ট রুপ দেখা যাবে। ঐক্যফ্রন্ট এবং বিএনপি যেন ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করে সে ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেওয়া হবে।

জানা গেছে , এই সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনার কাজ এখনো চলছে। যেখানে আইনী লড়াই এবং আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে মত বিনিময় করা হবে।

৩. ড. কামাল হোসেন স্পষ্ট করবেন যে, খালেদা জিয়ার মুক্তিতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল নিয়ে একটি বৃহত্তর আন্দোলন করা যায় যদি বিএনপি সিদ্ধান্ত নেয়। সেই সিদ্ধান্ত হলো, বিএনপি যদি জামাত থেকে আলাদা হয়, জামাত থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখার ঘোষণা দেয় তাহলেই একটি বৃহত্তর ঐক্য হবে। তাহলেই সরকারের বিপক্ষে একটি সর্বাত্নক আন্দোলন করা সক্ষম হবে বলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা মনে করছেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো মনে করছে যে, খালেদা জিয়ার মতামত এবং খালেদা জিয়ার সিদ্ধান্ত জানতে চাইবেন দলের নেতারা। তবে অন্য একটি সূত্র বলেছে যে, হঠাৎ করেই বেগম খালেদার সঙ্গে ঐক্যফ্রন্ট নেতাদের সাক্ষাতের পেছনে অন্য একটি উদ্দেশ্য রয়েছে। বিশেষ করে বিএনপির কট্টরপন্থীরা মনে করছেন, এটাও সরকারের একটি ‘দূরভিসন্ধি’।

কারণ বিএনপির এই নেতাদের মতে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনকে ভাড়া করা হয়েছিল। সরকারের এজেন্ট হিসেবে ড. কামাল হোসেন বিএনপিকে নির্বাচনের মাঠে নামিয়েছিল। ঠিক তেমনি ভাবে বেগম খালেদা জিয়াকে প্যারোল দেওয়ার জন্য ড. কামাল হোসেনকে ভাড়া করা হয়েছে।

এবং এ বৈঠকে গিয়ে ড. কামাল হোসেন হয়তো খালেদা জিয়াকে সরকারের এজেন্ট হিসেবে প্যারোলের যৌক্তিকতা বোঝাবেন এবং প্যারোলটা যে খারাপ নয় সে বিষয়ে নিয়ে আলোকপাত করবেন। বেগম খালেদা জিয়াকে সরকারের দেওয়া প্যারোল প্রস্তাব গ্রহণের জন্য অনুরোধ করবেন।

তবে জাতীয় ঐক্যফ্রান্টের একাধিক নেতা বলেছেন যে, বিএনপির কিছু নেতা আসলে ঐক্যফ্রন্ট চাচ্ছে না, ঐক্য বিনষ্ট করার জন্য কাজ করছে এদের কারণেই আন্দোলন গড়ে উঠছে না, তারা এ ধরণের বিভ্রান্তি মূলক কথাবার্তা বলছে।

ঐক্যফ্রন্ট মনে করছে জন্য যে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বৃহত্তর ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। কারণ এককভাবে বিএনপির পক্ষে এই আন্দোলন গড়ে তোলার মত সাংগঠনিক ক্ষমতা নেই। এই জন্যই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারা দেখা করতে চাইছেন। তবে যে তিনদফা প্রস্তাব বেগম খালেদা জিয়াকে দেওয়া হবে সেটি বেগম খালেদা জিয়া মানবেন কিনা তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেক সন্দেহ আছে। কারণ বেগম খালেদা জিয়া তার পুত্র তারেক জিয়াকে যেমন বাদ দিতে পারবেন না তেমনি বাদ দিতে পারবেন না জামাতকে।

কাজেই বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে ড. কামাল হোসেনের সঙ্গে বৈঠকে শেষ পর্যন্ত ফলাফল কি হবে তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭