ইনসাইড গ্রাউন্ড

জ্বলে উঠতে হবে জয়ের সারথীদের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 13/06/2017


Thumbnail

পুরো দেশ কাঁপছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জ্বরে। আর সেই মাত্রটা একটু বেশি কারণ বাংলাদেশ চলে গিয়েছে সেমিতে। এই প্রথম আইসিসি আয়োজিত কোন টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে খেলছে টাইগাররা। তাই গোটা দেশে উন্মাদনাটা একটু বেশিই।  

সেমিফাইনালে লাল সবুজের বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত। সেই ভারত যাদের কাছে বাজে আম্পায়ারিংয়ের শিকার হয়ে, ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়ে টিম বাংলাদেশ। চায়ের ষ্টল থেকে শুরু করে অফিস-আদালত, পাড়া-মহল্লায় এই ম্যাচ নিয়েই আলোচনা। সমীকরণ, চুল চেরা বিশ্লেষণ কোন কিছুই বাদ থাকছে না।

বাংলাদেশকে এই ম্যাচে জিততে হলে জ্বলে উঠতে হবে, টাইগারদের জয়ের সারথীদের। সাকিব-মাহমুদুল্লাহ তাদের ঝলক দেখিয়েছে। মুশফিক-তামিম দুইজনই ব্যাট হাতে রান পাচ্ছেন। নিয়মিত উইকেট না পেলেও রুবেল হোসেনও আছেন তার চেনা রুপে। বল করে যাচ্ছেন লাইন আর লেনথ বজায় রেখে। ডেথ ওভারেও করছেন দারুণ বোলিং। কিন্তু এরা বাদে যাদের দিকে টিম বাংলাদেশ তাকিয়ে থাকেন তারা জ্বলে উঠতে ব্যর্থ। ব্যাটিংয়ে হলেন সৌম্য, ইমরুল ও সাব্বির। আর বোলিংয়ে হলেন মোস্তাফিজ।

সৌম্য সরকার যেন নিজেকে খুজে ফিরছেন সেই নিউজিল্যান্ড সিরিজ থেকেই। মাঝে সৌম্য আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বিধ্বংসী ইনিংস খেলার পর আবার রান খরায় ভুগছেন। সৌম্যর রানে ফেরা তার নিজের জন্য তো বটেই, দলের জন্যও ভীষণ জরুরী। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে খেলা তিন ম্যাচ মিলে করেছেন মাত্র ৩৪ রান। এই রান সৌম্যর নামের পাশে সত্যিই বেমানান।   

ইমরুল কায়েসকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল দুই ম্যাচে। কিন্তু তিনিও ব্যর্থ। দুই ম্যাচ মিলে করেছেন মাত্র ২৫ রান। ইমরুল দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড বিপক্ষে সিরিজে ভালো খেললেও, এরপর থেকেই আছেন রান খড়ায়। সেমি ফাইনালে ইমরুল সুযোগ পাবেন কি পাবেন না সেটা পরের ব্যাপার। কিন্তু আবারো যদি তাকে সু্যোগ দেওয়া হয় তাহলে তাকে পারফর্ম করতেই হবে।

এরপর আসা যাক সাব্বির রহমান প্রসঙ্গে। সাব্বির ভালো ফিন্ডার এতে কোনো সন্দেহ নেই, কিন্তু বার বার সুযোগ পেয়েই এক দুই ম্যাচ বাদে প্রায় সব ম্যাচেই ব্যর্থ তিনি। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিন ম্যাচ মিলে করেছেন মাত্র ৪০ রান। সাব্বির যেই পজিশনে খেলেন, সেই পজিশনে খেলা একজন ব্যাটসম্যানের নামের পাশে তা বড়ই বেমানান। সাব্বির যে তার দিনে কতটা কার্যকরী, তা সবাই জানেন। তাই ভারতের বিপক্ষে জিততে হলে দলের হাল ধরতে হবে তাকেও। মাথা গরম করে মারমুখী না হয়ে ধীরে ধীরে কিভাবে ইনিংসকে বড় করা যায়, সেদিকেই খেয়াল রাখতে হবে এই হার্ডহিটার ব্যাটসম্যানকে।

বোলিংয়ে মোস্তাফিজ যে আমাদের সেরা অস্ত্র সেটাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু ‘দ্যা ফিজ’ও যে নেই তার ছন্দে। বয়স কম, এত বড় মঞ্চে এই প্রথম খেলছেন। সেই সঙ্গে ইংল্যান্ডের কন্ডিশন। তাই চাপ থাকবেই। হয়তো বয়সের সাথে সাথে সেটাও আয়ত্তে চলে আসবে মোস্তাফিজের। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ডেথ ওভারে ভালো বোলিং করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে উইকেটও পেয়েছেন। কিন্তু যেই মোস্তাফিজকে চায় পুরো টাইগার টিম, সেই ফিজকে এখনো দেখা যায়নি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে। বল ভালো করলেও উইকেট পেয়েছেন মাত্র একটি। তাই ফিজের জ্বলে ওঠার অপেক্ষায় থাকবে পুরো দেশবাসী।    

বাকীদেরও জ্বলে উঠতে হবে স্বমহিমায়। টাইগারদের মিডল অর্ডার ব্যাটিং লাইন আপের তিন কান্ডারি মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তারা তিন জন জাতীয় দলের জার্সিতে একসঙ্গে খেলছেন গত এক দশক ধরে। সামর্থ্য আর অভিজ্ঞতা কোনটাতেই ঘাটতি নেই তাদের। তিনজনে মিলে এখন পর্যন্ত ৪৯২ টি ওয়ানডেতে মাঠে নেমেছেন। তাদের সম্মিলিত রান ১২ হাজারের বেশি। ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় সাকিব আছেন দুইয়ে। তার পরের স্থানে মুশফিক।

মাত্রই ক্যারিয়ারে তিন হাজার রানের মাইলফলক ছোঁয়া মাহমুদউল্লাহ পাঁচ নম্বরে। এই তালিকায় সবার উপরে তামিম ইকবাল। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুই ম্যাচে যার ব্যাটে ছিল রানের ফুলঝুরি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হাফসেঞ্চুরি করে একাই লড়েছিলেন তামিম। ‘মাহমুদউল্লাহ, মুশফিকুর আর সাকিব যে কোনো সময়ে খেলার গতি পাল্টে দিতে পারে। যদি তারা উইকেটে থাকে তবে খারাপ পরিস্থিতি থেকেও জিততে পারে টাইগাররা। যার প্রমাণ আমরা গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষেও দেখেছি।


বাংলা ইনসাইডার/ডিআর




প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭