লিভিং ইনসাইড

বায়ু দূষণে বেহাল জীবন, প্রয়োজন সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশ: 15/11/2019


Thumbnail

ধুলাবালি, যানবাহনের কালো ধোঁয়া—নানান কিছুতে শহরের বাতাস এখন দূষিত। বিশেষ করে শীতের আগমনের সঙ্গে এই দূষণ আর শুষ্কতা যেন বাড়ে বেশি। বায়ুতে অক্সিজেনের যে স্বাভাবিক পরিমাণ, তার চেয়ে অক্সিজেন পরিমাণে কমে গেলে, বা অন্য গ্যাস বা ধূলিকণার গুরুত্ব বেড়ে গেলে সেখানকার বায়ু দূষিত হয়ে যায়। যানবাহন, কলকারখানার কালো ধোয়া, নানান কারখানা থেকে উদগীরণ হওয়া বিভিন্ন গ্যাস, ধূমপান, আগুন ও রাস্তার ধুলাবালিসহ আরো নানান কারণ আমাদের চারপাশের বায়ুকে দূষিত করছে নানাভাবে।

বায়ুদূষণ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের খুবই ভয়াবহ একটি সমস্যা। দূষিত বায়ু গ্রহণ করার মাধ্যমে আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের শরীরে নানান রকম রোগজীবাণু ঢোকানো সহ হারিয়ে ফেলছি স্বাভাবিক আয়ু। গাছপালা পোড়ানো, বড় কনস্ট্রাকশনের কাজ, ফ্যাক্টরি ও কারখানার কালো ধোঁয়া, অতিরিক্ত যানবাহনের কালো ধোঁয়ার কারণে। শহরে বায়ু দূষণ আগের চেয়ে অনেক গুণ বেড়েছে।

এই অবস্থা থেকে নিস্তারের জন্য আমাদেরও কিছু সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে-

ঘরেই থাকুন বেশি সময়

বায়ু দূষণের কবল থেকে নিজে বাঁচতে ও সন্তানকে রক্ষা করতে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো কাজ না থাকলে বাইরে বের না হওয়া। বিশেষ করে শীত আগমনের বর্তমান সময়টা বেশ নাজুক।  এ সময় রাস্তায় ধুলাবালি বেশি থাকে। তাই সন্তানকে স্কুলে নেওয়া বা জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না নেওয়াই ভালো। ঘরের বৃদ্ধদেরও সাবধানে রাখুন, নিজেরও খুব প্রয়োজন না হলে বের না হোন।

এয়ার মাস্ক ব্যবহার করুন

বায়ু দূষণ থেকে রক্ষা পেতে এয়ার মাস্ক কার্যকর। বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের মাস্ক পাওয়া যায়, যা কটন ও ভালো ফেব্রিকের তৈরি। বাতাসে থাকা ধুলাবালি, দূষণকারী উপাদান, ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস শরীরে প্রবেশে বাধা দেয় মাস্ক। তাই ঢাকা ও বড় শহরগুলোতে বাইরে বের হলে মুখে মাস্ক পরে তা নিশ্চিত করুন।

মাস্কটি কী ধরনের কাপড় দিয়ে তৈরি, সেটি যাচাই করে নিন। প্রতিদিন সেটি গরম পানিতে ধুয়ে ফেলার চেষ্টা করুন। সোয়াইন ফ্লু কিংবা বার্ড ফ্লুর মতো রোগের সংক্রমণ এড়াতে কিন্তু এই মাস্কগুলো যথেষ্ট নয়। প্রয়োজন ফিল্টারযুক্ত মাস্ক।

ঘর পরিষ্কার রাখুন

ঘরের জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করুন, যাতে বাইরে থেকে বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান ঘরে প্রবেশ করতে না পারে। আপনার বাসার দেয়ালে যে পেইন্টিং ঝুলছে বা দেয়ালে যে রং দেওয়া হয়েছে, তা থেকে বাতাসে ক্ষতিকর উপাদান যেন ছড়িয়ে না পড়ে নিশ্চিত হোন। গবেষণায় জানা গেছে, বাইরে বায়ু দূষণের ক্ষতিকর উপাদানের চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে ঘরের ভেতরের ক্ষতিকর উপাদান শরীরে বেশি বিরূপ প্রভাব ফেলে।

আবর্জনা পোড়াবেন না

অনেকে বাসার উঠানে বা রাস্তায় আবর্জনা পুড়িয়ে দেয়, এটি পরিবেশের জন্য খুব ক্ষতিকর। কারণ প্লাস্টিকসহ কিছু পণ্য আগুনে পোড়ালে বায়ু দূষণ বেশি হয়।

সঠিক খাবার খেতে হবে

যেহেতু শীতের আগমনের আগে বায়ু দুষণের মাত্রা বেড়ে যায়, তাই এখন থেকে নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের চেষ্টা করতে হবে। না করলে আপনার মতো শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমে যাবে। যেসব ফল ও শাক সবজিতে ভিটামিন সি ও ওমেগা ফ্যাটি এসিড বেশি, সেসব খাবার খান।

এয়ার পিউরিফায়ার

যেসব পরিবারের সদস্যদের মাঝে অ্যাজমা ও অ্যালার্জির প্রবণতা আছে, তাদের জন্য এয়ার পিউরিফায়ার উপকারি। এতে ঘর থেকে অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান দূর হয়ে শ্বাসপ্রশ্বাস নির্বিঘ্ন হয়। আপনার ব্যক্তিগত গাড়ি থাকলে, বাইরে বের হওয়ার সময় এয়ার পিউরিফায়ার ব্যবহার করুন।

ঘরে বায়ু শোধক গাছ রাখুন

ঘরের বাতাস নির্মল রাখতে বায়ুশোধক গাছ রাখা ভালো পদ্ধতি। এক্ষেত্রে তুলশি, অ্যালোভেরা, আজালিয়ার মতো গাছগুলো উপকারি।

ধূমপান থেকে বিরত থাকুন

ধূমপানে বিষপান তো অবশ্যই। সেই সঙ্গে ধূমপান শ্বাসজনিত সমস্যাগুলোকে বেশি উসকে দেয়। আর শীতের শুরুতেই এই সমস্যাগুলো বেশি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। আর ধূমপায়ীদের শরীর এমনিতেই বেশি ধকল নিতে পারে না বলে ধূলাবালিতে তাদের সমস্যা বেশি হয়। শ্বাসজনিত সমস্যা, ঠাণ্ডার সমস্যা বেশি দেখা দেয়। তাই ধুলোর পরিবেশের মধ্যে থেকে আবার নতুন করে জেনেবুঝে ধূমপান করে বিপদ ডেকে আনবেন না।

 



প্রধান সম্পাদকঃ সৈয়দ বোরহান কবীর
ক্রিয়েটিভ মিডিয়া লিমিটেডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান

বার্তা এবং বাণিজ্যিক কার্যালয়ঃ ২/৩ , ব্লক - ডি , লালমাটিয়া , ঢাকা -১২০৭
নিবন্ধিত ঠিকানাঃ বাড়ি# ৪৩ (লেভেল-৫) , রোড#১৬ নতুন (পুরাতন ২৭) , ধানমন্ডি , ঢাকা- ১২০৯
ফোনঃ +৮৮-০২৯১২৩৬৭৭